কলেজে চালু হচ্ছে পর্নোগ্রাফি কোর্স; ৩০০০ পর্ন ভিডিও দেখতে হবে শিক্ষার্থীদের

ODD বাংলা ডেস্ক: সমালোচনা উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা রাজ্যের ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজে চালু হচ্ছে পর্নোগ্রাফি ক্লাস । আগামী মে সেশন থেকেই পাঠ্যসূচিতে যুক্ত হচ্ছে কোর্সটি। প্রতি স্প্রিং সেশনে শিক্ষার্থীদের স্বল্পমেয়াদি কিছু কোর্স অফার করে থাকে ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজ কর্তৃপক্ষ। মূল কোর্সের ক্রেডিট পূরণে শিক্ষার্থীদের এসব কোর্স নিতে হয়।

ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা শিলা ইয়র্কিন বলেন, ‘পিছিয়ে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। আমরা অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’

সল্টলেক সিটির ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজের সুনাম দীর্ঘদিনের। বেসরকারি এই লিবারেল আর্ট কলেজটি একটি অলাভজনক এবং স্বীকৃত শিক্ষাকেন্দ্র।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে টুইটে পর্নোগ্রাফি কোর্সের কথা জানান টক শো হোস্ট এবং অ্যাক্টিভিস্ট ক্যানডেস ওয়েনস। এর পর থেকেই কলেজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ফোনে আক্রমণাত্মক বার্তা আসতে থাকে। এমনকি কলেজের কিছু কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্যও প্রচার করতে থাকেন সমালোচকরা।

টুইটার হ্যান্ডেলে ক্যানডেস ওয়েনসের অনুসারী ৩০ লাখের বেশি। রক্ষণশীল ওয়েনস টুইটে লেখেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এটি রসিকতা, কিন্তু আসলে তা না। সল্টলেক সিটির ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজে পর্নোগ্রাফি ক্লাসে আপনি ভর্তি হতে পারেন। ক্লাসের বিবরণে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে পর্ন সিনেমা দেখবে, যৌনতা নিয়ে আলোচনা করবে। এটা অনেকটা শিল্পের মতো।

ইয়র্কিন বলেন, ‘প্রশিক্ষিত একজন পিএইচডিধারী ক্লাসটি নেবেন। শিক্ষার্থীরা যদি অস্বস্তি বোধ করেন অথবা ক্লাসরুম ছেড়ে যেতে চান, তবে তাদের বাধা দেয়া হবে না। অ্যাকাডেমিক কোনো শাস্তিও নেই।’

এখন পর্যন্ত ১৮ বছরের বেশি বয়সী ১৪ শিক্ষার্থী এই কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। সিনেমা দেখা, বিশ্লেষণ, কথোপকথন এবং পর্যবেক্ষণ থাকছে এই কোর্সে।

কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আইলিন চ্যানজা টোরেস নেবেন কোর্সটি। তিনি জানান, ৯ বছর ধরে ওয়েস্টমিনিস্টারে তিনি পড়াচ্ছেন। আগেও এমন কোর্স তিনি করিয়েছেন।

টোরেস বলেন, ‘যখন থেকে এখানে পড়ানো শুরু করি, তখন থেকেই যৌনতাবিষয়ক কোর্সগুলো নিচ্ছি। আমি অবাক হই এটা কীভাবে ছড়িয়ে পড়ল। কারণ এটা কখনই চাপা ছিল না।’

পর্নোগ্রাফি কোর্সটি চার সপ্তাহ চলবে। সপ্তাহে দুবার তিন ঘণ্টা করে ক্লাস হবে।

টোরেস বলেন, ‘বসে বসে পর্ন দেখে শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যাবেন, বিষয়টা আসলে তেমন না। এখানে সক্রিয় আলাপ-আলোচনা আছে। পর্নোগ্রাফি সিনেমার ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হবে। প্রযুক্তির পাশাপাশি পর্নোগ্রাফি কীভাবে বিকশিত হচ্ছে, তা নিয়েও কথাবার্তা হবে।

‘অনেকেই উদ্বেগ জানাচ্ছেন। ওনারা ভাবছেন এই কোর্স নিতে বাধ্য করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আপনাদের জানাতে চাই, এসব মোটেও সত্য নয়। আপনি আমাকে না দেখেই ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজ থেকে স্নাতক হতে পারেন। কেউ আমার সঙ্গে ক্লাস নিতে বাধ্য না।’

ক্লাসটি সবার জন্য নয় জানিয়ে টোরেস বলেন, ‘কোর্সের কনটেন্ট অত্যন্ত রগরগে। ক্লাসে ধর্ষণের প্রবণতা এবং হিংসাত্মক পর্নোগ্রাফির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।’

পর্নোগ্রাফি নিয়ে খোলামেলা আলোচনার জন্য একটি নিরাপদ স্থান গড়ে তোলাই লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন আইলিন চ্যানজা টরেস।

তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় শিক্ষার্থীদের বলি, যাদের অস্বস্তি হবে তারা চাইলেই কোর্স ড্রপ করতে পারবেন। আপনাদের কেউ কিছুই বলবে না। আগে কোনো শিক্ষার্থীকে এটা করতে দেখা যায়নি।’

ওয়েস্টমিনিস্টারে অনেক সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছেন। তাদের পটভূমি ও দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। রক্ষণশীল পরিবারের টরেস নিজেও ক্যাথলিক চার্চে বেড়ে উঠেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা লিঙ্গ, যৌন এবং যৌনতার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে অনেক কোর্স নিই। তবে এটি নিশ্চিত, ক্যাম্পাসে আমাদের রক্ষণশীল মানুষ আছেন, যারা কোর্সটি নিয়ে খুশি নন।’

টরেস বলেন, ‘অনেক অ্যাকাডেমিস নানা উপায়ে শিক্ষার্থীদের যৌনতা পড়িয়ে আসছেন। এমন পরিস্থিতিতে এই কোর্স নিয়ে আপত্তি সত্যিই আমাকে অবাক করেছে। যৌনতা নিয়ে আলোচনা কখনই সবাই পছন্দ করত না। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই আপত্তি অস্বস্তিকর।’

কলেজের অনলাইন ক্যাটালগ থেকে ফিল্ম-৩০০০ পর্ন কোর্সের বিবরণ:

“অ্যাপল পাইয়ের মতো হার্ডকোর পর্নোগ্রাফি রোববার রাতের ফুটবল ম্যাচের চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। বিলিয়ন ডলারের এই শিল্পের সহায়তায় আমরা যৌনতাবিষয়ক ট্যাবু থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব। আমরা একসঙ্গে পর্নোগ্রাফিক সিনেমা দেখব। জাতি, শ্রেণি এবং লিঙ্গের যৌনতা নিয়ে আলোচনা করব।”

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.