রোগা মেয়েদের কি পিসিওএস হওয়ার আশঙ্কা থাকে না? এই রোগ নিয়ে কী কী বিভ্রান্তি রয়েছে
ODD বাংলা ডেস্ক: অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, মুখে লোমের আধিক্য, ত্বকে ব্রণর হামলা— উপসর্গগুলি মোটামুটি চেনা। কারণ একটা বয়সের পর প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জন মহিলাই আক্রান্ত এই অসুখে। এর পোশাকি নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস। এই অসুখে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখার একমাত্র উপায় সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা। এই রোগ নিয়ে বহু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
ডিম্বাশয়ে সিস্ট থাকলেই পিসিওএস-এর লক্ষণ
এই রোগে আক্রান্ত হলে মহিলাদের ডিম্বাণু উৎপাদনে সমস্যা হয়। অনেকের ক্ষেত্রেই ডিম্বাশয়ের বাইরে ছোট ছোট সিস্ট দেখা যায়। তবে আলট্রাসাউন্ড করিয়ে যদি দেখেন ডিম্বাশয়ের বাইরে কোনও রকম সিস্ট নেই, তার মানে এই নয় যে আপনার শরীরে এই রোগ বাসা বাঁধেনি। আবার ডিম্বাশয়ে কোনও সিস্ট থাকা মানেই যে সেটা পিসিওএস-এর লক্ষণ— এমনটাও নয়। বিভিন্ন কারণেই সিস্ট হতে পারে।
গর্ভধারণে ঝুঁকি
এই রোগের মূল সমস্যা ডিম্বাণু উৎপাদন না হওয়া, তাই অনেক মহিলাই আতঙ্কে থাকেন যে তাঁদের গর্ভধারণে সমস্যা হবে। কিন্তু এই ধারণা কিন্তু সঠিক নয়। পিসিওএস থাকা সত্ত্বেও বহু মেয়েই স্বাভাবিক নিয়মে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকেন।
শরীরে অবাঞ্ছিত লোম থাকবে
যেহেতু পিসিওএস থাকলে মেয়েদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়, তাই অনেকের পেটের চারপাশে, ঠোঁটের উপরে, থুতনি বা বুকে অত্যধিক লোম থাকতে পারে। তবে সব মেয়েরই একই লক্ষণ থাকে না। এমন বহু মেয়ে রয়েছেন, যাঁদের পিসিওএস থাকা সত্ত্বেও শরীরের লোমের আধিক্য নেই।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব মানেই পিসিওএস
এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। মানসিক চাপ, জরায়ুতে ফাইব্রয়েড, শ্রোণিতে কোনও রকম প্রদাহ, থাইরয়েডের সমস্যা, কড়া ডায়েটিং বা এক্সারসাইজ, হরমোনের তারতম্য— বিভিন্ন কারণে মেয়েদের ঋতুস্রাব অনিয়মিত হতে পারে। এর জন্য কেবল পিসিওএস দায়ী নয়।
পিসিওএস থাকা মানেই মেয়েরা মোটা হবে
হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বেশির ভাগ মেয়ের ক্ষেত্রে এই রোগ থাকলে ওজন ঝরানো মুশকিল হয়ে পড়ে। অনেকের ক্ষেত্রেই আবার ওজন অনিয়ন্ত্রিত হারে বাড়তে থাকে। পিসিওএস থাকলে মেয়েদের মধ্যে স্থূলতা দেখা যায় ঠিকই। তবে এমন অনেক মেয়ে রয়েছেন, যাঁদের এই রোগ থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওষুধ খেলে পিসিওএস সারানো যায়
পিসিওএস এর ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যে সব ওষুধ দেন তাতে এই রোগের উপসর্গ যেমন অনিয়মিত ঋতুস্রাব, বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তবে এই রোগ কেবল জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে তবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই রোগের সঙ্গে মোকবিলা করা যায়।
Post a Comment