একসময় ওষুধ হিসেবে বিক্রি হত টম্যাটো কেচাপ, জানুন সেই বৃত্তান্ত

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সিঙাড়া হোক কিংবা পকোড়া, টম্যাটো কেচাপ (Tomato Ketchup) ছাড়া জমবে না। যে কোনও খাবারের স্বাদকে দ্বিগুণ করে তুলতে এর জুড়ি নেই। রান্নাতেও কাঁচা টম্যাটোর বদলে সস দিতেই পছন্দ করেন অনেকে। এখন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নুন, চিনির মতো টম্যাটো সসের বোতলও মজুত থাকে। যে কোনও খাবারের সঙ্গে পছন্দ মতো ঢেলে নিলেই হল। তবে, শুধু স্বাদ নয় স্বাস্থ্যের জন্যও বিশেষ উপকারী এই কেচাপ (Tomato Ketchup)। এক সময় এই সুস্বাদু টম্যাটো সস শুধুমাত্র ওষুধ হিসাবে ব্যবহার হত! আজ্ঞে হ্যাঁ, গল্প হলেও এটাই সত্যি (Tomato Ketchup was used as medicine)।


কেচাপের ইতিহাস: এই সসের জন্মবৃত্তান্ত খুঁজে বের করা কঠিন। তবে আমেরিকায় কেচাপ জনপ্রিয় হলেও এর উৎস এশিয়ায়। চিনা নাবিকরা ‘কি-চুপ’ নামের একটি বিশেষ সস বানাতেন। মাছের চর্বি এবং সয়াবিন দিয়ে এটা তৈরি করা হত। কিছুটা নোনতা স্বাদের এই সসের তীব্র গন্ধ ছিল। আপাতভাবে আজকের কেচাপের এটাই আদি রূপ (Tomato Ketchup)।


কেচাপের বিবর্তন: ১৭৩৬ সালে এই কেচাপের রেসিপিতে আরও কিছু জিনিস যোগ করা হয়। বিয়ার এবং অ্যাঙ্কোভিস সহযোগে ফোটানো হয়। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভের লাভ হয়নি। কেচাপে আসেনি সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাদ। এরপর ১৮১২ সালে এই সস নাবিকদের হাত ধরে চিন থেকে পাড়ি জমায় ইংল্যান্ডে। বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা হয়। সেই সময় টম্যাটো কামোদ্দীপক ফল হিসেবে দেখা হত। বলা হত ‘লাভ আপেল’। এর কয়েক বছর পর হেনরি হেইঞ্চ পাকা টম্যাটো, ভিনিগার, চিনি, নুন এবং বিভিন্ন ধরনের মশলা মিশিয়ে তৈরি করলেন আজকের কেচাপ (Tomato Ketchup)।


এবার ওষুধ: টমেটোতে পেকটিন, লাইকোপিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা ঔষধি হিসেবেও ব্যবহার হয়। এটাকেই কাজে লাগান ডা. জন কুক বেনেট। ডায়রিয়া, বদহজম, জন্ডিস ইত্যাদি অসুখের ওষুধ হিসেবে টম্যাটো কেচাপ থেকে বড়ি বানিয়ে ‘টম্যাটো পিলস’ নামক ওষুধের মোড়কে রোগীদের দিতে শুরু করেন তিনি।


অতঃপর: ধীরে ধীরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয় এই ওষুধ। বহু মানুষ ‘টম্যাটো পিলস’ নামক ওষুধের ব্যবসা শুরু করেন। তাঁদের আবার দাবি ছিল, এটা স্কার্ভির মতো রোগ সারিয়ে দেবে। ভিটামিনের অভাবও মেটাবে। শুরু হয় প্রতিযোগিতা। এত বেশি মানুষ টম্যাটো কেচাপের ব্যবসায় নেমে পড়েন যে, এর বাজারটাই ধীরে ধীরে সঙ্কটের মুখে পড়ে যায়। তা ছাড়া অনেকের বানানো ‘টম্যাটো পিলসে’ টম্যাটোর উপাদানও থাকত না। প্রকৃত ওষুধ ব্যবসায়ীরা সেসব প্রচার করতে শুরু করে। শেষে ১৮৫০ নাগাদ এই ‘ওষুধ’-এর ব্যবহার উঠে যায়। টম্যাটো কেচাপ নিজের অস্তিত্বে ফিরে আসে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.