দেখতে খুবই ভয়ঙ্কর ও যন্ত্রণাদায়ক, এই চিকিৎসা পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রিকেটারদের মধ্যে



 ODD বাংলা ডেস্ক: বর্তমানে নিজেদের ফিট ও সতেজ রাখতে নানা পদ্ধতির  আশ্রয় নিচ্ছেন ক্রীড়াবিদরা। সেই সকল পদ্ধতিগুলির মধ্যে যার জনপ্রিয়তা দ্রুত গতিতে বাড়ছে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদদের  মধ্যে তা হল কাপিং থেরাপি (Cupping Therapy)। বিশেষ করে ক্রিকেটারদের (Cricketers) মধ্য়েও এই কাপিং থেরাপির জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে। আইপিএল ২০২২ (IPL 2022) চলাকালীন চলুন জানা যাক এই কাপং থেরাপি কি, কিসের জন্য ক্রীড়াবিদরা এই থেরাপি নিচ্ছে,কোন ক্রিকেটার এই থেরাপি নিয়েছেন, কীভাবে করা হয়, এর উপকারিতা  পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বা কি। 


কাপিং থেরাপি কি-

কাপিং থেরাপি একটি প্রাচীন চীনা ওষুধের বিকল্প, যা হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মাঝে এর ব্যবহার কমে গেলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা বৃ্দ্ধি পেয়েছে। এতে শরীরে কাপের মাধ্যমে ভ্যাকুয়াম তৈরি করে দূষিত রক্ত কাপগুলির ভিতরে চলে আসে।  যা শরীরের ব্যাথা কমায়, ফোলা কমায়, রক্ত ​​প্রবাহ ঠিক রাখে, আরাম ও শরীরে ঔজ্জ্বল্য প্রদান করে।


কাপিং থেরাপি কিভাবে করা হয়?

কাপিং থেরাপি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।  ড্রাই কাপিং থেরাপি, ওয়েট কাপিং থেরাপি এবং ফায়ার কাপিং থেরাপি। কাপিং থেরাপির মাধ্যমে একটি গ্লাস কাপের মাধ্যমে শরীরের ওই অংশে ভ্যাকিউম তৈরি করা হয়। কাপটি শরীরের সাথে লেগে যায়। তারপরে তিন থেকে পাঁচ মিনিটের পরে নোংরা রক্ত ​​এতে জমা হয়। এরপরে জমা নোংরা রক্তগুলি বার করে দেওয়া হয়। তাতে শরীর সতেজ হয় ও স্কিন গ্লো করে। অনেক সময় শারীরিক অসুস্থতার জন্যও কাপিং থেরাপি করানো হয়। যে স্থানে কাপিং থেরাপি করা হয় সেখানে কিছু সময়ের জন্য লাল গোল দাগ তৈরি হয়। কিছু দিন পর তারা মিলিয়ে যায়।


কাপিং থেরাপির সুবিধা-

কাপিং থেরাপি শরীরের ভিতরে যে কোনও ব্যাথা কমাতেও সাহায্য করে। এছাড়াও ক্রীড়াবিদরা এটি তাদের রক্ত ​​​​প্রবাহ সঠিক করতে সহায়তা করে। যা তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের যে অংশে কাপিং করা হয় তার পেশিতেও অনেক আরাম পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে। কাপিং থেরাপি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় এবং এটি স্ট্রেস লেভেলও কমায়।


কেন কাপিং থেরাপি খেলোয়াড়দের পছন্দ হয়ে উঠল-

অনেক ক্রীড়াবিদ যারা কাপিং থেরাপি বেছে নেন তারা প্রায়ই তাদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের আগে এবং পরে তা করেন। কারণ এটি তাদের স্বস্তি দেয় এবং তাদের যে জায়গায় ব্যথা হয়, তারা খেলার আগে তা ঠিক করতে চায়। কাপিং শরীরের অভ্যন্তরে যে কোনও বিষাক্ত পদার্থের বার করে দেয়। এই থেরাপির ফলে শরীরের পেশী এবং টিস্যুগুলির ক্ষমতা বেড়ে যায়।


কাপিং থেরাপি নিয়েছেন মহম্মদ শামি-

আইপিএল ২০২০ চলাকালীন ভারতীয় তারকা পেসার মহম্মদ শামি দুবাইতে কাপিং থেরাপি নিয়েছিলেন। এরপর কয়েক মাস তার শরীরে এর চিহ্ন ছিল। নিজের কাপিং থেরাপির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন মহম্মদ শামি। যা দেখতে খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। ফ্যানেরা তা দেখে প্রাথমিকভাবে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই থেরাপি নেওয়ার পর  উপকার হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। সেই সময় পঞ্জাব দলে খেলতেন শামি, এবার গুজরাট দলে খেলছেন। 

 

কাপিং থেরাপি নিয়েছেন মইন আলি-

ইংল্যানডের তারকা ক্রিকেটার মইন আলিও এই কাপিং থেরাপি নিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের  অলরাউন্ডার দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংস দলের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। মইন আলি এই কাপিং থেরাপি পেশী শিথিল করার জন্য 


পাকিস্তানের একাধিক ক্রিকেটার নিয়েছেন কাপিং থেরাপি-

২০১৫ সাবে  আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানের কিছু খেলোয়াড় এই কাপিং থেরাপির করিয়েছিল। অলরাউন্ডার শাহিদ আফ্রিদি, ব্যাটসম্যান উমর আকমল, পেসার সোহেল খান রয়েছেন  'কাপিং থেরাপি' নেওয়ার তালিকা। শরীরকে সতেজ রাখতে ও রক্ত প্রবাহ ও পেশী সাবলীল রাখতে এই থেরাপির আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা।

 


কাপিং থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-

এই বিশেষ ধরনের থেরাপি সবার জন্য নয়। এই থেরাপি শুরু করার আগে প্রত্যেককে অবশ্যই তাদের ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। এই থেরাপির কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হল হালকা অস্বস্তি, পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, ত্বকের সংক্রমণ ও ক্ষত হতে পারে। তবে এর উপকারিতাই বেশি। সেই কারণেই দ্রুত ক্রীড়াজগতে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.