নৃবিজ্ঞান বা অ্যানথ্রোপলজিতে পড়াশোনা করে কী ধরনের ক্যারিয়ার গড়া যায় বা পেশাগত জীবনে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এটা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব বা সংশয়ে থাকেন। অথচ এ বিষয়ে পড়ে গবেষণা সংস্থা থেকে শুরু করে এনজিওসহ বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করার সুযোগ আছে। অ্যানথ্রোপলজি পড়ে ক্যারিয়ার গড়ার এমন কিছু সুযোগ সম্পর্কে জেনে আজ জেনে নেয়া যাক।
অ্যানথ্রোপলজিতে পড়লে কোন ধরনের দক্ষতা গড়া যায়?
অ্যানথ্রোপলজি পড়ার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী কয়েকটি ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করে থাকেন, যা তার পেশাগত ক্ষেত্রে প্রতি ধাপে কাজে লাগে। যেমন:
গবেষণার দক্ষতা
তথ্য সংগ্রহের দক্ষতা
যোগাযোগের দক্ষতা
সমস্যা অনুধাবনের দক্ষতা
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা
পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা
বিশ্লেষণের দক্ষতা
সংগৃহীত তথ্য উপস্থাপনের দক্ষতা
অ্যানথ্রোপলজি পড়ে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব কোন কোন খাতে?
সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও গবেষণা সংস্থা আর আন্তর্জাতিক সংস্থার চাকরিতে অ্যানথ্রোপলজির শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য দেয়া হয়। যেমন:
শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ
স্বাস্থ্য সেবা
পরিবার পরিকল্পনা
মা ও শিশুর টিকাদান
মাদকাসক্তি নিরাময়
শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা
নারী উন্নয়ন
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ
ক্ষুদ্র ঋণ ও দারিদ্র্য বিমোচন
গ্রামীণ উন্নয়ন
নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন
ত্রাণ ও পুনর্বাসন
শ্রম ও কর্মসংস্থান
কৃষি উন্নয়ন
সামাজিক বনায়ন
পরিবেশ রক্ষা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
মানবাধিকার
সুশাসন ও গণতন্ত্র
উল্লিখিত খাতগুলোতে আপনাকে যে ধরনের কাজ করতে হতে পারে, সেগুলো হলো:
তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রশ্নমালা প্রণয়ন
মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ
সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ
সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ
গবেষণা ফলাফল তৈরি ও উপস্থাপন
এছাড়া আপনি নিচের ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করতে পারেন:
প্রকল্প প্রণয়ন
প্রকল্প পরিচালনা
গবেষণা বিষয়ে পরামর্শ
নীতি নির্ধারণ
আপনি যদি শারীরিক নৃবিজ্ঞান, প্রত্নতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান কিংবা ভাষাতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান নিয়ে পড়েন, তাহলে কাজের পরিসর স্বাস্থ্য, ভাষা, প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর থেকে শুরু করে ফরেন্সিক বিভাগ, মনোবিদ্যা, জৈবপ্রযুক্তি, রোগতত্ত্বসহ বিভিন্ন ক্ষেত্র পর্যন্ত। এর বাইরে আপনি চাইলে শিক্ষকতায় প্রবেশ করতে পারেন। তবে এর জন্য উচ্চতর ডিগ্রি (যেমন, পিএইচডি) থাকা প্রয়োজন।
অ্যানথ্রোপলজি পড়ে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য করণীয় কী?
আপনি কোন খাতে ক্যারিয়ার গড়তে চান, সে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন।
যে খাতে কাজ করতে চান তার অস্তিত্ব বাংলাদেশে আছে কিনা, সে ব্যাপারে খোঁজ নিন।
সাধারণ খাতের চাকরিতে আপনার আগ্রহ থাকলে শুধু অনার্স ডিগ্রি নেয়া যথেষ্ট। তবে মাস্টার্স ডিগ্রি থাকলে কিছু ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন।
সরকারি, বেসরকারি, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা উন্নয়ন সংস্থায়- কোন ধরনের চাকরি করতে চান, সে ব্যাপারে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করুন।
ভালো কাজের সুযোগ পেতে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে লেখালেখি ও যোগাযোগের দক্ষতা অর্জন করুন।
যে ধরনের কাজ করতে চান, সে কাজের প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো অর্জনে সময় দিন। বিশেষ করে গবেষণার দক্ষতা বাড়ান।
আপনার অ্যাকাডেমিক জ্ঞান ভালো করুন।
স্পেশালাইজড চাকরিতে আগ্রহী হয়ে থাকলে ন্যূনতম মাস্টার্স ডিগ্রি নেবার প্রস্তুতি নিন। শিক্ষক হবার ক্ষেত্রে পিএইচডি করার ব্যাপারে খোঁজ রাখুন।
উচ্চতর শিক্ষা নেবার জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করুন।
Post a Comment