ট্যারা চোখ একটি মারাত্মক সমস্যা জানেন কি?



 ODD বাংলা ডেস্ক: অনেকে বাবা-মা ভাবেন, ট্যারা চোখ হলো সুলক্ষণ। আদর করে বলেন, লক্ষ্মীট্যারা। সন্তানের চোখ ট্যারা হলে অনেক মা-বাবা খুশিও হন। তবে যখন আবিষ্কৃত হয়, ট্যারাচোখে শিশু প্রায় কিছুই দেখতে পাচ্ছে না, তখন বাবা-মায়ের টনক নড়ে।


ট্যারা চোখ : শারীরিক অন্যান্য ত্রুটির মতো ট্যারা চোখ একটি ত্রুটি। মানবদেহের দুটি চক্ষুগোলকের গঠন-সামঞ্জস্যই কোনো বস্তু সঠিকভাবে দেখতে সাহায্য করে। কিন্তু জন্মগত বা অন্য কোনো কারণে যদি দৃষ্টিশক্তি ও চক্ষুগোলকের গঠনগত অসামঞ্জস্য হয়, তবে দুচোখের দৃষ্টিশক্তি সমান্তরাল না হয়ে এক বা দুটি চোখে হয়তো কান, নয়তো নাকের দিকে বেঁকে যায়। এ বেঁকে যাওয়ার নামই ট্যারা চোখ। এটি শুধু সৌন্দর্যহানিই করে না, চোখের স্বাভাবিক কাজকর্মও ব্যাহত করে। যেমনÑ একটি বস্তু দুটি কিংবা ঝাপসা দেখায়। এমনকি একপর্যায়ে অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে সহজেই এ সমস্যার সমাধান মেলে।


রোগের কারণ : বিভিন্ন কারণে চোখ ট্যারা হয়ে থাকে। যেমনÑ মাংসপেশিতে আঘাত পেলে। যদি বাহ্যিক কোনো আঘাতে মাংসপেশিগুলোর মধ্যকার ভারসাম্য নষ্ট হয়, তখন এক চোখ অন্য চোখের সমান্তরাল অক্ষরেখা থেকে দূরে সরে যায় এবং সেই চোখ ট্যারা হয়। এমন ট্যারার নাম অপঘাতজনিত ট্যারা। কোনো কারণে দুটি চোখের কোনো একটির দৃষ্টিশক্তি কম হলেও এ ধরনের ট্যারা হতে পারে। এ ছাড়া জন্মগত কারণসহ কোনো কারণে চোখের মাংসপেশি অবশ হয়ে গেলে চোখ ট্যারা হয়।


চিকিৎসা : চিকিৎসার সাফল্য নির্ভর করে কোন বয়সে চিকিৎসা শুরু করা গেল, তার ওপর। সাধারণত ট্যারা চোখের গোড়াপত্তন শিশুবয়স থেকে। চশমা বা অন্যান্য চিকিৎসার সাহায্য না নিলে সেই ট্যারাভাব ক্রমে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক সময় দেরি করে চিকিৎসা শুরু করলে চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়া নাও যেতে পারে। কাজেই শিশুর ট্যারাভাব লক্ষ করলেই মা-বাবার উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।বয়স্কদের চশমা ব্যবহার ও চোখের ব্যায়াম করতে হবে।


এ ক্ষেত্রে এক চোখ নিরেট কোনো বস্তু দিয়ে ঢেকে অন্য চোখ দিয়ে দেখার মাধ্যমে দৃষ্টি সমতা আনা যায়। এ ছাড়া অপটিক্যাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ পাওয়ারযুক্ত চশমা ব্যবহার, এমনকি কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেও এটির চিকিৎসা করা সম্ভব। বেশি ট্যারা চোখের ক্ষেত্রে অপারেশন প্রয়োজন হয়। আবার খুব বেশি ট্যারা চোখ হলে একটি চোখের ওপর অপারেশন করে পুরো ফল পাওয়া নাও যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় চোখের ওপর অপারেশন করিয়ে একেবারে স্বাভাবিক করা সম্ভব। শিশুর ক্ষেত্রে চোখ ট্যারা হওয়ার কারণে দুটি চোখের দৃষ্টিতে থাকে অসামঞ্জস্য। কোনো কিছু দেখার জন্য তার চাপ পড়ে একটি চোখের ওপর। এ অতিরিক্ত চাপে শিশুর চোখে ব্যথা হয় এবং সেই সঙ্গে প্রচ- মাথাব্যথা হয়। চিকিৎসা না করালে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.