এটিএম বুথ থেকে ছড়াচ্ছে যৌনরোগ

ODD বাংলা ডেস্ক: মানুষ অভ্যাসের দাস। কু-অভ্যাস এক লহমায় বদলে দিতে পারে জীবনযাপন। যেমন- থুতু দিয়ে নোট গোনা অনেকের কু-অভ্যাস। নোট যেহেতু হাতে হাতে ঘোরে, তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, নোট নাকি জীবাণুদের স্বচ্ছন্দ আশ্রয়। আর থুতু দিয়ে নোট গোনার পর থুতু-জীবাণু মিলেমিশে কী হয়, তা সহজেই আঁচ করতে পারছেন। অনেকে তো না জেনে এহেন কু-অভ্যাসের শিকার হয়ে যান। অনেকে আবার জেনেও এই কু-অভ্যাস থেকে বেরোতে পারেন না। এত গেল নোটের কথা। এবার আসি এটিএম এর কথায়। এই নিত্যপ্রয়োজনীয় যন্ত্রটি যে কখন মানুষের জীবনে অস্থিমজ্জার মতো মিশে গেছে তা আরও ভালো করে বোঝা যাচ্ছে নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পর। তবে হাসিমুখ ব্যাজার হতে পারে একটি তথ্য জানলে। যাঁরা দৈনন্দিন এটিএম এ যান, তাঁদের এই তথ্যটি জেনে রাখা ভালো।

আপনার সেবায় সদা নিয়োজিত এটিএমটি বহু আকাঙ্ক্ষিত নোট হাতে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সবার অলক্ষ্যে একটি প্রাণঘাতী কাজও সেরে ফেলছে জানেন কি? একদল বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে এসেছে, এটিএম এর যে কি প্যাডটির সাহায্যে আপনি নোট পাওয়ার প্রক্রিয়া সুগম করেন, সেখানেই লুকিয়ে আছে অসংখ্য প্রাণঘাতী জীবাণু। যখনই না আপনি কি প্যাডের বাটনে চাপ দিচ্ছেন, সেই জীবাণুর দল জায়গা পরিবর্তন করে চলে আসছে আপনার শরীরে। অজান্তেই। এরপর আপনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই সুযোগে শরীরের সার্বিক ক্ষতি করতে তেড়েফুঁড়ে লাগছে জীবাণুর দল।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেন কার্লটনের নেতৃত্বে এক গবেষকদল গবেষণা চালিয়ে জানতে পেরেছে এটিএম কি প্যাড জীবাণুদের আস্তানা। নানা উৎস থেকে সৃষ্ট জীবাণুরা জাঁকিয়ে বসে থাকে এটিএম কি প্যাডে। বায়ু বা ভূমিবাহিত জীবাণুরা সহজেই কি প্যাডের ওপর বাসা বেঁধে ফেলে। এবং দ্রুত স্থানান্তরে সক্ষম হয়।

প্রফেসর কার্লটনের নেতৃত্বে গবেষকদলটি ম্যানহাটন, কুইনস এবং ব্রুকলিন শহরের প্রায় ৬৬টি এটিএম থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। ২০১৪ সালের জুন-জুলাইয়ে ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ পদ্ধতিতে এটিএম কি প্যাড থেকে সংগ্রহ করা হয় DNA। তারপর শুরু হয় গবেষণা। দেখা যায়, টেলিভিশন, বিশ্রামঘর, রান্নাঘর, বালিশ, কাঁটাযুক্ত মাছ, শামুক, মুরগি, নষ্ট হয়ে যাওয়া দুগ্ধজাত সামগ্রীর মধ্যে যে ধরনের জীবাণু মেলে, ঠিক একই গোত্রের জীবাণুর স্বচ্ছন্দ আশ্রয় এটিএম কি প্যাডে। গবেষকরা বলছেন, নিত্যদিনের কাজ যখন আমরা সারি, তখনও জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।- যেমন ধরা যাক কেউ একজন খাবার খেলেন। খাবার থেকে তার শরীরে চলে গেল জীবাণু। তারপর তিনি ATM-এ গেলেন টাকা তুলতে। তার হাতের জীবাণু চলে গেল এটিএম কি প্যাডে। তারপর সেখানে আগে থেকেই যে সব জীবাণুরা ছিল, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাল। পরে অন্যকোনও গ্রাহক যখন এটিএম এ টাকা তুলতে গেলেন, তখন চলে গেল তাঁর শরীরে।

এই ধরনের জীবাণুর পাশাপাশি আরও দু’ধরনের পরজীবীর অস্তিত্ব টের পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এক, যে পরজীবী মানুষ এবং অন্য স্তন্যপায়ীদের খাদ্যতন্ত্রের নিম্নাংশে পাওয়া যায় তা মিলছে এটিএম কি প্যাডে। দুই, ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিস ( যৌনরোগ সংক্রমণ ঘটায় এই পরজীবী) গোত্রের আরেক পরজীবী। গবেষকরা বলছেন, এই দুই পরজীবীর উপস্থিতি এটিএম থেকে টাকা তুলতে যাচ্ছেন এমন গ্রাহকদের জন্য ভয়ানক হতে পারে। যৌনরোগ ছড়াতে এই দুই পরজীবী সিদ্ধহস্ত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.