রান্নার সময় যে ভুলগুলো করা যাবে না

 


ODD বাংলা ডেস্ক: আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো প্রতিদিন রান্না করে থাকি।  রান্নায় পারদর্শী হওয়া সত্ত্বেও রাঁধতে গিয়ে কেউ কেউ নিজেদের হাত পুড়িয়েছে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় সবসময় ভালো রান্না করতে পারলেও হঠাৎ একদিন রান্নার স্বাদের বারোটা বেজে যায়! এক্ষেত্রে রান্না সম্পর্কিত টুকটাক টিপস জানা থাকলে রান্না যেমন ভালো হয়, তেমনি সময় বাঁচে। 

আমেরিকান বেইসড সোশ্যাল নিউজ ওয়েবসাইট 'রেডিট'-এ সম্প্রতি পেশাদার রাধুনিরা  রান্নার কিছু কৌশল প্রকাশ করেছেন। রান্নার সময়  ছোট ছোট ভুল করা থেকে বিরত থেকে রান্নাকে কীভাবে আরও সহজ ও সুস্বাদু করে তোলা যায়, সে বিষয়গুলো নিয়েই সেখানে বলা হয়েছে।


এক


কাঁকড়া ফ্রাই করার সময় আপনি যদি কাঁকড়ার ভেতরের অংশ  ভালোভাবে সিদ্ধ করতে চান, তাহলে আপনাকে চিমটার সাহায্য অন্তত ৫ বার কাঁকড়াটিকে একপাশ থেকে আরেকপাশে উল্টেপাল্টে দিতে হবে। তাহলে ভেতরের অংশে ভালোভাবে উত্তাপ পাবে।


দুই


টকজাতীয় ফলের শরবতে একাধিকবার লবণ না মিশিয়ে তার পরিবর্তে ভিনেগার বা লেবু মেশাতে পারেন। এটি শরবতের অতিরিক্ত টকভাব দূর করার পাশাপাশি শরবতে সুগন্ধ এনে দিবে।


তিন



রান্নার সময় কখনোই পেঁয়াজ ও রসুন একত্রে দিবেন না। কেননা পেঁয়াজ রান্না হতে ৮ মিনিট সময় লাগে, যেখানে রসুন সিদ্ধ হতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড লাগে। তাই একত্রে দিলে রসুন বেশিক্ষণ রান্না হওয়ার ফলে পুড়ে যেতে পারে যা থেকে খাবারটিতে পোড়া গন্ধ ছড়িয়ে যাবে।


চার


ব্রাসেলস স্প্রাউট (এক প্রকার ক্ষুদে বাধাকপি) রান্নার প্রক্রিয়া অনেকেই সঠিকভাবে জানেন না। ভালোভাবে সিদ্ধ হলেই রান্না ভালো হয়েছে বলা যায় না বা স্বাদ ভালো হয়ে যায় না। তাই ব্রাসেলস স্পাউট রান্নায় প্রথমে অন্যান্য সবজি ও মসলার উপকরণগুলোর সাথে পরিমাণের তুলনায় একটু বেশি তেল ও লবণ দিতে হবে। তারপর সবকিছু একসাথে ২০০/৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ওভেনে দিতে হবে এবং বাদামী না হওয়া পর্যন্ত রান্না করতে হবে। শেষে গোলমরিচের গুঁড়া বা মাশরুম দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।



পাঁচ


পারফেক্ট আলু রান্নার ক্ষেত্রে আলুকে প্রথমে গোল গোল করে কেটে নিতে হবে। তারপর ৫/১০ মিনিট লবণ দেওয়া গরম জলে সিদ্ধ করে মসলা দিয়ে ভেজে নিতে হবে। তাহলেই আলুগুলোর বাইরের দিকটা মচমচে ও ভিতরের দিকটা সিদ্ধ হবে।


ছয়

মাংসের স্টেক রান্না করার সময় আপনাকে অধৈর্য হলে চলবে না। বারবার এটিকে উল্টেপাল্টে না দিয়ে, কী পরিমাণ তাপে স্টেক ভালোভাবে সিদ্ধ হয় বা পুড়ে যায় না সে সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে। তাহলে স্টেক রান্না ভালোভাবে হবে এবং স্বাদ ঠিক থাকবে।


সাত


রান্নার জন্য কাটাকুটি করাতেই সবচেয়ে বেশি সময় চলে যায়। আর আপনি যদি এই কাজে ধীর হন বা আপনার ব্যবহৃত ছুরিটি যদি ধারালো না হয় তাহলে তখন এটিকে বিরক্তিকর কাজ মনে হতে পারে। তাই ছুরি ধারালো থাকলে কাজটি যেমন সহজ হয় তেমনি দ্রুত হয়।



আট


দ্রুত রান্না শেষ করার জন্য রান্নার সময় চুলার আগুন খুব বেশি বাড়িয়ে দিবেন না। কোন কিছু রান্না করতে ৩৫০ ডিগ্রি তাপে ১ ঘণ্টা লাগলে, আপনি তাপ বাড়িয়ে ৪২৫ ডিগ্রিতে ৩৫ মিনিটের মধ্যে রান্নাটি শেষ করার চেষ্টা করবেন না। কারণ অনেক রান্না আছে যেগুলো মৃদু আঁচে করতে হয়।


নয়


ডিম ফাটানোর সময় কড়াই বা বাটির কোনার অংশ ব্যবহার না করে, সমতল কিছুতে আঘাত করে ফাটালে ভেতরে থাকা কুসুম অক্ষত সাথে। আবার কোনায়  আঘাত করে ফাটাতে গেলে অনেকসময় ডিমের ওপরের  বাকল ডিমের ভেতরে চলে যায়। যা থেকে ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু ডিমের সাথে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


দশ


মাংস কাটার পর অনেকেই চপিং বোর্ড ও ছুরি সাবান দিয়ে ধুয়ে সেটাতে আবার সবজি কাটতে বসে পরেন। কাঁচা মাংসে অনেক রকম জীবাণু থাকতে পারে যেগুলো পরবর্তীতে ঐখান থেকে যে কোন সবজির মধ্যে মিশে যেতে পারে। তাই শুধু সাবান দিয়ে পরিষ্কার করলে হবে না, ভালোভাবে গরম জল ও ব্লিচ দিয়ে ধুতে হবে। আর সেটি পরিষ্কার করতে যে ব্রাশ বা স্পঞ্জ ব্যবহার করা হবে সেটা অন্য কিছু ধৌত করার সময় ব্যবহার করা উচিত না।


আমেরিকান রাঁধুনি ব্লগার 'বেথ মনসেল' বলেন, "রান্নাঘরে আস্থা অর্জনের সর্বোত্তম উপায় হল অনুশীলন করা। একবার কোন রান্নায় ব্যর্থ হলে সেটা আপনাকে পুনরায় চেষ্টা করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না। তাই নতুন রেসিপি চেষ্টা করতে থাকুন। আপনি যত বেশি রান্না করবেন, ততবেশি আপনি রান্নার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন। এভাবে একসময় আপনার আর রান্নার জন্য রেসিপি লাগবে না, আপনি নিজ থেকে নতুন রেসিপি তৈরি করতে পারবেন"। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.