যৌবন ধরে রাখতে গাধার দুধে স্নান করতেন যে রানী
ODD বাংলা ডেস্ক: দুধ স্কিনের জন্যে কতোটা ভালো তা আর আলাদা করে বলার দরকার হয়তো পড়ে না। তবে অনেকের কাছেই দুধ দিয়ে স্নান বা তা ত্বকে লাগানোটা বিলাসিতা। কিন্তু ত্বকের পরিচর্যায় আদৌ এই দুধের কোনো কার্যকারিতা আছে কিনা সেটা অনেকেরই প্রশ্ন। তবে রূপ ও ত্বক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, দুধের সঙ্গে ত্বকের নিবিড় যোগ রয়েছে যদি সেটাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায় তবেই।
দুধ কাঁচা অবস্থায় থাকলে ও তার স্বাদ টক থাকলে সেক্ষত্রে তা ব্যবহার করা খুবই লাভজনক। তবে তা আপনি ত্বকের জন্যে ব্যবহার করবেন কিনা সেটা সম্পূর্ণ আপনার সিদ্ধান্ত। আপনি কি জানেন যে পুরোনো যুগে এক রানী দুধ দিয়েই স্নান করতেন? তিনি হলেন রানী ক্লিওপেট্রা।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী মিশরের মহারানী ক্লিওপেট্রার মতো ত্বক কিংবা টেনিস কিংবদন্তি নোভাক জোকোভিচের মতো সফলতা পেতে কে না চায়! কিন্তু তাদের রূপ ও সফলতার রহস্য না জানলে তো আর চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তরিত করা যাবে না!
ক্লিওপেট্রার সুন্দর ত্বকের গোপন রহস্য জানলে নিশ্চয় অবাক হবেন। কারণ রেশম কোমল ও উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী ক্লিওপেট্রা নাকি নিয়মিতভাবে গাধার দুধ দিয়ে স্নান করতেন। গাধার দুধ পানও করতেন। তার স্নান ও পানের জন্য প্রতিদিন দুধ দিত ৭০০ গাধা। টেনিস কিংবদন্তি নোভাক জোকোভিচও নিয়মিত গাধার দুধ পান করেন। যে প্রাণিকে নিয়ে এতো মশকরা, হাসাহাসি এবং যার বোধ বুদ্ধি নিয়ে তীব্র ব্যঙ্গ ও উপমার বন্যা বইয়ে দেয় মানুষ, সেই প্রাণির দুধ পানে আপনিও ধরে রাখতে পারবেন যৌবন।
গ্রিক পুরাণের চিকিৎসক হিপ্পোক্রাটস এই দুধের ওষুধি গুণের কথা বলে গেছিলেন। যকৃতের সমস্যা, জ্বর, সংক্রমণজণিত অসুখ, বিষক্রিয়া, গিঁটে ব্যথা, নাক দিয়ে রক্তক্ষরণসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় তিনি গাধার দুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে রোমানরা দাবি করেন গর্ভধারণজনিত সমস্যারও ভালো সমাধান গাধার দুধ। জাতিসংঘের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই দুধে প্রচুর পরিমাণে ল্যাকটোজ থাকে কিন্তু এতে চর্বির পরিমাণ থাকে একেবারে কম। গরুর বা অন্য প্রাণির দুধে যাদের অ্যালার্জি আছে এই দুধ তাদের জন্য উপাদেয়।
ঐ গবেষণায় দেখা গেছে, গাধার দুধে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন থাকে এবং এটি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে গাধার দুধ। ব্রোঙ্কাইটিস, অ্যাজমা এবং বিভিন্ন চর্মরোগ থেকেও মেলে মুক্তি। সাইপ্রাসের সবচেয়ে বড় গাধার দুধ উৎপাদনকারী ফার্মের মালিক পাইয়েরিস জিওরগিয়াডিস বলেন, গাধার মিষ্টি দুধ নিয়মিত খেলে খুব দ্রুত ব্যথা, যন্ত্রণার উপশম হয়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং যৌবন দীর্ঘায়িত হয়।
তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা এই দুধ নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সাইপ্রাসের লিমাসোল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুগ্ধ বিজ্ঞানের প্রভাষক ড. ফোটিস পাপাডিমাস বলেন, মায়ের দুধের মতোই উৎকৃষ্ট গাধার দুধ। গরু বা ছাগলের দুধের চেয়ে ২০০ এর বেশি অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট থাকে গাধার দুধে। মানুষের মতো একটি পাকস্থলি গাধারও। তবে গরু বা ছাগলের একাধিক পাকস্থলি থাকায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হার বেশি। অ্যান্টি এজিং ক্রিম হিসেবে এটা ব্যাপক কাজ করে।
পোপ ফ্রান্সিসও সম্প্রতি ভ্যাটিকানের এক হাসপাতালে বলেন, তিনি আর্জন্টিনায় এক নারীকে বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে গাধার দুধ পান করানের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
Post a Comment