ভাত রান্নার আগে এই নিয়ম মেনে চলুন, তাহলে কোনও দিনও অর্থকষ্টে পড়তে হবে না

 


ODD বাংলা ডেস্ক: হিন্দু বাড়িতে হাঁড়ির ভাত সহজে শেষ হয় না। যাইহোক - আপনি যখন চাল নেন ভাত রান্নার জন্য তখন অবশ্যই মনে করে তিন বার অল্প করে চাল আপনার চালের বাক্স বা বস্তায় রেখে দেবেন। 


শুধু বাঙালি নয় ভারতীয়দের কাছেই চাল মানে লক্ষ্মী। পৌষ পার্বন থেকে শুরু করে বিহু- সব অনুষ্ঠানেই মূলত ধান বা চালের পুজো করা হয়। একটা সময় এই দেশের অর্থকরী ফসল হিসেবেও চালকে গুরুত্ব দেওয়া হত। সেই জন্য অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভারতে প্রত্যেকটি রাজ্যেই চালকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাঙালিরা লক্ষ্মী পুজোর সময় চাল তুলে রেখে তা পুজো করে। অনেকে অবার প্রতি বৃহস্পতিবারই চাল তুলে রেখে। বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে সেই চাল রান্না করে প্রসাদের মত পরিবারের সকল সদস্য তার খায়। 


চাল বা ভাত নিয়ে অনেক মিথ রয়েছে। মহাভারত আর রামায়নেও চালের উল্লেখ ছিল। পৌরানিক প্রবাদ অনুযায়ী মহাভারতে পঞ্চ পাণ্ডব যখন বনবাসে ছিলেন তখন তাঁদের কুটীরে একদল ঋষি এসেছিলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন মুণি দুর্বাসা। তাঁর তেজ আর অভিশাপের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু সেই সময় পাণ্ডবদের খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। দ্রৌপদীর পর্ণকুটীরে আর কিছুই ছিল না ঋষি মুণিদের আতিথেয়তা করার জন্য। কিন্তু ওনারা খাওয়ারের আর্জি জানিয়েছিলেন। মহাবিদপে পড়েন দ্রৌপদী। সেই সময়ই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন দৌপদীর সখা কৃষ্ণ। তিনি পাঞ্চালীর রান্না ঘরে ঢুকে বলেন তাঁর হাঁড়িতে একটাও ভাত রয়েছে কিনা তাই দেখতে। দ্রৌপদী একটি ভাত নিয়ে এসে কৃষ্ণকে দেন। সেই ভাত খেয়ে কৃষ্ণ জল খান। তারপরই শোনা যায় ঋষিদের পেট নাকি এতই ভরে গিয়েছিল তারা না খেয়েই সেখান থেকে চলে যায়। 



যাইহোক কথা হচ্ছিল চালের হাঁড়ি নিয়ে। কিন্তু সেই থেকেই প্রবাদ রয়েছে হিন্দু বাড়িতে হাঁড়ির ভাত সহজে শেষ হয় না। যাইহোক - আপনি যখন চাল নেন ভাত রান্নার জন্য তখন অবশ্যই মনে করে তিন বার অল্প করে চাল আপনার চালের বাক্স বা বস্তায় রেখে দেবেন। চাইলে আদালা হাঁড়িতেও রাখতে পারেন। এরই একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়েছে। হিন্দু রমণীরা প্রাচীনকাল থেকেই সঞ্চয়ি বলে খ্যাতি অর্জন করেছে। এর একটি অর্থ হল হঠাৎ করে বাড়িতে চাল শেষ হয়ে গেলে অপনি সেই সঞ্চয়ের চাল থেকে রান্না করতে পারেন। যাতে আপনার অবস্থা দ্রৌপদীর মত না হয়। কারণ আপনার তো আর সখা কৃষ্ণ নেই!


প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী এর একটি কারণ রয়েছে- এভাবে চাল রাখার বাড়িতে কোনও দিন অর্থের অভাব হয় না। কারণ আপনি যে সঞ্চয়ি তা নাকি বুঝতে পারেন দেবী লক্ষ্ণী। তাই ধনের দেবীর কৃপা সর্বদাই আপনার আর আপনার পরিবারের ওপর থাকে। তাই সর্বদাই চালকে যত্ন করা অত্যান্ত জরুরি। আর এভাবে চাল রাখলে বাড়িতে অর্থ আমদানি হয় বলেও মনে করেন অনেকে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.