উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর্টসের ছাত্র-ছাত্রীরা কী কী র্কোস করবেন



ODD বাংলা ডেস্ক: মাধ্যমিক পরীক্ষার পরবর্তীকালে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা সাধারণত তিনটি বিভাগে বিভক্ত যথা- কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ ও বাণিজ্য বিভাগ। যেসব শিক্ষার্থীরা কলা বিভাগ কে বেছে নেয় তাদের সাধারণত আর্টসের স্টুডেন্ট বলা হয়। উচ্চমাধ্যমিকের পর আর্টসের স্টুডেন্টদের চিন্তার বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যে উচ্চমাধ্যমিকের পর তাদের কাছে সেরা ক্যারিয়ার বিকল্প কি হতে পারে। উচ্চমাধ্যমিকের পর কলা বিভাগের বহু শিক্ষার্থীদের মধ্যে যথেষ্ট বিভ্রান্তি দেখা যায়, যে আর্টসের ছাত্র ছাত্রীদের কাছে সেই রকম কোন চমকপ্রদ ভালো কেরিয়ার অপশন থাকে না, কিন্তু  এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা বর্তমান সময়ে আধুনিক যুগের বহু ক্ষেত্রে বিভাগীয় সীমাবদ্ধতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে ফলে আর্টসের ছাত্র-ছাত্রীদেরকাছে বহু উন্নত কেরিয়ার অপশন খুলে যাচ্ছে।      


উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর্টসের  ছাত্র-ছাত্রীরা কী কী র্কোস করতে পারে


১)বিএ ডিগ্রী:- 


উচ্চমাধ্যমিকের পর আর্টসের বেশিরভাগ  ছাত্র-ছাত্রীরাই ব্যাচেলর অফ আর্টস বা বিএ  ডিগ্রী কে ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নেয়। বিএ ডিগ্রী কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায় 


ক) বিএ অনার্স ডিগ্রী 


খ) বিএ পাস ডিগ্রী  


অর্নাস ডিগ্রীর ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করতে হয় নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়াও শিক্ষার্থীদের প্রথম দু'বছর পাশের দুটি বিষয় অধ‍্যায়ন করতে হয়। অপরদিকে পাস কোর্সের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করতে হয়না এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা পছন্দ মত যে কোন তিনটি বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করলে তাদের কাছে (বিভন্ন পরিক্ষা ও যোগ‍্যতার মাধ্যমে) কলেজ ও স্কুল এর শিক্ষাকতার সুযোগ পায়।  পাস কোর্সের শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে  উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করলে (বিভন্ন পরিক্ষা ও যোগ‍্যতার মাধ্যমে) স্কুলে শিক্ষকতার সুযোগ থাকে কিন্তু  এক্ষেত্রে অনার্সের শিক্ষার্থীদের প্রথমে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। শিক্ষকতা ছাড়াও বর্তমান সময়ে বিএ ডিগ্রী প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বহু কেরিয়ার অপশন আছে সেগুলো নিম্নে আলোচনা করা হল।


 ২) ব্যাচেলর অব ফাইন আর্টস :- 


ব্যাচেলর অফ ফাইন আর্টস বর্তমানে এই বিষয়টির জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সময়ে আর্টসের বহু ছাত্র ছাত্রী এই বিষয়টিকে কেরিয়ার অপশন হিসেবে বেছে নিচ্ছে। ফাইন আর্টস এর জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেল ফাইন আর্টস কিন্তু সকল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নয় যে সকল ছাত্র ছাত্রীদের গান,অভিনয়,নাটক ইত্যাদি প্রতি আগ্রহ রয়েছে তাদের জন্য এই ফিল্ডে যথার্থ ক্যারিয়ার রয়েছে। এই ডিগ্রিতে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পছন্দের ফাইন আর্টসের বিষয়টিকে বেছে নিয়ে ক্যারিয়ার গঠন করতে পারে যেমন- নাটক, ফটোগ্রাফি, মিউজিক, প্রিন্টমেকিং, পেইন্টিং ইত্যাদি যেকোনো বিষয়ে ছাত্রছাত্রীরা স্পেশালাইজেশন করতে পারে। কোথায় পড়ানো হয় ফাইন আর্টস? আসুন, দেখে নিন।


১. বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়য়, কলা ভবন

২. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়

৩. রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাস

৪. গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট


৩) জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশন :-


বর্তমান আধুনিক সময়ে এই বিষয়টি চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বর্তমান সময়ে বহু শিক্ষার্থীরা জার্নালিজম মাস কমিউনিকেশন এর উপর তাদের ক্যারিয়ার গঠন করছে শুধুমাত্র ট্র্যাডিশনাল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া নয় বর্তমান সময়ে অনলাইন মিডিয়ার প্রভাব ও যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিজ, রেডিও এন্ড টেলিভিশন প্রোডাকশন, ফিল্ম মেকিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশন এর ওপর ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা করা থাকলে খুবই কার্যকরী। ডিগ্রী কোর্সের ক্ষেত্রে ব্যাচেলর ডিগ্রী পাওয়ার জন্য সময় লাগবে তিন বছর এবং ডিপ্লোমা কোর্সের ক্ষেত্রে সময় লাগবে দু'বছর। কোথায় পড়ানো হয় ? আসুন,জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশন দেখে নিন। 


১. ইন্সটিটিউট অব মাস কমিউনিকেশন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন স্টাডিজ

২. যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

৩. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়


৪) ফ্যাশন ডিজাইনিং:- 


বর্তমান সময় এই বিষয়ের ওপর ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের  ফ্যাশনের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তারা এই কোর্সটি করতে পারে। টেক্সটাইল, প্যাটার্ন মেকিং ফ্যাশন স্টাডিস ইত্যাদি বিষয়গুলো এই র্কোসের মধ্যে শেখানো হয়। এই কোর্সের সময়সীমা ৪ বছর হয়ে থাকে। কোথায় পড়ানো হয় ?  ফ্যাশন ডিজাইনিং দেখে নিন। 


১)শ্রীমতি টেকনো ইনস্টিটিউট

২. গ্ল্যামার স্কুল অব ফ্যাশন অ্যান্ড ইন্টেরিয়র 

৩. রিলায়ান্স এডুকেশন


৫) ডিজিটাল মার্কেটিং :- 


আধুনিকতার পরিবর্তনে বর্তমান সময়ে সবকিছুই ক্রমশ ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে যেমন অনলাইন শপিং,অনলাইন ফুড অর্ডার, এমনকি যাবতীয় বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি উজ্জ্বল কেরিয়ার অপশন হয়ে দাঁড়ায়। যেসব শিক্ষার্থী দের আধুনিক টেকনোলজি, সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর কাজ করতে ভালো লাগে তার ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার অপসান হিসেবে বেছে নিতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ আছে যথা - 

Search Engine Optimisation(SEO),

Search engine marketing(SEM)

Email marketing

Affiliate marketing 

advertisement 

social media marketing etc 


অনলাইন এবং অফলাইন দুইভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা যায় যেসব শিক্ষার্থীরা আগ্রহী তারা অবশ্য ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারো।


হোটেল ম্যানেজমেন্ট :-


হোটেল ম্যানেজমেন্ট আজকের দিনে একটি বিশেষ লাভজনক পেশা হিসেবে গণ্য করা হয় এবং চাকরির বাজারেও এই পেশার খুব ভালো চাহিদা রয়েছে। পর্যটন শিল্পের উন্নতি এবং পাশাপাশি মেডিক্যাল ট্যুরিজম এর নতুন সুযোগ তৈরি হওয়ায় বর্তমানে ছেলে বা মেয়ে নির্বিশেষে প্রচুর ছাত্রছাত্রী হোটেল ম্যানেজমেন্ট কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে। এই বিষয়টির ওপর ডিগ্রী বা ডিপ্লোমা করার নূন্যতম যোগ্যতা হল মাধ্যমিক পাস এছাড়াও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজ থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়া যায়। এই বিষয়ে ডিগ্রী বা ডিপ্লোমাতে ছাত্র-ছাত্রীদের  হোটেল অপারেশন, হাউসকিপিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.