শিপসহেড র্যাস: ১০ বছর বয়সেই নারী থেকে পুরুষ হয়
ODD বাংলা ডেস্ক: পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণী নারী অথবা পুরুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করে। সাধারণত পুরুষরা সারাজীবন পুরুষ এবং নারীরা নারী হয়েই জীবন অতিবাহিত করে। তবে কিছু প্রজাতির মাছের ক্ষেত্রে প্রকৃতির এই সাধারণ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। এদের মধ্যে এশিয়ান শিপসহেড র্যাস নামক একটি মাছ অন্যতম।
প্রজাতিটির পুরুষদের শারীরিক গড়ন নারী মাছদের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন। লম্বা চোয়াল আর ফোলানো মাথা এদেরকে এক এলিয়েন সদৃশ অবয়ব দান করেছে। নারীরা অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের এবং শারীরিক গড়ন অনেকটা সাধারণ মাছের মতোই। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, প্রতিটি পুরুষের উত্থান ঘটে এই নারী মাছ থেকেই। তবে বিস্ময়কর পরিবর্তনটি কীভাবে সম্পন্ন হয়?
কোরিয়ান উপদ্বীপ, চীন ও জাপানের তীরবর্তী অঞ্চলে মাছটির ব্যাপক বিচরণ রয়েছে। জাপানে এরা কবুডাই নামে পরিচিত। মাছটি লম্বায় হতে পারে এক মিটার পর্যন্ত এবং ওজনে ১৫ কেজি। কোরালযুক্ত সামুদ্রিক জঙ্গল এদের প্রিয় বাসস্থান। গ্রীষ্মের তাপমাত্রা চ্রমে পৌঁছালে, কবুডাইরা প্রজননে মেতে ওঠে। প্রতিটি পুরুষ মাছ একটি নির্দিষ্ট এলাকা দখল করে রাখে। দখলকৃত এলাকার প্রতিটি নারী মাছই তার অনুগত।
পুরুষ মাছটি তার হেরেমের সব নারীর সঙ্গেই মিলনের সুযোগ পায়। তবে কোনো নারী মাছের বয়স যখন ১০ বছরের কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন সে মিলনে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ এই সময় তার দেহে এক নাটকীয় পরিবর্তন শুরু হয়। দেহে নারী হরমোনগুলোন নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায় এবং পুরুষ হরমোনের সঞ্চালন শুরু হয়। কয়েক মাসের মধ্যেই তার মাথা এবং থুতনি ফুলে ওঠে।
নারী মাছটি পরিণত হয় এক দাপুটে পুরুষ। এই পরিবর্তন কবুডাই রাজ্যে এক মল্লযুদ্ধের সুচনা করে। নতুন পুরুষ বয়স্ক পুরুষটির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কারণ একটি অঞ্চলে শুধুমাত্র একজন পুরুষই রাজত্ব করতে পারে। মাথা যত বড়, প্রতিপক্ষকে ভয় দেখানো তত সহজ। সম্মুখযুদ্ধে জয়-পরাজয়ের মধ্যে দিয়েই রাজ্যের অধিপতি নির্ধারিত হয়। সব অধিকার ছেড়ে পরাজিত পুরুষ প্রস্থান করে।
তবে এখানে কোনো পুরুষেরই ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত নয়। কারণ প্রতিজন নারীর অভ্যন্তরেই একজন দাপুটে পুরুষের বসবাস। সময়ের পরিক্রমায় যার আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং কবুডাই রাজ্যে আসে নতুন অধিপতি।
Post a Comment