স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এই খাবারগুলো তো খাচ্ছেন? অজান্তেই নিজের ক্ষতি করছেন না তো…

 


ODD বাংলা ডেস্ক: করোনা (CoronaVirus) পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে বলছেন চিকিৎসকরা। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার দিকে মন দিয়েছেন সকলেই। মাসকাবারি সামগ্রীর তালিকায় এখন বেশি পুষ্টিকর খাবার অগ্রাধিকার পাচ্ছে। কিন্তু তাতে উপকার কি পাচ্ছেন? যাকে স্বাস্থ্যকর খাবার ভাবছেন তা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? নাকি নিজের অজান্তেই বিপদ ডেকে আনছেন।


বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আসলে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে কিছু ভুল তথ্য আমাদের ভুল খাদ্য তালিকা বেছে নিতে ভূমিকা রাখে। এমনই কিছু ভুল ধারণা ভাঙার সময় এসে গিয়েছে। যেমন –


ভেজিটেবল অয়েল (vegetable oils): অনেকেই ভাবেন ভেজিটেবল অয়েল (vegetable oils) ঘি কিংবা মাখনের থেকে বেশি উপকারী। অলিভ অয়েল কিংবা রেপসিড অয়েলের ক্ষেত্রে তা কিছুটা হলেও সত্যি। কিন্তু সয়াবিন তেল, ক্যানোলা অয়েল কিংবা কর্ন অয়েলের ক্ষেত্রে তা ভুল। এই তেলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ভেজিটেবল অয়েল খাওয়ার দরকার নেই৷ সর্ষে, সয়াবীন, সূর্যমুখী, রাইসব্র্যান বা বাদাম তেল যেমন খাচ্ছিলেন, তেমনই খান৷ এক এক পদ এক এক রকম তেলে রান্না করুন বা এক এক দিন এক এক তেলে, সব মিলে দিনে জনপ্রতি ৫–৬ চা–চামচের বেশি না হলেই হার্ট–ব্রেন–কোলেস্টেরল সব ভালো থাকবে৷


ওবেসিটির আশঙ্কা খুব বেশি৷ ওজন খুব বাড়তে শুরু করলে তার হাত ধরে হাই কোলেস্টেরল, সুগার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ব্রেস্ট, কোলন ও আরও কিছু ক্যানসারের আগমন ঘটতে পারে যখন–তখন৷ ওবেসিটির আশঙ্কা খুব বেশি হয়ে যেতে পারে৷ ওজন খুব বাড়তে শুরু করলে তার হাত ধরে হাই কোলেস্টেরল, সুগার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ব্রেস্ট, কোলন ও আরও কিছু ক্যানসারের আগমন ঘটতে পারে যখন–তখন৷ গলস্টোনের আশঙ্কা বাড়ে৷ রক্তচাপ কমে গিয়ে মাথা ঘুরতে পারে৷ হতে পারে হজমের গোলমাল ও ডায়েরিয়া৷


কার্বস (Carbs): আধুনিক ডায়েট জ্ঞান সম্পন্ন মানুষের কাছে এ শব্দ সুপরিচিত। বহু বছর ধরে ওজন বাড়ার জন্য এই জাতের খাদ্যসামগ্রীকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। আদতে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার শরীরকে শক্তি জোগায়। শরীরে কার্বের পরিমাণ কমে গেলে ফাইবারও কমে যায়। এতে বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়।


ফ্যাট-ফ্রি ডায়েট: অনেকেই ফ্যাট-ফ্রি ডায়েট অনুসরণ করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওজন কমানোর তাগিদে এমন সিদ্ধান্ত। অতিরিক্ত ফ্যাট শরীরের ক্ষতি করে। তবে দেহের ভারসাম্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট জাতীয় খাবার প্রয়োজন। এতে হৃদরোগ, মানসিক কষ্ট, অটিজম, ট্রমার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্মৃতিশক্তি ভালো থাকে।


কোলেস্টেরলের (cholesterol): কোলেস্টেরলের (cholesterol) ভয়ে অনেকেই ডিম খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। শরীরে পুষ্টির অভাব পূরণ করতে ডিম খুবই উপকারি বলে, ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিত্‌সকেরাও। কিন্তু ডিম নিয়ে অনেকের মনেই অনেকরকম সংশয় রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, ডিম খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। অনেকেই মনে করেন, প্রত্যেকদিন ডিম খেলে বেশি বয়সের মানুষদের শরীরে ক্লোরেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। চিকিত্‌সকেরা জানাচ্ছেন, ১টি ডিমের কুসুমে ২২১ মিলিগ্রাম ক্লোরেস্টেরল থাকে। তাঁরা বলছেন, সপ্তাহে ৩টি ডিম কুসুম সমেত খাওয়া দরকার। ডিমে প্রচুর দরকারি গুণাগুণ থাকে। যা আমাদের শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এবং শরীরে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতার মতো অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। এই সমস্ত ধারণা মুক্ত করার জন্য দেশজুড়ে ক্যাম্প করা হচ্ছে। চিকিত্‌সকদের মতে, প্রত্যেক ব্যক্তির তাঁদের ওজনের প্রতি কেজিতে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রত্যেকদিন প্রয়োজন হয়। যা ডিম থেকে পূরণ করা সম্ভব। সুস্থ মানুষের শরীরে ডিমের মাধ্যমে কোলেস্টেরলের প্রভাব বেড়েছে, এমন কোনও উদাহরণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তার বদলে শরীরে পুষ্টির জোগান দিতে ডিমের (Eggs) জুড়ি মেলা ভার।


গ্লুটেন মুক্ত (Gluten-free) খাবার: আটা, যব, বার্লি, রাই, ময়দার মধ্যে মিশে থাকা গ্লুটেন নামক বস্তুটি মোটেই শরীর-বান্ধব নয়৷ এতে প্রোটিনের মাত্রা প্রায় ৮০ শতাংশ৷ গ্লুটেন খুব দ্রুত ঠান্ডা জলে মিশে আটা বা ময়দার মণ্ড বানাতে সাহায্য করে৷ পাউরুটি, কেক-পেস্ট্রি-পিত্‍‌জাকে ফুলতে সাহায্য করে৷ সঙ্গে অনেকটা হাওয়াও ঢুকে যায়৷ এবং ওজন বাড়ায়৷ অনেকে গ্রেভি ঘন করতে একটু আটা, ময়দা বা বার্লি ছড়িয়ে দিই৷ ঝোল তো ঘন হল৷ কিন্তু ঘোল খাইয়ে গেল আপনাকে৷ আবার বিয়ার, সয়া সস, আইসক্রিম, কেচাপেও এর যথেচ্ছ ব্যবহার৷ ফলাফল, পেটের নানা সমস্যা৷ বিশেষ করে কোলিক ডিজিজ৷ হজমের গোলমাল৷ ওবেসিটি৷ গ্লুটেন অ্যালার্জি বা চামড়ায় প্রদাহজনিত হারপেটি ফরমিসের সম্ভাবনা৷ অনেকেরই ধারণা গ্লুটেন মুক্ত (Gluten-free) খাবার খেলে ওজন কমানো যায়। হ্যাঁ, যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে তাঁদের গ্লুটেন মুক্ত খাবারই খেতে হয়। কিন্তু যাঁরা ওজন কমবে বলে খেয়ে থাকেন, তাঁরা না জেনেই খাচ্ছেন। কারণ গ্লুটেন মুক্ত খাবার খেলে ওজন কমার প্রমাণ এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণায় মেলেনি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.