বাচ্চার স্ট্রেস দূর করতে মেনে চলুন এই ১০টি টোটকা, সহজ কয়টি পদক্ষেপে সমস্যা দূর হবে

 


ODD বাংলা ডেস্ক: অধিকাংশই মনে করেন, অফিসের কাজে চাপে দেখা দেয় স্ট্রেস। সারাক্ষণ বসের দেওয়া টার্গেট মিট করতে কিংবা চাকরি বাঁচাতে চলে লড়াই। এই লড়াইয়ের সঙ্গে আছে পারিবারিক অশান্তি। এই সব মিলিয়ে দেখা দিতেই পারে স্ট্রেসের সমস্যা। কিন্তু, জানেন কী স্ট্রেসের সমস্যায় আক্রান্ত ছোট থেকে বড় সকলে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্কুলের বাচ্চাদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে স্ট্রেস। এর কারণ হতে পারে পড়ার অধিক চাপ, কিংবা কোনও দুর্ঘটনা। এবার বাচ্চাকে স্ট্রেস মুক্ত রাখতে মেনে চলুন এই কয়টি টোটকা। 


বাচ্চাদের রোজ ৯ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। আপনার বাচ্চার এই নির্দিষ্ট সময় ঘুমাচ্ছে কি না তার দিকে খেয়াল রাখুন। ঘুমের অভাবে দেখা দেয় স্ট্রেসের সমস্যা। তাই বাড়িতে ঘুমের সঠিক পরিবেশ তৈরি করুন। রোজ বাচ্চাকে নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে পাঠান। তা না হলে, দেখা দিতে পারে মানসিক জটিলতা। তাই বাচ্চার স্ট্রেস দূর করতে, তার ঘুমের দিয়ে সঠিক নজর দিন।


আজকাল বহু বাচ্চার খেলা বলতে ভিডিও গেম। অথবা পড়াশোনার চাপে মাঠে যাওয়ার সময় পান না অনেকেই। এবার থেকে এই নিয়ম বদল করুন। রোজ নির্দিষ্ট সময় বাচ্চাকে খেলতে নিয়ে যান। শারীরিক পরিশ্রম যত করত তত সে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকবে। তাই এবার থেকে রোজ মাঠে গিয়ে খেলার সময় নির্দিষ্ট করুন। 


বাচ্চার সঙ্গে গল্প করুন। আজকাল অধিকাংশ পরিবারেই মা ও বাবা দুজনে কর্মরত। সে কারণে বাচ্চারা একা একা বড় হচ্ছে। এতে তারা একাকীত্ম্য ভোগে। যা থেকে দেখা দেয় স্ট্রেস। তাই বাচ্চার সঠিক ভবিষ্যত গড়তে তাকে সময় দিন। তার সঙ্গে গল্প করুন। এতে বাচ্চার মনের সকল চাপ দূর হবে। 


বাচ্চার সঙ্গে খেলা করুন, তার সঙ্গে সিনেমা দেখুন। অনেক মায়েরা সারাক্ষণ বাচ্চাকে পড়াশোনা নিয়ে চাপ দিতে থাকেন। এতে বাচ্চারই ক্ষতি হয়। সারাক্ষণ পড়া পড়া করলে বাড়তে পারে তার মানসিক চাপ। তাই পড়াশোনা নিয়ে কখনও তার টার্গেট তৈরি করবেন না। এতে বাচ্চার স্ট্রেস দেখা দিতে পারে। সঙ্গে বাড়তে পারে মানসিক জটিলতা। 


বাচ্চার সঙ্গে বন্ধু মতো মেলামেশা করুন। সে আপনাকে ভয় পেতে কোনও সমস্যা জানাবে না। এতে বাড়তে পারে তার সমস্যা। তাই বাচ্চার সঙ্গে এমন ভাবে সম্পর্ক তৈরি করুন, যাতে সে আপনাকে সব রকম কথা বলতে পারে। ফলে, কোনও বিষয় নিয়ে তার স্ট্রেস দেখা দেওযার সম্ভাবনা কম।   


অনেকে বাচ্চারে বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেন না। এতে বাচ্চারই ক্ষতি হয়। বাচ্চারে সম বয়সি ছেলে-মেয়ের সঙ্গে মেলা মেশা করতে দিন। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করলে, গল্প করলে সে মানসিক চাপ মুক্ত থাকবে। মন যত ভালো থাকবে, তত এমন সমস্যা তাকে ঘিরে ধরতে পারবে না। বাচ্চার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মন ভালো রাখুন। 


আজকাল পরিবার বলতে মা বাবা ও সন্তান। অধিকাংশ বাচ্চাই একা একা বড় হয়। পরিবারের বাকি সদস্যরা থাকেন হয়তো দূরে। এই কারণে বাচ্চার মধ্যে ঘরকুনো স্বভাব দেখা দেয়। এই স্বভাব মারাত্মক আকার নিলে দেখা দিতে পারে মানসিক জটিলতা। দেখা দিতে পারে স্ট্রেস। এতে সে কারও সামনে যেতে ভয় পাবে। কারও সঙ্গে কথা বলতে ভয় পারে। তাই পরিবারের লোক ও বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করান। লোকের সঙ্গে মিশতে শেখান। 


স্ট্রেসের সম্পর্কে জানান বাচ্চাকে। বাচ্চার মধ্যে কোনও মানসিক চাপ দেখা দিতে তা আচরণে প্রকাশ পাবে। তাই বাচ্চার মধ্যে কোনও লক্ষণ দেখা দিলে তার সঙ্গে গল্প করুন। গল্পের ছলে জানান স্ট্রেস কেন হয়। তার এই সমস্যার কারণ উদঘাটন করুন। সেই অনুসারের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। তাহলে মানসিক চাপ থেকে সে সহজে মুক্তি পাবে। 


ভয়ের সামনা করতে শেখান বাচ্চাকে। কোনও ভয় থেকেই দেখা দেয় এমন সমস্যা। কে কীসে ভয় পাচ্ছে দেখুন। হতে পারে সে পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোনও  বিষয় পড়তে ভয় পায়। সেই থেকে বাড়ছে স্ট্রেস। সেক্ষেত্রে, বাচ্চাকে ভালো নম্বর করার চাপ দেবেন না। বরং, বিষয়টির প্রতি আগ্রহ তৈরি করুন।  


গবেষণা বলছে, বর্তমানে বহু বাচ্চা স্ট্রেসের শিকার। এর কারণে পড়াশোনা। তেমনই মা বাবার থেকে দূরে থাকার জন্যও বাড়ে স্ট্রেস। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বাচ্চার বিশেষ খেয়াল রাখুন। আর আচরণে পরিবর্তন দেখা দিলে সতর্ক হন। প্রয়োজনে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। সঠিক সময় রোগ নির্নয় করতে পারলে সহজে তার নিষ্পত্তি করা সম্ভব। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.