বাঙালির আসল দুর্গাপুজোই কিন্তু এই বাসন্তীপুজো, জানুন সেই কাহিনি

ODD বাংলা ডেস্ক: শরৎকালে শারদীয়া দুর্গা পূজা, আর বসন্ত কালে দেবীর আরাধনা বাসন্তী পূজা হিসেবে প্রসিদ্ধ। উভয় পূজার রীতিও প্রায় একই। ইতিহাস বলছে, চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই প্রকৃত দুর্গা পুজো। যদিও একালে আশ্বিন শুক্লপক্ষের বা শরতের দুর্গা পুজোই অন্যতম প্রধান পুজোর স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু তবুও বাঙালি আদি দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। তাই এখনও বাংলার অনেক জায়গায় দুর্গা পুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করা হয়। চলতি বছর বাসন্তী পূজা পড়েছে ৮ এপ্রিল, শুক্রবার।

পার্বতীর অন্য এক রূপ হল অন্নপূর্ণা। তিনি অন্নদা নামেও পরিচিতা। অন্ন কথার অর্থ ধান, আর পূর্ণা-র অর্থ হল পূর্ণ। অর্থাত্‍ যিনি অন্নদাত্রী। শক্তির অপর রূপ হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে বিরাজমান এই দেবী। দ্বিভুজা অন্নপূর্ণার এক হাতে অন্নপাত্র ও অন্য হাতে হাতা থাকে। দেবীর একপাশে থাকেন ভূমি ও অন্যপাশে থাকেন শ্রী। বাসন্তী পুজোর অষ্টমী তিথিতে অন্নপুর্ণার পুজা করা হয়। কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মতই তান্ত্রিক মতে এই পুজো হয়ে থাকে।

হিন্দু নানা পুরাণ ও গ্রন্থে দেবী অন্নপূর্ণার উল্লেখ রয়েছে। নানা কাহিনীও আছে দেবী অন্নপূর্ণা নিয়ে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে ব্যাস কাশী প্রতিষ্ঠার উপাখ্যান ও কাশী প্রতিষ্ঠার উপাখ্যান। এছাড়া রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র দেবী অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্য বর্ণনা করে অন্নদামঙ্গলকাব্য রচনা করেছিলেন।

পুরাণ মতে, বিয়ের পর কৈলাশ পর্বতে শিব ও পার্বতী বেশ সুখেই দাম্পত্যজীবন কাটাছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে কিছুদিন পর শুরু হয় দাম্পত্যকলহ। দারিদ্র্যের কারণে দেবীর সঙ্গে দেবাদিদেবের মতবিরোধে পার্বতী কৈলাস ত্যাগ করলে মহামারি, খাদ্যাভাব ঘটে। ভক্তগণকে এই বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য দেবাদিদেব ভিক্ষার ঝুলি নিজ কাঁধে তুলে নেন। কিন্তু দেবীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষে পান না তিনি। তখন দেবাদিদেব শোনেন যে কাশীতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। দেবীকে চিনতে মহাদেবের একটুও দেরি হয় না। মহাদেব দেবীর কাছে ভিক্ষা গ্রহণ করে ভক্তদের মহামারি ও খাদ্যাভাব থেকে রক্ষা করেন। এরপর দেবীর মহিমাবৃদ্ধির জন্য কাশীতে একটি মন্দির স্থাপন করেন শিব। চৈত্রমাসের শুক্লাপঞ্চমী তিথিতে সেই মন্দিরে দেবী অবতীর্ণ হলেন। সেই থেকেই দেবীর পূজার প্রচলন বাড়ে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.