প্রশান্ত মহাসাগরে হারিয়ে গিয়ে টানা ৪৩৮ দিনের লড়াই! এই কাহিনী শুনলে শিউরে উঠবেন আপনিও

ODD বাংলা ডেস্ক: সালটা ২০১২। ১৭ নভেম্বর প্রতিদিনের মতো নিজের ছোট বোট আর কিছু মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে মাছ ধরতে রওনা হন জোস। সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক সঙ্গীও। সমুদ্রে ৩০ ঘন্টা কাটানোর মতো সরঞ্জাম নিয়ে সমুদ্রে পারি দিয়েছিলেন জোস। কিন্তু তাঁর তো জানা ছিল না যে আগামী ৪৩৮ দিন এখানেই কাটাতে হবে তাঁকে!

উপকূল থেকে ১২০ কিমি দূরে মাছ ধরির জাল ফেলে জোস। এমন সময় ভয়ানক সামুদ্রিক ঝঞ্জা শুরু হয়। সেখানেই জাল ফেলে উপকূলের দিকে নৌকা নিয়ে রওনা দেন জোস। কিন্তু উপকূল থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে তাঁর বোটের ইঞ্জিন খারাপ হয়ে যায়। এই সময় কাছে থাকা একটি রেডিওর মাধ্যমে মালিকের কাছে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়ে বার্তা পাঠান। কিন্তু মালিকের উত্তর পাওয়ার আগেই রেডিওর ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়! এদিকে সামুদ্রিক তীব্র বাতাস তাদের নৌকাকে ক্রমশে সমুদ্রের দিকে টানতে শুরু করে!

শেষে সমুদ্রে হারিয়ে যায় তারা। নৌকায় না ছিল কোনো খাবার, আর নাই পানীয়। এভাবে দিন কাটতে থাকে। খিদের জিলায় সামুদ্রিক মাছ কাচাই খেতে শুরু করে তারা। লবণাক্ত জল খেলে মৃত্যু আবশ্যক, তাই বৃষ্টি জল জমা করে খাওয়া শুরু করে। কিন্তু যখন বৃষ্টি হত না তখন মাছের কিংবা কচ্ছপের রক্ত দিয়ে তৃষ্ণা মেটাতো! একসময় এত মানসিক ও শারীরিক কষ্ট সহ্য করতে না পেরে জোসের সঙ্গী সমুদ্রেই আত্মহত্যা করে। 

জোস তখন নৌকায় একা। কোনো সঙ্গী নেই। ছয় মাস এভাবেই কেটে গিয়েছে। ভাগ্যক্রমে এইসময় এইসময় একটি কার্গো জাহাজের দেখা মেলে। কিন্তু এতো ছোটো নৌকা চোখে পড়ে না ঐ জাহাজ চালকের। ফলে ফের সেই একই রকম সামুদ্রিক সংগ্রাম চালিয়ে যান জোস। 

এভাবে টানা ৪৩৮ দিন তথা ১৪ মাসের উপর কাটানোর পর জোসের চোখে পড়ে কিছু ডাব ভেসে আসছে সমুদ্রের জলে। বুঝতে পারেন সামনেই কোনো দীপ রয়েছে। অবশেষে Ebon Atoll নামের ঐ আইল্যান্ডে পা রাখেন জোস। সেখানে দেখা হয় ঐ দীপের স্থানীয়দের সঙ্গে। অবশেষে টানা ১৪ মাস পর বাড়ি ফিরে আসেন জোস। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.