হিমালয়ের পাখি ‘ধলাটুপি’



 ODD বাংলা ডেস্ক: মাথায় সাদা টুপি, লাল ও কালো রঙে আবৃত দেহ। সুন্দর একটি পাখি! নাম লালগির্দি। এর আদি বাড়ি হিমালয়ে। প্রতি বছর ডিসেম্বরের দিকে এই পাখি ভারতেও আসে। ভারতের মানুষ একে বলে ‘ধলাটুপি’। ঝর্নার মতো ঝিরিঝিরি শব্দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাখিটি গান গায় সুরেলা কণ্ঠ। খুব চঞ্চল স্বভাবের পাখি। 

এ পাখির বাংলা নাম: ধলাটুপি লালগির্দি। ইংরেজি নাম: White-capped water Redstart,বৈজ্ঞানিক নাম: Chaimarrornis leucocephalus। পতঙ্গভুক পাখিটি মাত্র ১৩ সে.মি. দৈর্ঘ্যের। ওজন প্রায় ৩৩ গ্রাম। লালগির্দি লাল পেট ও কালো বুকের একটি পোকা শিকারী পাখি। এর বুক নীল-কালোসহ মাথা সাদা। যেন টুপি পরে আছে। 


এদের দেহের পিছন ও ডানা পুরাপুরি কালো। বুকের নিচ, পেট ও কোমর লালচে। লেজের প্রান্তদেশে প্রশস্ত কালো ফিতা থাকে। ঠোঁট কালো ও চোখ কালচে বাদামী। পা ও পায়ের পাতা কালচে বাদামী। পূর্ণ বয়স্ক পাখির দেহের প্রায় পুরোটা কালো ও লালচে।


ধলাটুপি লালগির্দি সাধারণত পর্বতের জলাধার, নদী, খাল, উঁচু পর্বতের তৃণভূমি, শিলাময় অঞ্চল ও বরফে ঢাকা এলাকায় বিচরণ করে। সচরাচর একা বা জোড়ায় থাকে। এরা জলের ধার অথবা উঁচু পর্বতের তৃণভূমিতে খাবার খোঁজে। এদের লেজ ছড়ানো থাকে। মাটিতে চলার সময় অবিরাম লেজ ওঠানামা করে। 


এরা খুব দ্রুত গতিতে চলাফেরা করে। খাবারের পিছনে ছোটাছুটির সময় গলা উঁচু করে ডাকে। মাটিতে ঠুকরে খাবার খায়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে পোকা-মাকড় ও রসালো ফল। 


এরা হিমালয়ের স্থায়ী বাসিন্দা, সেখানেই প্রজনন করে। এদের প্রজননের সময় মার্চ থেকে আগস্ট মাস। প্রজননকালে শিলার নিচে বা শিলার মুখে গর্তে শেওলা, পাতা, ঘাস ও চুল দিয়ে বড় বাটির মতো করে নিজেরাই বাসা বানায়। নিজেদের বানানো বাসায় মেয়ে পাখিটি ২-৩টি ডিম পাড়ে। মেয়ে পাখিটি একাই ডিমে তা দেয়। পুরুষ ও মেয়ে পাখি মিলে ছানা বড় করে।


এরা বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। এই পাখিটি পৃথিবীতে একটি মাত্র প্রজাতি। ভারতেও এই এক প্রজাতি দেখা যায়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.