চাঁদের মাটিতে গাছ লাগালেন বিজ্ঞানীরা! এবার হবে চাষাবাদ?


ODD বাংলা ডেস্ক: চাঁদে ছেয়ে গেছে সবুজ গাছপালা, ফলছে নানা শস্য, শাকসবজি। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও বিজ্ঞানীরা কিন্তু এই পথেই হাঁটছেন। সেই চেষ্টায় সফলও তাঁরা। চাঁদ থেকে আনা মাটিতে প্রথমবারের মতো সফলভাবে গাছ জন্মিয়েছেন তাঁরা। গত শতকে আমেরিকার চন্দ্রাভিযানের সময় ওই মাটি পৃথিবীতে আনা হয়েছিল।

গাছ জন্মানোর পেছনে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। এ নিয়ে তাঁদের গবেষণাপত্রটি গত বৃহস্পতিবার জীববিজ্ঞানবিষয়ক আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন কমিউনিকেশনস বায়োলজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। 

গবেষকদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার সায়েন্সের (আইএফএএস) অধ্যাপক রব ফেরল। তাঁর মতে, আগামী দিনগুলোতে মহাকাশে বড় পরিসরে অভিযান চালাবে মানুষ। এ সময় চাঁদকে মহাকাশযান উৎক্ষেপণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। ফলে অক্সিজেন ও খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সেখানে গাছপালা লাগানোর প্রয়োজন পড়তে পারে।

এমন ভাবনা থেকেই চাঁদের মাটিতে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতোই কাজে নেমে পড়েন রব ফেরল। সঙ্গে ছিলেন আইএফএএসের আর এক অধ্যাপক অ্যানা লিসা পলসহ কয়েকজন। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কাছে সংরক্ষিত চাঁদের মাটি পেতে আবেদন করেন তাঁরা। গত শতকে নাসার অ্যাপোলো ১১, ১২ ও ১৭ অভিযানের সময় চাঁদ থেকে ওই মাটি সংগ্রহ করা হয়।

চাঁদের মাটি পেতে গবেষকেরা নাসার কাছে আবেদন করেছিলেন ১১ বছর আগে। অবশেষে বছর দেড়েক আগে মাটি দিতে রাজি হয় সংস্থাটি। তা-ও মাত্র ১২ গ্রাম মাটি পাঠানো হয়। অল্প এই মাটি নিয়েই কাজে লেগে পড়েন গবেষকেরা। তাতে মেশানো হয় জল আর বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। এরপর সেই মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয় ‘থ্যাল ক্রেস’ নামের একটি গাছের বীজ। ছোট আকৃতির এই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘আরাবিডোপসিস থালিয়ানা।’

এত প্রচেষ্টার পরও চাঁদের মাটিতে গাছ জন্মাবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে ছিলেন গবেষকেরা। তবে সব আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ করে প্রায় সব কটি বীজ থেকে চারা বের হয়। অ্যানা বলেন, ‘আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। এমনটি হবে তা ভাবিনি। এর অর্থ, চাঁদের মাটিতে গাছ হওয়া সম্ভব।’

তবে সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমস্যাও গবেষকদের নজরে আসে। জন্ম নেওয়া চারাগাছগুলোর কয়েকটি আকারে ছোট, আর বেড়ে উঠতে অন্যগুলোর চেয়ে বেশি সময় নিচ্ছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.