প্রবল গরমে যাত্রীদের স্বস্তি দিতে ‘চলন্ত বাগান’ নিয়ে ঘুরছেন এই অটোচালক


ODD বাংলা ডেস্ক: নয়াদিল্লিতে রাস্তায় দেদার চলছে হলুদ-সবুজ রঙের অটোরিকশা। কিন্তু এর মাঝে মহেন্দ্র কুমারের গাড়িটি দেখলে আর একবার ফিরে তাকাতে হয়। কারণ, এ যেন এক ‘চলন্ত বাগান’। তাঁর গাড়ির ছাদে তিনি তৈরি করেছেন একফালি বাগান। উদ্দেশ্য কাঠফাটা গ্রীষ্মে চলার পথে যাত্রীদের একটু স্বস্তি দেওয়া। 

মহেন্দ্র বলেন, যখন রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠে, ওই সময় এই সবুজ ছাদ গাড়িটিকে ঠান্ডা রাখে। ৪৮ বছর বয়সী মহেন্দ্র গাড়ির ছাদে ২০টির বেশি জাতের শস্য এবং ফুলের চারা লাগিয়েছেন। এই চলন্ত বাগান যাত্রী ও পথচারীদের কাছে আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। চলার পথে থেমে অনেকে সেলফি ও ছবি তোলেন। 

মহেন্দ্র বলেন, ‘প্রায় দুই বছর আগে গ্রীষ্মকালের চরম গরমে আমার মাথায় এই বাগানের পরিকল্পনা আসে। আমি ভাবলাম যদি আমি ছাদে কিছু গাছ লাগাতে পারি, তাহলে এটি আমার গাড়িকে ঠান্ডা রাখবে এবং আমার যাত্রীদের গরম থেকে স্বস্তি দেবে।’ এই চালক তাঁর গাড়ির ভেতর দুটি ছোট আকৃতির কুলার ও পাখা রেখেছেন।তিন সন্তানের বাবা মহেন্দ্র আরও বলেন, ‘এটি এখন প্রাকৃতিক শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের মতো। আমার গাড়িতে চড়া যাত্রীরা বেশ আরাম পায়। অনেকে আবার খুশি হয়ে ১০-২০ টাসা বেশিও দেয়।’ দেশের উত্তরাংশে তীব্র দাবদাহ চলছে গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল দিল্লিতে ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ১২ বছরে দিল্লিতে এপ্রিল মাসে রেকর্ড গরম পড়েছে।

মহেন্দ্র বলেন, তিনি তাঁর অটোরিকশায় লেটুস, টমেটো এবং ঘাসজাতীয় দানাদার শস্য বাজরা রোপণ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি পরিবেশের জন্য সামান্য কিছু করছেন বলে মনে করেন। তবে  গাছের চারা রোপণের জন্য ছাদ প্রস্তুত করতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি মহেন্দ্রকে। তিনি প্রথমে ছাদে একটি মাদুর, তার ওপর মোটা বস্তা রেখে মাটি ছড়িয়ে দেন। এরপর পাশ থেকে ঘাস এবং বন্ধু ও পরিচিতদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে বপন করেন। কয়েক দিনের মধ্যে বীজগুলো সবুজ অঙ্কুরে অঙ্কুরিত হয়। কুমার বলেন, ‘এই বাগানের পেছনে আমাকে তেমন কষ্ট করতে হয় না। আমি শুধু বোতলে করে দিনে দুবার জল দিই। ’মহেন্দ্রের এই উদ্যোগ অন্য চালকদের জন্য এখন অনুপ্রেরণা। তাঁরা এখন তাঁর কাছ থেকে নানা পরামর্শ চান।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.