জিরার যত গুণ
ODD বাংলা ডেস্ক: মসলা হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত উপাদান জিরা। খাবারের ঘ্রাণের পাশাপাশি স্বাস্থ্যের জন্যও উপকার বয়ে আনে মসলাটি। বারডেম হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের সাবেক প্রধান ও পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলোর সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন মোনালিসা মেহরিন
মসলা হিসেবে জিরার গুণের কথা কমবেশি সবারই জানা। রান্না করা খাবারে সুস্বাদ ও সুগন্ধ এনে দিতে জিরার জুড়ি নেই।
পুষ্টিবিদদের কাছে এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী মসলা হিসেবেও সমাদৃত। এসবের বাইরেও জিরার রয়েছে আরো অনেক গুণ।
চলুন, জেনে নিই তেমনই কিছু গুণ—
ওজন কমায়
যাঁরা অতিরিক্ত ওজন সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা জিরাজল বা জিরা চায়ে প্রতিকার পেতে পারেন। ওজন কমাতে জিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গবেষকদের মতে, শরীরের ক্ষতিকর চর্বি ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে দারুণ সহায়তা করে জিরাজল বা জিরা চা। এতে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে। তাই প্রতিদিন সকালে জিরাজল বা জিরা চা পান করতে পারেন। জিরা ও মধু মিশিয়ে খেলেও এমন উপকার পাওয়া যাবে।
হজমশক্তি বাড়ায়
জিরায় রয়েছে থাইমলসহ তেলজাতীয় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা আমাদের লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপ্ত করে।
এর ফলে খাদ্য সহজে হজম হয়। যাঁরা বদহজমের মতো সমস্যায় ভুগছেন তাঁরাও জিরায় প্রতিকার পেতে পারেন।
কারণ হজমপ্রক্রিয়ার দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করে জিরা। প্রতিদিন সকালে বা রাতে এক কাপ জিরা চা পান করলে এমন উপকার মিলবে।
কিভাবে বানাবেন জিরা চা
পাত্রে এক গ্লাস জল নিতে হবে। এর মধ্যে এক চামচ জিরা মিশিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। জল ফুটে উঠলে পাত্রটি ঢেকে জল ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর দিনে তিন থেকে চারবার এই চা পান করতে হবে।
আবার এক গ্লাস জলে দুই চামচ জিরা সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে পারেন। সকালে জিরাজল ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে পান করলেও উপকার মিলবে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে জিরা। শুনে অবাক হতেই পারেন। কিন্তু এমনটাই দাবি গবেষকদের। এতে থাকা কুমিনঅ্যালডিহাইড নামক উপাদান টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে। জিরায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জিরায় থাকা পটাসিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে। পেটের চর্বি কমাতে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও কার্যকর জিরা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আয়রন এবং ডায়েটারি ফাইবারের উৎস জিরা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত জিরাজল পান করা জরুরি। জিরাজল পান করলে অনেক অসুখ থেকেই দূরে থাকা সম্ভব।
ডায়াবেটিসে উপকারী
যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা নিয়মিত জিরাজল পান করতে পারেন। কারণ প্রতিদিন খালি পেটে জিরাজল পান করলে রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে ডায়াবেটিসে উপকার পাওয়া যায়।
প্রদাহ রোধ করে
শরীরে আঘাতজনিত কারণে ব্যথা, প্রদাহ দেখা দিলে তা কমাতে সাহায্য করে জিরা। এমনকি আর্থ্রাইটিস, অ্যালার্জি, অ্যাজমা ও ক্যান্সারের প্রদাহ কমাতেও উপকারী জিরা।
এনার্জির ঘাটতি দূর হয়
জিরার ভেতরে থাকা একাধিক উপকারী উপাদান শরীরের এনার্জি বাড়াতে তাৎক্ষণিক উপকার এনে দেয়। ফলে সহজেই ক্লান্তি দূর হয়।
ত্বক ভালো রাখে
তারুণ্য ধরে রাখতে জিরাজলে উপকারী। ত্বকের ফুসকুড়ি, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা সমাধানেও জিরাজল উপকার দেয়। নিয়মিত জিরাজল পানে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। জিরাজলের সঙ্গে সামান্য হলুদ মিশিয়ে খেলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
Post a Comment