লিভার সুস্থ রাখতে পরিবর্তন আনতে হবে জীবনযাপনে, এই সব উপায় মেনে চলতে হবে!
ODD বাংলা ডেস্ক: লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, আমাদের লিভার সারা দিনে ৫০০টিরও বেশি শারীরিক কাজ করে। পিত্তরস তৈরি থেকে শুরু করে রক্ত থেকে বিষাক্ত উপাদান বা টক্সিন দেহের বাইরে বার করে দেওয়া-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ তো করেই। সেই সঙ্গে আমরা যা কিছু খাই অথবা পান করি, সেই সব কিছু হজম করতেও সাহায্য করে লিভার। তাই শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের বিশেষ দেখভাল অত্যন্ত জরুরি! কারণ লিভারে কোনও সমস্যা তৈরি হলে তার প্রভাব সমগ্র শরীরের উপর পড়ে। বিভিন্ন বিষয় লিভারের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যার মধ্যে আমাদের জীবনধারার অভ্যাস হল অন্যতম। তাই লিভার ভালো রাখতে আমাদের জীবনযাপনের ধরনে পরিবর্তন আনা জরুরি। তাহলে লিভার ভালো রাখতে কয়েকটি উপায় মেনে চলা উচিত।
পাতে থাকুক রঙের ছটা:
সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসই লিভার ভালো রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি এবং ফল আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই রঙবেরঙের ফল ও শাক-সবজি আরও বেশি করে ডায়েটে যোগ করা উচিত। তাহলে শরীর পুষ্টি পাবে এবং লিভারও সুস্থ থাকবে। পাশাপাশি লিভারের সুরক্ষার্থে রিফাইন করা খাবার, চিনি, জাঙ্ক ফুড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া উচিত নয়।
ওজন থাকুক নিয়ন্ত্রণে:
স্থূলকায় ব্যক্তিদের লিভারের নানা অসুখ-সহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। আসলে ওজন বেশি হলে লিভার-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর চাপ পড়ে এবং অঙ্গগুলিকে কাজ করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। পাশাপাশি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই ওজন ঠিক থাকলে লিভারের কার্যকারিতাও সঠিক থাকবে।
নিয়মিত লিভার পরীক্ষা:
যাঁরা মদ্যপান করেন এবং যাঁদের লিভারের রোগের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে, তাঁদের নিয়মিত লিভার পরীক্ষা করানো উচিত। আসলে যে কোনও রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব হয়। তবে লিভার পরীক্ষার বিষয়টা কাদের জন্য সবথেকে বেশি জরুরি, সেই তালিকাটা দেখে নেওয়া যাক-
গর্ভবতী
হিমোডায়ালিসিসে আছেন এমন রোগী
এইচআইভি রোগী
যাঁরা কখনও বেআইনি মাদক ইঞ্জেকশনের আকারে সেবন করেছেন
সংক্রমিত ছুঁচ নিজের শরীরে বিঁধিয়েছেন এমন ব্যক্তি
অস্বাভাবিক লিভার রোগে কখনও যাঁরা আক্রান্ত ছিলেন
সুরক্ষিত যৌনতা:
অরক্ষিত যৌন মিলন হেপাটাইটিসের ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। যা ধীরে ধীরে লিভারের প্রদাহের সৃষ্টি করে। সবচেয়ে খারাপ দিকটি হল এটি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা কঠিন বলে চিকিৎসাও দেরিতে শুরু হয়। হেপাটাইটিস ভাইরাসের পাঁচটি প্রধান প্রকারভেদ রয়েছে- এ, বি, সি, ডি, ই। এর মধ্যে হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর সংক্রমণ হতে পারে অরক্ষিত যৌন মিলন অথবা একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার মাধ্যমে।
সঠিক ওষুধ খাওয়া:
যে কোনও শারীরিক কারণে ওষুধ কিংবা কোনও সাপ্লিমেন্ট খেলে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মেনে খাওয়া উচিত। আবার দীর্ঘদিন ধরে বেশি ওষুধ খেলেও লিভারের ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি ওষুধ খাওয়ার পরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন- র্যাশ, ক্লান্তিভাব দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারকে জানানো উচিত।
ভ্যাকসিন নেওয়া:
লিভারের ক্ষতি এড়াতে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি-এর টিকা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল এবং ভবিষ্যতে লিভার সম্পর্কিত সমস্যা হতে পারে, তাঁদের টিকা নেওয়া খুবই জরুরি। তবে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
Post a Comment