পাতার চেয়ে ফল বেশি, কোথা থেকে এল ‘সুইট লেমন’?

 


ODD বাংলা ডেস্ক: নীলফামারী সদরের কচুকাটা এলাকার মো. মামুন শাহের বাগানে গত কয়েক বছর ধরে চাষ হচ্ছে সুইট লেমন নামক একটি ফল। কমলা রঙের ফলটি যখন পাকে তখন পাতা আর ফল মিলিয়ে পুরো গাছটি দেখতে দারুণ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

লেবু গাছের চেয়ে একটু বড় আকৃতির এ গাছটিতে একসঙ্গে ৪/৫শ পর্যন্ত ফল হতে দেখা যায়।


গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামুন শাহ জানান, গাছ রোপণের দেড় মাসের মধ্যেই ফুল আসতে শুরু করে। তখন একটু বাড়তি পরিচর্যা করলে দারুণ সুফল পাওয়া যায়। গাছটি ফলে ফলে টইটুম্বুর হয়ে ওঠে।


ভারতে অনেকেই আবার মনে করেন এটি একধরনের শোভাবর্ধনকারী লেবু গাছ, যার বাণিজ্যিক সম্ভাবনা খুব একটা নেই।


নীলফামারী সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান বলছেন, এই ফলটির ভবিষ্যৎ ভারতে কেমন হবে তা বুঝতে আরো কিছুটা সময় নিতে হবে।


‘নতুন কিছু কৃষকরা সহজে নিতে চায় না। আবার পর্যাপ্ত বাজার সম্ভাবনা না থাকলে কৃষকদের প্রলুব্ধ করাও ঠিক হবে না। মাত্র তো শুরু হলো চাষ। আরো কিছু সময় যাক, মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা হোক- এরপরেই আসলে বলা যাবে সুইট লেমনের বাণিজ্যিক ভবিষ্যৎ ভারতে আছে কিনা’


তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. হামিদুর রহমান বলছেন বাণিজ্যিক সম্ভাবনা থাকুক আর না থাকুক, পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে এ ফলটি দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে।



সুইট লেমন আসলে কেমন ফল, এলো কোথা থেকে?


এটি টক-মিষ্টি জাতীয় একটি ফল। এর খোসাও সুস্বাদু ও রুচি বর্ধনকারী। একটি গাছে এই ফলটি বিপুল পরিমাণ হয়। টবেও করা যায়। এর খোসা অত্যন্ত রুচিবর্ধনকারী। মানুষের শরীরের জন্য খুব উপকারী।’


দেখতে কিছুটা ডিমের মতো সুইট লেমন ফলটির ভেতরের শাঁস টক মিষ্টি এবং এতে প্রচুর সাইট্রিক এসিড আছে- যা মানুষের জন্য দরকারি। টবেও এই গাছটি হতে পারে। সেটি হলে প্রতিটি বাড়িতে এটি হতে পারে পুষ্টির দারুণ একটি উৎস।


কৃষিবিদরা জানান, এটি হলো লেবুজাতীয় ফল এবং লেবু যেমন কেটে ভেতর থেকে রস খেতে হয় এটা তেমনটি নয়। বরং এখানে বাকলটা খাওয়ার জন্য দারুণ স্বাদের। আর ভেতরে শাঁসটা টক মিষ্টি ধরণের। বিচি ফেলে দিয়ে বাকি অংশ পুরোটাই খাওয়া যায়।


মামুন শাহ জানান, তাদের পারিবারিক নার্সারি ব্যবসা আছে এবং তার সূত্র ধরেই কয়েক বছর আগে থাইল্যান্ড থেকে সুইট লেমনের চারা এনেছিলেন তারা। সৌখিন চাষাবাদের জন্য এটি ভালো ফল। দেখতে সুন্দর। তাই ছাদবাগানেও দারুণ হবে। 

পাতার চেয়ে ফল বেশি হয়

মূলত সাইট্রাস জাতীয় এই ফলটি ভারতে তেমন একটা পরিচিত না। দেশের কিছু নার্সারিতে কয়েক বছর ধরে এটি দেখা যাচ্ছে।


এই গাছ লম্বায় আড়াই ফুটের মতো হয় ও অনেক ডালপালায় ভরপুর হয়। সারা বছরই থোকায় থোকায় ফল হয় এই গাছে।


উচ্চতার তুলনায় গাছটির ফল ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। গাছের বয়স বাড়লে ফলও বেশি হয়। কাঁচা অবস্থায় লেবুর মতো এই ফলটি সবুজ রঙের হয় আর পাকলে হলুদ বা কমলা রং হয়।


অনেকে বলেন ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য এটি বেশ উপকারী এবং ফলটি নিয়মিত খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বাড়িতে বা ছাদবাগানে ফলটি যেমন সৌন্দর্য বাড়াতে পারে তেমনি শরীরকেও সুস্থ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.