বয়ঃসন্ধি কালে ক্রমে বাড়ছে ব্রণ-র সমস্যা, রইল এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়

 


ODD বাংলা ডেস্ক: ত্বকের হাজারটা সমস্যা লেগেই আছে। কখনও তেল তেল ভাব, কখনও চুলকানি তো কখনও ব্রণ। এই ব্রণ নিয়ে অনেকেই চিন্তায় ভোগেন। সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বাজার চলতি নানান প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন। তাতে সাময়িক মুক্তি মিললেও পুরোপুরি মেলে না। ব্রণর সমস্যা বেশি দেখা দেয় বয়ঃসন্ধির কালে। এই বয়সে অধিকাংশে মুখেই ব্রণ হয়। কারও কারও পিঠে কিংবা বুকে দেখা দেয় ব্রণ। কিছুটা ক্ষুদ্র মাপের ফোঁড়ার মতো হয় বয়ঃসন্ধি কালের ব্রণ। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে মেন চলুন ডাক্তারি পরামর্শ।  


এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ১২ থেকে ২১ বছর বয়সে বেশি হয় ব্রণর সমস্যা। সমীক্ষায় পাওয়া গিয়ছে শতকরা ৪৫ ভাগ ছেলে ও মেয়েরা কম বেশি এই সমস্যায় ভোগেন। এই বয়সে মুখ, পিঠ কিংবা বুকে ক্ষুদ্র মাপের ফোঁড়ার মতো হয় বয়ঃসন্ধি কালের ব্রণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আপনা থেকেই কমে যায়। 


আসলে বয়ঃসন্ধির সময় কিছু হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে। এই সময় অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোনের পরিবর্তন হয়। এই হরমোন বিশেষ কিছু গ্রন্থি ওপর কাজ করে। যা মুখ, পিঠ ও বুকে থাকে। সে কারণে শরীরের এই তিন অংশ ব্রণ বের হয়। এই হরমোন যখন গ্রন্থির ওপর প্রভাব সৃষ্টি করে তখন গ্রন্থিগুলো ফুলে যায়। গ্রন্থি থেকে বের হয় তৈলাক্ত পদার্থ। 


কোনও কোনও সময় গ্রন্থিগুলো এতটাই বেড়ে যায় যে তা ফুলে ওঠে। সময় সময় মুখে, পিঠে ও বুকে ফোঁড়ার মতো ব্রণ দেখা দেয়। এই ধরনের ব্রণগুলো লাল হয়ে পেকে ওঠে। আর ব্রণর মুখ থেকে সাদা পুঁজের মতো বের হতে থাকে। অনেকে আবার এই ব্রণ ফাটিয়ে ফেলেন। এর থেকে পরে মুখে দাগ হয়ে যায়।


তাই বয়ঃসন্ধির কালে ব্রণ দেখা দিলে তা ফেলে রাখবেন না। অনেকে এই সময় নানা রকম টোটকা মেনে চলেন। এতে সমস্যা বাড়তে পারে। এই ধরনের ব্রণর ওপর ভুলেও টুথ পেস্ট কিংবা ডেটল জাতীয় ওষুধ লাগাবেন না। এতে মুখ ফুলে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল থেকে যায়। 


বয়ঃসন্ধির কালে ব্রণ দেখা দিলে বিশেষ কয়টি জিনিস মেনে চলুন। এই সময় মুখ পরিষ্কার রাখবেন। বাড়ি ফিরে সবার আগে উপযুক্ত ফেসওয়াস ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করবেন। যত মুখ পরিষ্কার রাখবেন, তত ত্বক ভালো থাকবে। আর কোনও মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে তা তুলতে ভুলবেন না।


বদল আনুন খাদ্যতালিকায়। খাবার খাদ্যাভ্যাস থেকে বাড়তে পারে ব্রণ। যতটা পারবেন তেল যুক্ত খাবার কম খান। এড়িয়ে চলুন দোকানের খাবার। এই ধরনের খাবার হরমোনের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। যার থেকে বাড়তে পারে ব্রণ তাই ব্রণ সমস্যা কমাতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস জরুরি। বাচ্চারা এই সময় নানা রকম দোকানের খাবার খেয়ে থাকেন, এই স্বভাবের বদল করা দরকার। 


ব্রণ দূর করতে মেনে চলতে পারেন ঘরোয়া টোটকা। তবে, হাজার রকম উপকরণ দিয়ে প্যাক বানানোর দরকার নেই। শুধু নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন। জল গরম করতে তাতে কয়টি নিমপাতা দিয়ে ফোটাতে শুরু করুন। তারপর এই জল ছেঁকে নিন। ঠান্ডা করে তুলোয় করে ব্রণর ওপর লাগান। এটি অ্যান্টি সেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। 


বয়ঃসন্ধির ব্রণ দূর করতে হলুদ বেশ উপকারী। হলুদের একটি ছোট টুকরো বেটে নিন। তারপর তা ব্রণর ওপর লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। ব্রণ দূর করতে হলুদ বেশ উপকারী। এতে থাকা একাধিক উপাদান অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। হলুদের গুণে ব্রণ দূর হবে। তাই রোজই হলুদ বাটা লাগাতে পারেন। 


ব্রণ দূর করতে লবঙ্গ বেশ উপকারী। কয়েকটা লবঙ্গ নিয়ে এক সঙ্গে থেঁতো করে নিন। এবার সেই রস ব্রণর ওপর লাগান। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এতে থাকা একাধিক উপাদান অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে। লবঙ্গ লাগালে জ্বালা ভাব দেখা দিতে পারে। তবে, কিছুক্ষণ পর তা কমে যাবে। ব্রণ দূর করতে লাগাতে পারেন লবঙ্গ।


বয়ঃসন্ধির কালে ব্রণ বাড়তে থাকলে তা ফেলে রাখবেন না। সঠিক নিয়ম মেনে থাকলে তা ডাক্তারি পরামর্শ নিন। এই সময় ব্রণর সমস্যা সমাধান না করলে তা বড় আকার নিতে পারে। আর ব্রণ হলে তা ফাটাবেন না। এর থেকে মুখে দাগ হয়ে যায়। তাই সময় থাকতে থাকতে ডাক্তারি পরামর্শ নিন।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.