ডেডলাইনে থাকা লেখকদের জন্য বিশেষ ক্যাফে, কাজ শেষ না করে বেরনো মানা

 


ODD বাংলা ডেস্ক:  লেখা একটি সৃজনশীল কাজ (creativity)। এবং অনেক সময়েই সময়ের চাপে সেই সৃজনশীলতা হারাতে বসেন লেখকেরা। এই কথা মোটামুটি সকলেরই জানা। বিশেষত পাবলিশারের চাপ যখন বেড়ে যায়, বা লেখা জমা দেওয়ায় শেষ তারিখ (deadline) যখন এগিয়ে আসে, তখন যেন লেখকদের মস্তিষ্ক কাজ করাই বন্ধ করে দেয়। পেনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য লেখকরা সাধারণত শান্ত ও স্বস্তির স্থান খোঁজেন। যেখানে চেঁচামেচি কম, খাবার বা পানীয় মিলবে সময়ে এবং এই ডিজিট্যাল যুগে অবশ্যই নেট পরিষেবা ভাল থাকবে। এবার এমনই জায়গার সন্ধান মিলছে জাপানে (Japan)। সঙ্গে রয়েছে আরও ট্যুইস্ট।


জাপানের 'লেখক-বান্ধব' ক্যাফে


জাপানের এক ক্যাফেতে লেখকদের সুবিধার্থে মিলছে একাধিক পরিষেবা। সঙ্গে আরও একাধিক সুবিধা। কিন্তু সেই ক্যাফেতে প্রবেশ মিলবে সেই সকল লেখকদেরই যাঁদের কাজ জমা দেওয়ার ডেডলাইন সামনে। সেখানেই শেষ নয়। এই ক্যাফে থেকে কাজ শেষ না করা পর্যন্ত বেরোতেই পারবেন না লেখকরা। হ্যাঁ! ঠিকই পড়ছেন। ডেডলাইন নিয়ে এই ক্যাফেতে ঢুকলে কাজ শেষ না করে বের হতে পারবেন না।


অদ্ভুত শোনালেও এমনই ব্যবস্থা করা হয়েছে জাপানের টোকিওর কোয়েনজির (Koenji district of Tokyo) এক ক্যাফেতে। চলতি মাসের শুরুর দিকেই চালু হয়েছে এই ক্যাফে। নাম 'দ্য ম্যানুস্ক্রিপ্ট রাইটিং ক্যাফে' (The Manuscript Writing Cafe)। 


ক্যাফে কর্তৃপক্ষ তাকুয়া কাওয়াই এদিন ট্যুইটারে ক্যাফের ছবি পোস্ট করেন। এবং সেই সঙ্গে ক্যাফের লম্বা নিয়মের তালিকাও প্রকাশ করেন। সেখানেই লেখা রয়েছে, 'আপনি যদি এই ক্যাফে ব্যবহার করতে চান তবে আপনাকে ডেডলাইনে থাকা একজন লেখক হতে হবে।'


জাপানি ভাষায় লেখা ওই পোস্টের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, 'দ্য ম্যানুস্ক্রিপ্ট রাইটিং ক্যাফে শুধুমাত্র সেইসব মানুষদেরই প্রবেশ করতে দেয় যাঁদের সামনেই ডেডলাইন রয়েছে! এটি ক্যাফেতে মনোযোগ এবং থমথমে পরিবেশ বজায় রাখার জন্য! বোঝার জন্য ধন্যবাদ।'


এক জাপানি সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ক্যাফেতে বিল দিতে হয় ব্যবহারকারী যতক্ষণ সময় কাটাচ্ছেন তাঁর ওপর নির্ভর করে। এখানে নগদ টাকা নেওয়া হয় না। সর্বনিম্ন ৩০ মিনিট এই ক্যাফেতে কাটাতে পারেন আপনি। এখানে মাত্র ১০ জনের বসার জায়গা আছে এবং ইউএসবি পোর্ট, কম্পিউটার স্ট্যান্ড, ওয়াইফাই পরিষেবাও আছে। এই ক্যাফেতে নিজের খাবার ও পানীয় নিয়েও ঢোকা যায়। 


এই ক্যাফেতে, 'অনুবাদ', 'প্রস্তাব পত্র', 'লেআউট' বা 'ইমেজ প্রসেসিং'-এর মতো কাজ করার সুবিধা রয়েছে। তবে এখানে নিয়মাবলী বেশ কড়া।


ক্যাফের নিয়মাবলী


যেমন ধরুন, আপনি একবার ক্যাফেতে প্রবেশ করার পরে, আপনাকে রিসেপশন ডেস্কে লিখতে হবে যে আপনি কতগুলি শব্দ লিখতে চান আজ এবং সেই লেখা কতক্ষণে আপনি শেষ করতে চলেছেন।


ম্যানেজার প্রত্যেক ঘণ্টায় এসে আপনার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে যাবেন। 


শেষ পর্যন্ত, আপনার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে তবেই ক্যাফে থেকে বেরোতে পারবেন। 


ক্যাফের এক ক্রেতার কথায়, প্রত্যেক ঘণ্টায় একটা ঘণ্টা বাজার পর ম্যানেজার এসে খোঁজ নেন কাজ সম্পর্কে। নিজের লক্ষ্য থেকে কতটা দূরে সেই লেখক, জানতে চান ম্যানেজার স্বয়ং।


প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রেতারা বিভিন্ন ক্যাটেগরি বেছে নিতে পারেন, যে ক্যাফের কর্মীরা কত ঘন ঘন এসে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। যেমন 'এস কোর্স' বাছলে ম্যানেজার সাংঘাতিক তাড়া দিতে থাকবেন লেখকদের। আর যাঁরা 'এম কোর্স' বাছবেন তাঁদের ধীরে সুস্থে খোঁজ নেওয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.