মিউট সোয়ান দেখা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দেখা মিলেছে উত্তর আমেরিকার রাজহাঁস প্রজাতির পাখি ‘মিউট সোয়ান (Mute Swan)’। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের টংপুর এলাকায় পাখিটি প্রথমবারের মতো দেখা যায়। কিন্তু তারপরই সেটি হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে বারুইপুরের রামনগর এলাকায় আবারো দেখা মেলে পাখিটির। 

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, প্রথমবারের মতো পাখিটিকে টংপুর এলাকায় দেখা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়লে নতুন এই পাখিটিকে দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। অনেকেই ছবি তোলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বন কর্মকর্তারা। পাখিটিকে যেন কেউ ধরে বা বিরক্ত না করে সে জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু ওই রাতেই পাখিটি হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেটির হদিশ পায়নি বন বিভাগ। 


সেই ঘটনার পর বারুইপুরের রামনগর এলাকায় পাখিটি আবারো দেখা যায়। খবর পেয়ে সেখানেও উপস্থিত হন বন কর্মকতারা। এবার পাখিটিকে তারা আটক করেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন এটি উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের পাখি মিউট সোয়ান। 


বন অধিদফতর গণমাধ্যমকে জানায়, এর আগে ভারতে মাত্র দুইবার গুজরাট ও ওড়িশায় পাখিটির দেখা মিলেছে। এ নিয়ে তৃতীয়বার পাখিটি ভারতে দেখা গেল। 



 রাজহাঁস গোত্রের এই পাখিটি মূলত রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, সাইপ্রাস প্রভৃতি দেশের আবাসিক পাখি। এসব দেশের প্রকৃতিতে এটি পাওয়া যায়। এ ছাড়া এশিয়ার চীন, জাপান ও পাকিস্তানেও পাখিটির দেখা মেলে।


মিউট সোয়ান দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় নিউজিল্যান্ড, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে উন্মুক্ত পরিবেশে পালন করে প্রজনন করানো হয় এবং এসব দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে পাখিটি চমৎকার মানিয়ে নেয়। তাই এই দেশগুলোতেও পাখিটি দেখা যায়। এ কারণে বিভিন্ন দেশের সাফারি পার্ক ও চিড়িয়াখানায় পাখিটিকে প্রদর্শন করা হয়।


মিউট সোয়ান বৃহদাকার একটি জলচর পাখি। আকৃতিতে এরা ৫ থেকে ৮ ফুট পর্যন্ত হয় এবং এদের ওজন ১২ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। চমৎকার ‘S’ আকৃতির গলাযুক্ত এই রাজহাঁসের পাখার প্রসারতা ৮ ফুট পর্যন্ত হয়। ছোট জলজ উদ্ভিদ, পোকামাকড় ও ছোট ছোট মাছ খেয়ে এরা জীবনধারণ করে। জলের নিচ থেকে দ্রুত খাদ্য সংগ্রহ করতে এদের লম্বা গলা খুব সাহায্য করে থাকে।


মিউট সোয়ানরা বুদ্ধিমান কিন্তু কিছুটা আক্রমণাত্মক প্রজাতির। মজার বিষয় হচ্ছে, কেউ তাদের যত্ন করলে বা সাহায্য করলে সেটা তারা মনে রাখতে পারে। এরা সাধারণত বাসা তৈরির সময় আক্রমণ করে, কেউ যদি তাদের বিপদের কারণ হয় তাহলে এরা তাকে কামড়ে দেয়। এই ধরণের রাজহাঁসেরা নিজেদের বাসা, ডিম ও বাচ্চার খুব খেয়াল রাখে। প্রজননের সময় এরা সাধারণত ৫ থেকে ৬ টি ডিম পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.