সাড়ে তিন বিঘা জমিতে কুল, এক বিঘায় মাল্টা ও এক বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করেছেন ফরিদপুরের মিজানুর রহমান মিয়া। পাশাপাশি সৌদি আরবের মরিয়ম জাতের খেজুরও চাষ করেছেন তিনি। মূলত তিনি শখের বশেই শুরু করেন বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ। এই ফল চাষে তিনি প্রথম বছরেই চমকে দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয় বিভিন্ন জাতের ফল চাষ করে সফলও হয়েছেন মিজানুর রহমান।
ফরিদপুরের সদরপুর ও নগরকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী রামচন্দ্রপুর গ্রামের আবদুল মজিদ মিয়ার বড় ছেলে মিজানুর রহমান। বাগানে ফল ধরার প্রথম বছরে মাল্টা ও খেজুরের মৌসুমে খেজুর বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এখন চলছে কুল বরইয়ের মৌসুম। তিন বিঘা জমিতে কুলেরও ব্যাপক ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিজানুর রহমানের সাড়ে তিন বিঘা জমিতে কাশ্মীরী ও বলসুন্দরী নামের দুই জাতের কুল বাগানে শোভা পাচ্ছে। প্রথম বছরই প্রচুর পরিমাণে কুল ধরেছে বাগানের প্রতিটি গাছে। এর বাজার দরও ভালো। কুলের বিক্রিও শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে কুল বিক্রি করেই প্রায় চার লাখ টাকা লাভের আশা করছেন মিজানুর রহমান। তার আশা এবার প্রায় ৪০০ মণ কুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এখন কুলের মৌসুম। বাগানের কুল কয়েক দফা বিক্রিও করা হয়েছে। শুধু কুলই নয় পাশাপাশি তার এক বিঘা জমিতে জাপানি জাতের সূর্যেরডিম, কিং অব চাকাপাত, পালমার, ব্যানানা ম্যাংগোব্লাকস্টোন, বারোমাসি কাটিমন, বারি ১১ বারোমাসি, ব্রুনাই কিং, গৌরমতি নামের আমের বাগানও রয়েছে।
এসব জাতের আম গাছে এখন বাহারি মুকুল শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও আজুয়া, মরিয়ম নামের সৌদি আরবের খেজুর গাছ রয়েছে তার বাগানে। প্রথম বছর অল্প পরিমাণে খেজুর ধরেছিল। এবার এর পরিমাণ অনেক বেশি হবে বলে তিনি আশাবাদী।
মিজানুর আরও বলেন, মাল্টা গাছেও প্রচুর মাল্টাও ধরেছে। প্রথম বছর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। ২০০ টাকা দরে প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি করেছেন তিনি
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে যেমন বিভিন্ন জাতের ফল বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মিজানুর। অন্যদিকে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন। বিভিন্ন রকমের ফলের বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শানার্থীরা। দেখতে এসে সুস্বাদু কুলের সাধ নেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন ফল চাষে। আবার অনেকেই নিচ্ছেন ফল চাষের পরামর্শ।
মিজানুর রহমান মিয়ার বাগান দেখতে আসা নগরকান্দা সদরের বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন মাতুব্বর (নিজাম নকিব) জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এলাকার মাটি যে কোনো ফসল ও ফলের চাষ করার জন্য উপযোগী। ব্যবসায়িকভাবে এসব ফলের চাষ বেশ লাভজনক। ফল চাষের আগ্রহ নিয়ে বাগান দেখতে এসেছি। আমাদের খুবই ভালো লেগেছে।
এ বিষয়ে নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তিলোক কুমার ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি। তবে যেটুকু জেনেছি এ উপজেলায় এ ধরণের ফলের চাষ খুবই কম। এ এলাকার আবহাওয়া ও মাটি এসব ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সঠিক পরামর্শ মেনে চাষাবাদ করলে লাভবান হবেন ফল চাষিরা। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
Post a Comment