যেখানে গাধাও পাজামা পরে, তার কারণ...

ODD বাংলা ডেস্ক: নানা কারণেই গাধার চাহিদা আকাশছোঁয়া। গাধা হলো বিশ্বের সবচেয়ে কর্মক্ষম প্রাণী। তাদের দিয়েই বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে মাল বয়ে নিয়ে যাওয়া হতো।

গাধার পিঠে চড়ে মাইলের পর মাইল পেরিয়ে যেতেন অনেকে। কিন্তু এই গাধার গুরুত্ব এখনও একটুও কমেনি। এরা হল ‘পোইটু গাধা’। আকারে সাধারণ গাধার তুলনায় বেশ খানিকটা বড় এবং লম্বা। তবে সারা বিশ্বে এদের সংখ্যা এখন ‘হাতে গোনা’। ২০০৫ সালে হিসেব করে দেখা গিয়েছে, সারা বিশ্বে পোইটু গাধার সংখ্যা মাত্র ৪৫০।

পোইটু এক ধরনের বিশেষ প্রজাতির গাধা। ফ্রান্সের পোইটু উপত্যকায় এদের আদি বাসস্থান। একটা সময় ইউরোপে চড়া দামে পোইটু গাধা কেনা-বেচা করা হত। লম্বায়-চওড়ায়, দেখতে অনেকটাই ঘোড়ার মতো। ফলে এদের পরিশ্রম করার ক্ষমতাও অন্যান্য গাধার তুলনায় অনেকটাই বেশি। 

ঐতিহাসিকদের মতে, ১৭১৭ সালের পর থেকে ফ্রান্সের রাজা পঞ্চদশ লুইয়ের উদ্যোগে কৃষিকাজের সঙ্গে সঙ্গে পরিবহনের কাজেও ব্যবহৃত হতে থাকে পোইটু গাধা। এই সময় থেকেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেড়ে যায় এই প্রজাতির গাধার কদর। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে যন্ত্র বা মোটরচালিত গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পোইটু গাধার চাহিদায় ভাঁটা পড়ে।

বিংশ শতকেও অন্তত ৩০ হাজার গাধার প্রতিপালন করা হত ফ্রান্সের পোইটু উপত্যকায়। একটা সময় নুন আর পশমের কারবারীদের কাছে দারুন কদর ছিল এই পোইটু গাধার। কারণ, এই প্রজাতির গাধার সারা শরীর বোঝাই ভারী পশমে। ভেঁড়ার পশমের মতো উত্কৃষ্ট মানের না হলেও, পোইটু গাধার পশমেরও যথেষ্ট চাহিদা ছিল। যে কারণে ইউরোপের অনেকেই পোইটু গাধার প্রতিপালন করতেন। 

সে সময় মূলত ছাড়পোকা আর মশার কামড়ের হাত থেকে বাঁচাতে পোইটু গাধার চার পা মোটা কাপড়ে ঢেকে দিতেন তাদের মনিবরা যেগুলিকে দেখতে অনেকটা পাজামার মতো। এখন অবশ্য নুনের কারবারে প্রয়োজন হয় না পোইটু গাধার। ব্যবসার পরিবহণেও কাজে লাগে না এদের। তবে ঐতিহ্য মেনে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের খাতিরে এখনও পোইটু গাধাদের পাজামা পরিয়ে রাখা হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.