প্রাচীন রেসিপি: চিজ কেকের উৎসর খোঁজে

 


ODD বাংলা ডেস্ক:  খাবারটা প্রাচীন রোমানদের। বেশ সুস্বাদু আর পুষ্টিকর। বানানোও সহজ। হালকা খাবার হিসেবে দারুণ জনপ্রিয় ছিল সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে, বিশেষ করে যখন পোস্তদানা ছিটিয়ে কিউব আকারের টুকরা করে পরিবেশন করা হতো।


প্রাচীন রোমানদের স্যাভিলিয়াম নামের এই খাবার আসলে এক ধরনের চিজ কেক। বিশেষজ্ঞ মত, এটাই আধুনিক মার্কিন কেতার চিজ কেকের পূর্বসূরি।


নরম ফিলাডেলফিয়া পনিরের পরিবর্তে স্যাভিলিয়াম তৈরি হতো সরাসরি রাখালদের কাছ থেকে পাওয়া টাটকা ছাগলের দুধে বানানো রিকোত্তা দিয়ে। ক্রীতদাস থেকে শুরু করে সেনা আর অভিজাত সবাই এর ভক্ত ছিল তখন।


ইতিহাসের প্রথম যে রেসিপি আধুনিককালের চিজ কেকের মতোই একটি সুস্বাদু খাবার তৈরির বিবরণ দেয়, তা খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর। অর্থাৎ কিনা আজ থেকে পাক্কা দুই হজার ৩০০ বছরেরও বেশি আগের। একজন বিশিষ্ট প্রাচীন রোমান সিনেটর, সেনাবাহিনীর জেনারেল তথা ইতিহাসবিদ লিখেছিলেন সেই রেসিপি। তিনি পরিচিত ‘কাতো দি এল্ডার’ নামে। কাতো দি এল্ডার শুধু এক মহান লেখক আর দার্শনিকই ছিলেন না, ছিলেন ভোজনরসিক এবং গ্রামীণ ঐতিহ্য ও খাবারের সমর্থকও, বলেছেন প্রাচীন রোমের খাদ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং ‘ডাইনিং উইথ দি অ্যাংশান্ট রোমান’ বইয়ের লেখক জর্জিও ফ্রাঞ্চেত্তি।


ফ্রাঞ্চেত্তি বলেছেন, কাতো তাঁর প্রিয় কেকের রেসিপিটি লিখে রেখেছিলেন। সেটি হচ্ছে স্যাভিলিয়াম। কাতোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রচনা ‘ডি অ্যাগ্রি কালচারা’ গ্রন্থে এটি ছিল। সিএনএনকে ফ্রাঞ্চেত্তি বলেন, সে যুগের রোমানদের ঘরে ঘরে খুব জনপ্রিয় বই ছিল ‘ডি অ্যাগ্রি কালচারা’।


ফ্রাঞ্চেত্তি বলেছেন, এই জনপ্রিয় ডেজার্টের জন্ম ঘিরে রয়েছে অনেক কিংবদন্তি আর গল্প। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শুধু এর রোমান শিকড়ের দাবিটাই যুক্তিসংগত।


রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তারের বদৌলতে স্যাভিলিয়াম বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। একসময় তা ইংল্যান্ডে এসে পৌঁছায় এবং তার কয়েক শতাব্দী পরে আবির্ভূত হয় ‘নিউ ওয়ার্ল্ড’ আমেরিকা মহাদেশে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয় কেকটি আর নেয় স্থানীয় রূপ, স্বাদ ও গন্ধ।


‘স্যাভিলিয়ামের পা ছিল অনেক লম্বা। সেই পায়ে এটি ঘুরে বেড়িয়েছে সারা বিশ্ব,’ বলেন অনেক প্রাচীন রোমান রেসিপির আবিষ্কারক ফ্রাঞ্চেত্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোমানরা তাদের রান্না ও খাদ্য প্রস্তুতের কৌশল নিখুঁত করে তুলেছিল। রোমানরা সেই কৌশল ধীরে ধীরে তাদের উপনিবেশে নিয়ে যায়, যা কিনা ছড়িয়ে ছিল মধ্যপ্রাচ্য থেকে ব্রিটানিয়া পর্যন্ত।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.