মঙ্গলাবাস: পুরনো প্রাসাদের কান্না!

ODD বাংলা ডেস্ক: ঢাকা শহরের অলি-গলি সবই চেনেন রিকশাওয়ালারা। জাদুর শহর ঢাকার অফলাইন গুগল ম্যাপ হচ্ছে প্রতিটি রিকশাওয়ালার মগজ। এগলি থেকে ওগলি—সব রাস্তাই যেন তাদের মুখস্ত। তবে একটি প্রশ্নের উত্তরে তাদের হারাতে পারেন আপনি। জিজ্ঞেস করবেন- ‘‘মামা, মঙ্গলাবাস যাবা?’’ আমার বিশ্বাস ৯৯.৯৯ শতাংশ রিকশাচালক এ উত্তর দিতে পারবে না বা চেনে না!
এমনকি গুগল ম্যাপসেও এই নামের কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ ভবনটির রয়েছে শত শত বছরের ইতিহাস। মঙ্গলাবাস—নামটি হারিয়ে গেছে বলা চলে। নতুন নাম পেয়ে হারিয়ে গেছে প্রকৃত নাম! শতবর্ষী জরাজীর্ণ ভবনটি এখন কেবলই পুরান ঢাকার একটি কলেজের ছাত্রাবাস (কবি নজরুল সরকারি কলেজের শহিদ শামসুল আলম ছাত্রাবাস)। ভবনটির পুরোনো ইটের তলায় চাপা পড়ে আছে কতই না আনন্দ-বেদনার কাব্য!

ভবনটিকে অনেকেই ‌‘মঙ্গল নিবাস’ও বলে থাকেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়িটিকে ‘জমিদারের বাড়ি’ নামেই জানেন। নাম বলতে পারলেও কারোই কিন্তু ইতিহাস জানা নেই! অথচ এ বাড়ির মালিক ছিলেন সেকালের বেশ আমুদে লোক!

জমিদার যতিন্দ্র কুমার সাহার শতবর্ষী এই রাজকীয় বাড়িতে থাকতেন খুবই কম। কারণ তার জমিদারি ছিল ঢাকার বাইরে। প্রাসাদটি নির্মাণের সঠিক কোনো তারিখও কোনো জায়গায় লিপিবদ্ধ নেই। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, উনিশ শতকের শেষের দিকে নির্মিত হতে পারে।

৪৭’এর দেশভাগের সময় সম্পত্তি বদল করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু যতীন্দ্র কুমার সাহা প্রাসাদ ফেলে চলে যান কলকাতায়। এরপর দুই বার নাম পরিবর্তন হয় প্রাসাদটির। ৭১’সালের আগে ‘শত্রু-সম্পত্তি’, এরপর ‘অর্পিত সম্পত্তি’। বর্তমানে এটি ‘শহিদ শামসুল আলম ছাত্রাবাস’।

এটা ৩নং মোহনি মোহন দাস লেন, শ্যামবাজার, সুত্রাপুর থানার নিকটে অবস্থিত। এটি এখন কবি নজরুলের হোস্টেল নামেই পরিচিত। হোস্টেলে রয়েছে ডাইনিং; এটা দুই তলা বিশিষ্ট। এখানে ১২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ডাইনিং এর ব্যবস্থা করা হয়।

শুটিং স্পট হিসেবেও এই ছাত্রাবাসকে ব্যবহার করা হয়। অনেক নাটক, সিনেমা ও মিউজিক ভিডিওতে পুরান ঢাকার এই হলটি ব্যবহৃত হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.