এই গরমেও আপনার শিশুকে যেতে হচ্ছে স্কুলে, কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাকে?
ODD বাংলা ডেস্ক: বাইরে বইছে গরম হাওয়া। শিশু থেকে বৃদ্ধ, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকলেরই। তাপমাত্রা না কমে আগামীদিনে আরও বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে আবহাওয়া অফিস। আবার করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে যেহেতু স্কুল খুলে গেছে, সেজন্য এই পরিস্থিতির মধ্যেও বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে অভিভাবকদের। ঘেমে নেয়ে স্কুল থেকে ফিরছে শিশুরা। গরমের হাত থেকে তাদের নিরাপদে রাখতে যথেষ্টই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তাদের অভিভাবকরা। এই গরমে কীভাবে ভাল রাখবেন আপনার শিশুদের? জানাচ্ছেন চিকিৎসক ও অধ্যাপক অরুণ সিং। কর্মসূত্রে যিনি এইমুহুর্তে যুক্ত আছেন যোধপুর এইমসে। সেখানকার নিউ নেটালজি ডিপার্টমেন্টের প্রধান হিসেবে।
এই চিকিৎসকের কথায়, ‘সহজ ভাষায় বলতে গেলে মানুষ–সহ সকল জীবের শরীরেই যে সেল বা কোষ আছে সেখানে ‘পাওয়ার হাউস’ আছে। এখানে শক্তি উৎপাদন হয়। এনার্জির এই কারেন্সিকে বলে ‘এটিপি’। ব্রেইন বা মস্তিষ্ক সবচেয়ে বেশি এই এটিপি ব্যবহার করে। এটা কমে গেলে খিঁচুনি বা স্ট্রোক হতে পারে। ঘুমালেও কিন্তু এটিপি উৎপাদন ব্যবস্থা চালু থাকে। এই শক্তির মূল উপাদান হল অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ। রাতে যে এটিপি তৈরি হয় সেটাই দিনে ব্যবহার হয়। এই পাওয়ার হাউসের নাম ‘মাইটোকনড্রিয়া’। যদি প্রচণ্ড গরম পড়ে বা দিনরাত কেউ গরমে থাকেন তবে মাইটোকনড্রিয়া এনার্জি বা শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। কারণ, তাকেও ঠান্ডা হতে কিছুটা সময় লাগে। বাইরের ঠান্ডাটাই তাকে ঠান্ডা হতে সাহায্য করে। এটিপি কম তৈরি হওয়ার পরেও কেউ যদি পরিশ্রম করে তবে তার মাংশপেশী এটিপি টেনে নেয়। মস্তিষ্কে এর পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে তৈরি হয় অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা। সেজন্যই শিশুরা যারা স্কুলে যাচ্ছে তারা যেন রোদের মধ্যে খেলাধুলা না করে।’
এর পাশাপাশি এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘সকালে উঠে জল খেতে হবে। রোদের তাপ থেকে রক্ষা করতে শিশুদের বাইরে পাঠানোর আগে তাদের মাথায় টুপি পরিয়ে দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সাদা টুপি, সাদা ছাতা এবং সাদা পোশাক সবচেয়ে ভাল। কারণ, সাদা রঙ তাপ বিকিরণ করে দেয়। খুব ভাল হয় যদি দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নেওয়া যায়।’
এই গরমে অনেকেই তাদের শিশুদের মাংস, ডিম পাতে দেন না। অরুণ সিংয়ের মতে, ‘এটা একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত। দুধ, দই, মাছ, মাংস, ডিম খেতে দিন। ডিম অবশ্যই হাফবয়েল নয়।’
অনেক অভিভাবকই তাদের শিশুদের জলের বোতলে গ্লুকন ডি বা গ্লুকন সি সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছেন। যা খাওয়াতে না করছেন তিনি। তাঁর মতে, ‘এতে পেট ফাঁপতে পারে। লেবু বা টক জাতীয় ফল খাওয়ানো উচিত। মিষ্টিটাও বেশি খাওয়া ঠিক নয়। নর্মাল বা স্বাভাবিক পরিমাণ মিষ্টি খাবে। চেষ্টা করা উচিত কোল্ড ড্রিঙ্কস বা ফ্রিজের ঠান্ডা জলটা এড়িয়ে চলা। এর সঙ্গে আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, গরমে ঘেমে এসে ঠান্ডা হতে দুম করে এসি ঘরের মধ্যে কিন্তু ঢোকা যাবে না।’
Post a Comment