হিমাচুরিয়া রোগের পূর্ব লক্ষণ গুলো জেনে নিন

 


ODD বাংলা ডেস্ক: আমাদের শরীর কতটা সুস্থ, ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে তা জানান দেয় প্রস্রাবের রং। প্রস্রাবের রং ও প্রকৃতি খেয়াল রাখলে কিডনির নানা সমস্যা ও ডায়াবেটিস রোগের শুরুতেই সতর্ক হওয়া যায়। হঠাৎ করে কারও প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়তে পারে। প্রস্রাবের সঙ্গে এই রক্ত পড়াকে বলা হয় হিমাচুরিয়া। হিমাচুরিয়ায় প্রস্রাবের রং কখনো হালকা লাল কখনো বা গাঢ় লাল হতে পারে। অনেক সময় বলা হয়, শরীরে লুকানো রোগ থাকার কারণে প্রস্রাবে রক্ত আসে। রক্ত বেরিয়ে না এলে সেই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেত না। শেষ মুহূর্তে এসে ধরা পড়ত। তাই প্রস্রাবের রক্ত পড়াকে সতর্কতামূলক সংকেত বলে ধরে নেওয়াই ভালো।


কারণ: প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোলে দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলেও এমন রক্তপাত হয়। এছাড়া আরও তিনটি কারণে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে, সেগুলো হলো মূত্রনালির কোনো সংক্রমণ, কিডনিতে পাথর ও ক্যানসার। শৈশব থেকে বার্ধক্য যেকোনো বয়সে, যেকোনো সময়ে এটা হতে পারে। নারী কিংবা পুরুষ উভয়েরই এই সমস্যা হয়। তবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই এই সমস্যাটা বেশি হয়।


কেন হয়: ইউরিনের সঙ্গে রক্ত পড়ছে বোঝা যাবে যদি ব্লাড কাউন্ট করে রক্তের হিমোগ্লোবিন-এর মাত্রা দেখে নেওয়া হয়। দুই, ইউরিন কালচার করা হয়। কখনো বা মূত্রথলির আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। অর্থাৎ দেখা হয় হিমাচুরিয়ার মূলে শুধুই সংক্রমণ, না কিডনি স্টোন বা ক্যানসার আছে। পুরুষদের হিমাচুরিয়া হয় প্রস্টেট গ্রন্থির জন্য। নানা কারণে কিডনি স্টোন হতে পারে। এই স্টোন থেকে দুভাবে হিমাচুরিয়া হতে পারে। ঘষা লেগে কিংবা সংক্রমণ হওয়ার কারণে।


প্রতিকার: কিডনি স্টোন হলে প্রথমে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কারও কারও এর পরেও সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। লিথোট্রিপসি ও পিসিএনএল (পারকিউটেনাস নেফ্রোলিথোটমি) এর সাহায্যে শরীর থেকে তা বের করে দেওয়া হয়। খুব ছোট স্টোনের ক্ষেত্রে লিথোট্রিপসি করা হয় অর্থাৎ একটি যন্ত্রের সাহায্যে সেই স্টোনকে গুঁড়ো গুঁড়ো করে বের করে দেওয়া হয়। এতে অ্যানেসথেসিয়া লাগে না, ক্ষত হয় না, ব্যথা লাগে না, সংক্রমণও হয় না।


আবার পিসিএনএল-এর মাধ্যমেও। একে ‘কি হোল সার্জারি’ও বলে। চামড়া ফুটো করে কিডনি থেকে স্টোন অপসারণের পদ্ধতি। জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া করা এই সার্জারির জন্য মাত্র এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। লিথোট্রিপসিতে যখন কাজ হয় না কিংবা টুকরো হয়ে যাওয়া পাথর ইউরিনারি সিস্টেম থেকে বেরিয়ে যেতে পারে না, তখন এই সার্জারির প্রয়োজন হয়।


ইউরিন থেকে রক্ত পড়লে অনেকে ক্যানসারের পূর্বাভাস বলেও ভয় পান। তবে ক্যানসারের কারণেও হিমাচুরিয়া হয়। ঘুরিয়ে বলা যায় হিমাচুরিয়া হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ ক্যানসার। মূত্র তন্ত্রের যেকোনো জায়গায় এই ক্যানসার হতে পারে। যেমন : কিডনি, প্রস্টেট, মূত্রথলি ইত্যাদি। সে জন্যই আল্ট্রাসাউন্ড ও কিডনিতে কোনো টিউমার হয়েছে কি না তা দেখা হয়। বায়োপসিও করা হয়। টিউমারের চরিত্র ম্যালিগন্যান্ট পর্যায়ের হলে কিডনি কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে সম্পূর্ণ আরোগ্যের সম্ভাবনা থাকে। অন্য দিকে মূত্রথলিতে টিউমার


থাকলে প্রয়োজনমতো কেমোথেরাপি করা হয়। আশার কথা, ক্যানসারের কারণে যদি ইউরিনের সঙ্গে রক্ত পড়ে তবে ধরে নেওয়া যেতে পারে সেটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.