পুত্র সন্তান পেতে একটা অণ্ডকোষ কেটে ফেলত পুরুষরা! আদৌ কতটা বিজ্ঞানসম্মত এই প্রথা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সভ্যতার আদি ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় বরাবরই মহিলারা সভ্যতা এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মূল পরিচালনার দায়িত্বে থেকেছে। কিন্তু, শুধুমাত্র বলশালী হওয়ার ফায়দা তুলে আস্তে আস্তে সভ্যতাটাই হয়ে উঠেছে পুরুষতান্ত্রিক। বর্তমান সময়ে এই মানসিকতার অনেকটা পরিবর্তন ঘটলেও এখনও পুত্র সন্তানের মোহ সমাজ ত্যাগ করতে পারেনি। 


পুত্র সন্তানের মোহ আদি-অনন্তকালের। শুধু ভারতবর্ষ বলেই নয় সারা বিশ্বের কাছে বরাবরই এই মানসিকতা একটা সামাজিক ব্যধি হিসাবে সামনে এসেছে। সভ্যতার আদি থেকেই যেদিন পুরুষরা খাদ্য সংগ্রহের জন্য বড় ভূমিকা পালন শুরু করেছে এবং স্বাভাবিক শারীরিক সক্ষমতায় মহিলাদের থেকে বলশালি হিসাবে প্রতিপন্ন করেছে সেদিন থেকে এই সমস্যার শুরু। যদিও, সভ্যতার আদি ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় বরাবরই মহিলারা সভ্যতা এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মূল পরিচালনার দায়িত্বে থেকেছে। কিন্তু, শুধুমাত্র বলশালী হওয়ার ফায়দা তুলে আস্তে আস্তে সভ্যতাটাই হয়ে উঠেছে পুরুষতান্ত্রিক। বর্তমান সময়ে এই মানসিকতার অনেকটা পরিবর্তন ঘটলেও এখনও পুত্র সন্তানের মোহ সমাজ ত্যাগ করতে পারেনি। 


এই পুত্র সন্তানের মোহ কোন পর্যায়ে তারই একটি গল্প শুনিয়েছেন বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া  ব্লগার তথা তরুণী চিকিৎসক তসনিম জারা। ফেসবুকে পোস্ট করা তাঁর একটি ভিডিও-তে তসনিম শুনিয়েছেন সেই ভয়ঙ্কর একটা গল্প, যেখানে পুরুষরা হয় অন্ডকোষ বেঁধে রাখত না হয় একটা অণ্ডকোষ কেটে ফেলত। শুধুমাত্র একটাই তিতিক্ষা যেন পুত্র সন্তান হয়। তসনিম জানিয়েছেন, অতিতকালে ফ্রান্সে পুরুষরা তাঁদের বামদিকের অণ্ডকোষ বেঁধে রাখত। অথবা বাম দিকের অণ্ডকোষ কেটে ফেলত। এখানকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস ছিল এমনটা করলে কোল আলো করে আসবে পুত্র সন্তান। ফ্রান্সের এই সব মানুষদের নাকি বিশ্বাস ছিল পুরুষদের অণ্ডকোষের যেটি বড় আকারের তা পুত্র সন্তান উৎপাদনে সক্ষম। আর বাঁদিকের অণ্ডকোষটা তুলনায় একটু ছোট হয়। তাই ওই অণ্ডকোষ কন্যাসন্তান উৎপাদন করে। 


ফ্রান্সের মানুষদের পুত্র সন্তান পেতে অণ্ডকোষ কেটে ফেলা বা বেঁধে রাখার গল্প নাকি এক বিজ্ঞানী তাঁর বইয়ে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অণ্ডকোষ কেটে ফেলাটা অনেকটা দাঁত তুলে ফেলার মতো। এতে খুব একটা ব্যথা বা প্রাণহানি হওয়ার সম্ভাবনা কম। আর অণ্ডকোষ কেটে ফেলাটাও খুবই একটা সহজ বিষয়। তাই পুত্র সন্তান পাওয়ার লোভে অণ্ডকোষ কেটে ফেলাটা ফ্রান্সের সেই সময়কার পুরুষদের কাছে খুব একটা জটিল কিছু ছিল না।  তবে অনেক সময়ই কিছু পুরুষ অণ্ডকোষ কেটে ফেলতে ভয় পেতেন। এদের জন্য আবার পুত্র সন্তান পেতে একটা টোটকার চল ছিল। আর সেটা হল সহবাসের পর স্ত্রীকে এক কাত করে শুইয়ে রাখা। তসনিম তাঁর ভিডিও ব্লগে জানিয়েছেন, ফ্রান্সের মানুষরা বিশ্বাস করত এইভাবে সহবাসের পর মহিলাকে এক কাত করে শুইয়ে রাখতে পুত্র সন্তান লাভ হবে। ফ্রান্সের মানুষদের নাকি যুক্তি ছিল, মহিলাদের দুটো ডিম্বাশয় থাকে। একটি ডিম্বাশয়ের জন্য কন্যা সন্তান হয় এবং অন্য ডিম্বাশয়ের জন্য পুত্র সন্তান হয়। তাই শরীরের যে দিকের ডিম্বাশয়ের কারণে পুত্র সন্তান হয় সহবাসের পর মহিলাদের সেদিকে কাত করে শুইয়ে রাখা চল ছিল ফ্রান্সে। 


পুত্র সন্তান লাভের এই কাহিনি প্রসঙ্গেই তসনিম তাঁর ব্লগে এনেছেন আরও কিছু তত্ত্ব। যেখানে তিনি সাফ জানিয়েছেন যে, আজকাল অনলাইন অসংখ্য প্রকাশনা থেকে শুরু করে ভিডিও ব্লগেও পুত্র সন্তান পাওয়ার নানা উপায়ের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু, এদের কোনওটারই কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আর এই উপায়গুলি একটা সময় জনপ্রিয় হওয়া কিছু থিওরি- যেমন- বিলিংস, সেটল ইত্যাদি থেকে পরিস্কার অর্থে টুকলি করে নিয়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন একদসল মানুষ। পুত্র সন্তান হওয়ার এই থিওরিগুলো জনপ্রিয় হলেও এগুলোর কোনও বৈজ্ঞানিত বাস্তবসম্মত প্রয়োগ সফল হয়নি বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক তসনিম জারা। তাই অযথা পুত্র সন্তানের মোহে না থেকে সন্তানকে কীভাবে জন্ম দেবেন তা নিয়ে চিন্তা করাটাই শ্রেয়। সুস্থ এবং সবল সন্তানই সকলের কাম্য হওয়া উচিত। ছেলে হোক বা মেয়ে- তাদেরকে সমাজের উপযোগী করে তুলুন উন্নত চিন্তাশীলতা এবং শিক্ষায়। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.