জনপ্রিয় স্মার্টফোনগুলি কি বিকিরণ ছড়ায়?



 ODD বাংলা ডেস্ক: ২১ শতকের নাগরিক জীবনে নিত্যদিনের সাথী আজ স্মার্টফোন। দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব কাজের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এ ডিভাইস। অফিস হোক বা স্কুল, খাবার অর্ডার বা রাইড শেয়ারিং—স্মার্টফোনের ব্যবহার আজকের যুগে এড়িয়ে চলাটাই কঠিন। এর কল্যাণে নানান পরিষেবা ও তথ্য চলে এসেছে হাতের মুঠোয়।


অধিকাংশ ব্যবহারকারী দিনে ৫-৬ ঘণ্টা নানান কাজে স্মার্টফোনে ব্যয় করেন। তবে আমাদের মুঠোফোন নেহাত নিরীহ নয়। নেটওয়ার্ক পরিচালিত হওয়ায় এটি সামান্য পরিমাণে হলেও বিকিরণ (রেডিয়েশন) নিঃসরণ করে। তাই আমরাও দিনের প্রতি ঘণ্টায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বিকিরণের শিকার হচ্ছি। তবে একেক স্মার্টফোন একেক পরিমাণে বিকিরণ নির্গত করে।


জার্মান সরকারের ফেডারেল অফিস অব রেডিয়েশন প্রোটেকশন বাজারে বহুল প্রচলিত স্মার্টফোনের বিকিরণের তথ্য সংগ্রহ করে। সে অনুসারে, জনপ্রিয় কয়েকটি স্মার্টফোনের বিকিরণ তথ্য প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম 'ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট'- যা টিবিএসের পাঠকদের জন্য এখানে তুলা ধরা হলো।


স্মার্টফোনের বিকিরণ ও এসএআর মূল্যায়ন:


স্মার্টফোন হোক বা যেকোনো মুঠোফোন ডিভাইস—সকলেই সামান্য পরিমাণের রেডিও তরঙ্গ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা আরএফ) বিকিরণ নির্গত করে। স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় বা আশেপাশে থাকলেও এই বিকিরণ শোষণ করতে থাকে মানবদেহ।


ফোনের বিকিরণ নিঃসরণ পরিমাপে ব্যবহৃত একটি মাপকাঠি বা সূচক হলো- এসএআর বা স্পেসিফিক অ্যাবজর্বশন রেট। এটি বিকিরণ শোষণের নির্দিষ্ট হারকে বোঝায়। মুঠোফোন ডিভাইস ব্যবহারের সময় আমাদের শরীর যে পরিমাণ বিদ্যুৎচৌম্বকীয় শক্তি শোষণ করে তাকেই এটি প্রকাশ করে।


ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল সকল মুঠোফোনের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোগ্রাম ওজনে ২ ওয়াট বিকিরণের মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে। যা আবার মানবদেহের প্রতি ১০ কিলোগ্রাম টিস্যু বা পেশির শোষণ ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত।


এসএআর মূল্যায়ন ফোন কানে ধরে রাখার সময় বা পকেটে বহন করার সময়—উভয়ের ভিত্তিতে পরিমাপ করা হয়। তবে সহজ রাখার সুবিদার্থে এ নিবন্ধে কেবল প্রথমোক্ত হিসাবটিকেই তুলে ধরা হয়েছে।


সবচেয়ে বেশি মাত্রায় বিকিরণ নিঃসরণকারী স্মার্টফোন কোনগুলো?


মটোরোলা এজ' ফোনটির বিকিরণ নিঃসরণ সবচেয়ে বেশি, যার প্রতি কিলোগ্রামে এসএআর বা সার মূল্যায়ন ১.৭৯ ওয়াট। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত অন্যান্য স্মার্টফোনের তুলনায় এটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি এবং ইউ নির্ধারিত মানদণ্ড সীমার প্রায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের।


দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে জেটিই ব্র্যান্ডের এক্সোন ১১ ৫জি ফোন। এটির রেডিয়েশন কিলোগ্রামপ্রতি ১.৫৯ ওয়াট। কিলোগ্রামে ১.৫৫ ওয়াট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়ানপ্লাস ৬টি। তারপর সনি এক্সপেরিয়ার ১.৪১ এবং গুগল পিক্সেল ৩ এক্সএল আর ৩এ এক্সএল এর বিকিরণ হচ্ছে ১.৩৯ ওয়াট।


প্রথম পাঁচের এই তালিকাসহ সবচেয়ে বিকিরণ সৃষ্টিকারী ১০টি ফোন:


বিকিরণে এগিয়ে থাকাদের কথা তো জানা গেল, এবার আসা যাক সবচেয়ে কম যেসব ফোনের বিকিরণ তাদের প্রসঙ্গে।


সবচেয়ে কম মাত্রায় বিকিরণ নিঃসরণ করে যেসব স্মার্টফোন


সর্বনিম্ন এসএআর (সার) মূল্যায়িত স্মার্টফোনের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে জেটিই ব্লেড ভি১০, এটির প্রতি কিলোগ্রাম বিকিরণ শূন্য দশমিক ১৩ ওয়াট।  


এছাড়া, স্যামসাংয়ের প্রস্তুতকৃত মোবাইল ডিভাইসগুলির বিকিরণ ঝুঁকি অন্যতম কম পর্যায়ের। এই শ্রেণিতে এ কোম্পানির চারটি ফোন বাজার সেরাদের কাতারে রয়েছে। রেডিয়েশন কমের হিসাবে এরমধ্যে আবার সেরা হলো গ্যালাক্সি নোট ১০ প্লাস। এটির বিকিরণ খুবই সামান্য বা দশমিক ১৯ ওয়াট।


সবচেয়ে কম বিকিরণের ১০টি স্মার্টফোন:


মুঠোফোনের রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে এখনঅ তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য গবেষণা প্রকাশিত হয়নি।  


তবে যেহেতু প্রযুক্তি পণ্যটি আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছি, তাই নানান ধরনের ডিভাইসের বিকিরণ মাত্রা জানা খুবই জরুরি। এতে করে আমরা বিকিরণ মাত্রা জেনে, সে অনুযায়ী স্মার্টফোন কেনার সিদ্ধান্তও নিতে পারব। নানান ফিচারের পাশাপাশি কোন ব্র্যান্ডের কোন মডেল দিচ্ছে নিম্ন স্বাস্থ্যঝুঁকির নিশ্চয়তা তা জানাও যাবে এভাবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.