শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে প্রয়োজন পর্যাপ্ত আয়রন, খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত আয়রন আছে তো?



 ODD বাংলা ডেস্ক: বুদ্ধি ও দৈহিক বিকাশ ঘটাতে প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি। আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করলে তবেই শরীর সুস্থ থাকা সম্ভব। এই সকল পুষ্টি খাদ্যগুণ থেকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। আজ তথ্য রইল আয়রন নিয়ে। বাচ্চাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। আজ জেনে নিন কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন। আর বাচ্চার আয়রনের ঘাটতি পূরণের জন্য কী-ই বা করবেন। খাদ্যতালিকায় কোন ধরনের খাবার যোগ করলে আয়রনে ঘাটতি পূরণ হয়। রইল এমন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।  


আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে গুকুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। তাই আয়রনের অভাব হলে শিশুর স্নায়ুবিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে না। শরীরে প্রয়োজনের তুলনা. আয়রন কম থাকলে একাধিক রোগ শরীরে বাসা বাধতে পারে। সবার আগে দেখা দেয় রক্তশূণ্যতা। আয়রনের অভাব রক্ত শূণ্যকার প্রধান কারণ। 


শরীরে আয়রনের অভাব ঘটেতে এটা বোঝা একটু হলেও কঠিন। রক্তশূণ্যতা, ক্লান্তি, অবসাদ ও খিদে না পাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে আয়রনের ঘাটতি হলে। একটু কাজ করেই বাচ্চা যদি হাঁপিয়ে যান তাহলে সতর্ক হন। আয়রনের অভাব হলে এমন লক্ষণ দেখা দেয়।


বাচ্চার হাত- পা যদি বেশির ভাগ সময় ঠান্ডা থাকে, কিংবা চামড়া ফেকাশে হয়ে যায়, তাহলে ডাক্তারি পরামর্শ নিন। আয়রনের অভাবে এমন হতে পারে। বুকে ব্যথা, ঘন ঘন শ্বাস নেওযা, জিহ্বায় ঘা কিন্তু আয়রনের ঘটতি থেকে হয়। এরই সঙ্গে বাচ্চার নখের দিকে খেয়াল করুন। নখ ভেঙে যাওয়ার লক্ষণ দেখলে ডাক্তারি পরামর্শ নেবেন। 


দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া, কৃমি, অধিক ওজনের কারণে আয়রনের অভাব দেখা দেয়। এমনকী, খাবারে যদি আয়রন না থাকে তাহলে অবশ্য এর অভাব দেখা দেবে। শিশুকে সঠিক খাবার খাওয়ান। তার শরীরে এমন অভাব দেখা দিলে পরে জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বাচ্চার বয়স ৬ মাস পার করলে তার খাদ্যতালিকায় রাখুন পুষ্টিকর খাবার। তা না হলে জটিলতা বাড়বে। 


শরীরে আয়রনে অভাব ঘটলে রোজ একটি করে ডিম খান। বাচ্চাদের এমনিতেই ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে, ডিমের কুসুম শুধু খাওয়ান। প্রতিটি মানুষেরই একটি করে ডিম খাওয়া উচিত। ডিমে থাকা একাধিক পুষ্টিগুণ শরীর সুস্থ রাখে।   


মাংস রাখুন রোজের তালিকায়। বাচ্চাকে রোজ মাংসর স্ট্যু করে খাওয়ান। এতে তার শরীরের সকল ঘাটতি পূরণ হবে। আয়রনের অভাব কমবে। বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। তবে, অধিক তেল মশলা দিয়ে রাঁধলে কোনও লাভ নেই। এক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে সবজি দিয়ে স্ট্যু তৈরি করে খাওয়ান। 


রোজ ১ বাটি করে সবজি সেদ্ধ খাওয়ান বাচ্চাকে। তালিকায় রাখুন টমেটো, পালং শাক, ব্রকোলির মতো সবজি। এগুলো ছাড়াও যে কোনও সবজি খাওয়াতে পারেন। এতে বাচ্চার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। সঙ্গে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হবে। এই সব সবজিতে ভিটামিন, মিনারেল, পটাসিয়াম সহ একাধিক খনিজ উপাদান থাকে। যা শরীর সুস্থ থাকতে জন্য প্রয়োজন।  


বাদাম ও শস্য বীজ খাওয়াতে পারেন বাচ্চাকে। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। যা বাচ্চার শরীরের সকল ঘাটতি পূরণ করে বাচ্চার খাদ্যতালিকায় রাখুন এই ধরনের খাবার। এতে বাচ্চার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। সঙ্গে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হবে। খাওয়াতে পারেন মিষ্টি কুড়োর বীজ, সূর্যমুখী বীজ ও তিলের মত উপাদান। এতে শরীর সুস্থ থাকবে। 


আয়রনের ঘাটতি পূরণে বাচ্চাকে সি ফুড খাওয়ান। তবে, অনেক বাচ্চার সি ফুডে অ্যালার্জি থাকে। সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সি ফুডে থাকা একাধিক পুষ্টিগুণ বাচ্চার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। সঙ্গে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হবে। এতে বাচ্চার দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে সহজে। তাই রোজ খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন এই ধরনের খাবার।  


সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস খাওয়ান। এই ব্রাউন রাইস আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। বাচ্চার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ও আয়রনের ঘাটতি পূরণে এটি সব থেকে উপকারী। এতে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। তাই রোজ খাওয়ান এমন খাবার। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.