রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠন থেকে ক্যান্সার দূর হবে সয়া স্যসের গুণে, রইল গুণের খোঁজ

 


ODD বাংলা ডেস্ক:  খাবারের স্বাদ বাড়াতে কিংবা নিত্য নতুন রেসিপি ট্রাই করতে আমরা সকলেই সয়া স্যস ব্যবহার করে থাকি। মাংসের পদ রাঁধতে কিংবা সুস্বাদু চাইনিজ বানাতে, এই সসের ভূমিকা অনস্বীকার্য। স্যুপ তৈরিতে, সালাদে, এমনকী যে কোনও আমিশ ও নিরামিশ পদ রাঁধতে ব্যবহার করা হয় এই স্যস। শুধু স্বাদে নয়, গুণেও সকলকে টেক্কা দিয়েছে সয়া স্যস।  ১০০ গ্রাম সয়া স্যসে ভিটামিন বি ৩ থাকে ২০ শতাংশ, ভিটামিন বি ৬ থাকে ১০ শতাংশ, ভিটামিন বি ২ থাকে ৯ শতাংশ, ভিটামিন বি ৯ থাকে ৫ শতাংশ, ভিটামিন বি ১ থাকে ৪ শতাংশ। অন্যদিকে, সোডিয়াম থাকে ২৩ শতাংশ, ম্যাঙ্গানিজ থাকে ২৫ শতাংশ, আয়রন থাকে ১৩ শতাংশ, ফসফরাস থাকে ১৩ শতাংশ, ম্যাগনেশিয়াম থাকে ১০ শতাংশ। আজ জেনে নিন এই স্যসের উপকারীতা। 


কোলেস্টেরলের রোগীরা খেতে পারেন সয় স্যস। বর্তমানে একের পর এক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সকলে। হার্ট, প্রেসার থেকে শুরু করে সুগার। কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে অনেকের শরীরে। কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকে সয়া স্যসের গুণে। এটি রক্তনালীর দেওয়াল পরিষ্কার করে ও রক্তচাপ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে খেতে পারেন সয়া স্যসের তৈরি পদ। 


অল্প বয়সেরই দেখা দিচ্ছে লিভারের রোগ। পেটের সমস্যায় ভুগছেন অনেকে। এর প্রভাবে সারাক্ষণ দূর্বল ভাব, পেটের সমস্যা, ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন সায় স্যসের গুণে। সয়া স্যসে থাকা একাধিক উপাদান লিভাকরে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। 


ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারেন সয়া স্যাস। সয়া স্যসে থাকা জেনিস্টাইন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাস করে। বর্তমানে বহু মানুষ ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগকে সাইলেন্ট কিলার বলা হয়। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে একে একে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। তাই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে খেতে পারেন সয়া স্যস। 


ত্বকের জন্য উপকারী এই স্যস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা নিয়মিত সয়া স্যস খান, তারা ত্বক নিয়ে কম সমস্যায় ভোগেন। এতে থাকে জেনিসটিন নামক উপাদান। জেনিসটিন প্রতিদিন গ্রহণের জন্য ত্বকের সমস্যা হ্রাস পায়। ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখতে চাইলে শুধু নিত্য নতু প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে হবে না। সঙ্গে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যভ্যাস। 


সয়া স্যসে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলো শরীরকে শক্তিশালী করে। এতে থাকে আইসোফ্লাভোন। এই আইসোফ্লাভোনগুলো টেস্টিকুলার ও প্রোস্টেট ক্যান্সার সেলের বিকাশ হতে দেয় না। তাই যারা নিয়মিত সয়া স্যসে তৈরি পদ খান, তাদের শরীরে ক্যান্সার রোগের ঝুঁকি কম হয়। তাই ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চাইলে নিজের বদ অভ্যেসগুলো যেমন পরিবর্তন করবেন, তেমনই বদল করুন খাদ্যাভ্যাস। 


হাড়ের জন্য বেশ উপকারী হল সয়া স্যস। মনেপোজের সময় মহিলাদের হাড় থেকে ক্যালসিয়াম কমতে থাকে। এই কারণে হাড় ভঙ্গুর, গাঁটে ব্যথার মতো সমস্যায় ভোগেন সকলে। এর থেকে মুক্তি পেতে সয়া স্যস দিয়ে পদ রাঁধতে পারেন। এটি হাড় শক্ত করতে উপকারী। এই স্যসের প্রভাবে যেমন মহিলা সুস্থ থাকেন, তেমনই সকলেই সুস্থ থাকেন সয়া স্যস খেলে। 


হজম ক্ষমতা উন্নত হবে সয়া স্যস খেলে। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এতে থাক অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে থাকে। তাই যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত এই স্যসের তৈরি পদ খান। রোজ ৪০ মিলিগ্রাম সয়া স্যস গ্রহণ করা শরীরের জন্য ভালো। 


শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াকে খেতে পারেন সয়া স্যস। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সয়া স্যস ইমিউনোগ্লোবিউলিন এ উৎপাদন বাড়ায়। এই ভিটামিন শরীরে অ্যান্টি বডি তৈরি করে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। তাই যে কোনও রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাইলে খেতে পারেন সয়া স্যস। এই স্যস দিয়ে যে কোনও পদ রাধতে পারেন। 


হার্ট ভালো থাকে সয়া স্যস খেলে। সয়া প্রোটিন আইসোফ্লাভোনস পোস্টমেনোপসাল মহিলাদের মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। রোজ ৬০ মিলিগ্রাম করে সয়া স্যস খাওয়া উপকারী। প্রতিদিন এই স্যয় দিয়ে তৈরি একটি করে পদ রাঁধতে পারেন। এতে উপকার পাবেন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সয়া স্যস খেতে পারেন। 


তবে, ৫ বছরের নিচে বাচ্চাকে সয়া স্যস খাওয়াবেন না।। এতে এমন কিছু উপাদান আছে, যা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। তেমনই অধিক সয়া স্যস খেলে অন্ত্রে রোগ হয়। সঙ্গ হতে পারে অ্যালার্জি। অকাল গর্ভপাতের কারণ হতে পারে সয়া স্যস। তাই সয়া স্যস কেনার আগে দেখে নিন এর উপাদান গুলো। আর অবশ্যই ভালো কোম্পানির সয়া স্যস কিনবেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.