পূর্ণিমায় চাঁদের জলে স্নান, যা আপনার জীবনে আনতে পারে মঙ্গল, কীভাবে বানাবেন 'ফুল মুন ওয়াটার'



 ODD বাংলা ডেস্ক: চাঁদ এমন এক মায়াবি যেখানে অশুভ শক্তি নাকি শুভ শক্তির কাছে হার মানে। চাঁদের আলো মানে এক স্নিগ্ধতার প্রকাশ। এক মায়াবি দুনিয়ার হাতছানি। কথিত রয়েছে চাঁদের এই রূপের ছটা মনের সমস্ত ক্লেদ-ক্লান্তি এবং বিদ্বেষকে দূর করে দেয়। অনেকে চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় তার শক্তির মহিমাকে ঠিক করে বুঝতে পারে না। কিন্তু কথায় রয়েছে যে সয় সে রয়। চাঁদও তেমনি, সমস্ত অশুভকে সে তাঁর স্নিগ্ধতায় গ্রাস করে শুভ শক্তিতে পরিণত করে। 

 

প্রচীনকাল থেকে লোকমুখে চাঁদের শক্তি নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। এমনকী, পুরাণ কথাতেও বারবার চাঁদের মহিমা এবং তার ম্যাজিক শক্তির কথা ঘুরে ফিরে এসেছে। অনেকে এর বিশ্বাস করেন। আবার অনেকে এর বিশ্বাস করেন না। যারা বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এখানে এমন এক কাহিনি এবং কথা তুলে ধরা হচ্ছে যা তাদের জীবনকে করে তুলতে সুখময় এবং মঙ্গলের আশীর্বাদে ভরা এক জীবন। আর সেই সঙ্গে চাঁদের শক্তিও তাঁর কয়রাত্ত হতে পারে। কথিত রয়েছে জ্যোতিষবিদ থেকে শুরু করে ডাইনিবিদ্যা নিয়ে যারা চর্চা করে এবং ভগবান দ্বারা প্রেরিত কিছু মানুষ চাঁদের শক্তিতে নিজেকে বলিয়ান করার ক্ষমতা রাখেন। এরা সব সময়ে চান চাঁদের শক্তি যেন তাঁদের কাছে থাকে। 


জ্যোতিষবিদ্যা অনুযায়ী চাঁদ একজনের মধ্যে খুব সুক্ষভাবে এবং অসচেতন মনের গভীরে ঢুকে যায়। আর সেখান থেকেই একজনের শরীরে এক প্রাণ প্রাচুর্য তৈরি করে যা সেই ব্যক্তির এবং তাঁর আত্মার বন্ধনে বেঁধে থাকাদের মঙ্গলকামনায় কাজ করে। চাঁদের এই শক্তিকে পেতে গেলে পূর্ণ পূর্ণিমায় চাঁদের জলে স্নান করা যেতে পারে। কীভাবে এই ফুল মুন ওয়াটার তৈরি করবেন, তা জেনে নিন। 


চাঁদের জল কি? 

 পূর্ণিমার সময়ে যেখানে সবচেয়ে বেশি চাঁদের আলো পড়ে সেখানে পাথরের কোনও বাসনে জল ভর্তি করে রেখে দিন, অথবা কাঁসার বাসনেও এই জল রাখতে পারেন। তবে পাথরের কোনও পাত্রে এই জল রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় ভালো করে জলকে রেখে দিন। কথিত রয়েছে পাথরের পাত্রে থাকা এই জলে চাঁদের আলো পড়লে তাতে এক অন্তরাত্মার যোগসূত্র তৈরি হয়। আর এই যোগসূত্র ধরে চাঁদের ম্যাজিক্যাল পাওয়ার ওই জলে নাকি ভর করে। নদী এবং সাগরের জলের ওঠা-নামায় চাঁদের আকর্ষণের বড় ভূমিকা রয়েছে। এই আকর্ষণে নাকি চাঁদের শক্তির সিন্থেসিস প্রক্রিয়া চলে। আর পূর্ণিমার আলোয় এই সিন্থেসিস প্রক্রিয়া থেকে উৎপন্ন হওয়া শক্তি ফের জলের দিকেই ধাবিত হয়। যাতে নাকি ভর্তি থাকে চাঁদের ম্যাজিক্যাল পাওয়ার। এই ম্যাজিক্যাল পাওয়ারকে ধরতেই পূর্ণিমার রাতে ঘরের বাইরে পাথরের পাত্রে জল ভরে রেখে দিতে বলতেন ঋষিরা। 


চাঁদের জলে স্নান করার আগে অবশ্যই এই শর্তগুলো একটু মিলিয়ে নিন

চাঁদের জল ধরার আগে দেখে নিন পূর্ণিমা কোন জাতকে রয়েছে এবং কোন গ্রহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এর সঙ্গে নিজের রাশি ও গ্রহ মিলিয়ে নিন। আপনাদের সুবিধার্থে বলা হচ্ছে যে এমন পূর্ণিমায় আপনি চাঁদের জল তৈরি করলেন যখন পূর্ণিমা রয়েছে বৃষ রাশিতে এবং তা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বৃহস্পতি দ্বারা, এর মানে এই সময়ের চাঁদের জলে ভালোবাসা ও সুখ বৃদ্ধি পাবে। আবার এমন এক পূর্ণিমা এল যেখানে রাশি মিথুন এবং নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বুধের দ্বারা। তাহলে বুঝতে হবে এই সময়ে তৈরি করা চাঁদের জলে স্নানে আপনার চরিত্রের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পাবে। 

কীভাবে চাঁদের জল কাজ করে

নানাভাবে চাঁদের জল কাজ করে। জলে প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি রয়েছে। জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী এটা যে কোনও শক্তিকে ধারণ করতে সক্ষম। পূর্ণিমার আলোর বিকিরণে চাঁদের ভালো শক্তি বিকশিত হয়ে পৃথিবীর উপরে আঁছড়ে পড়ে। তাই এই সময় এই আলোর সংস্পর্শে জলকে আনলে তা ওই শক্তিকে ধারণ করে নেয়।  


কীভাবে চাঁদের জলের সঙ্গে নিজের উদ্দেশ্যকে একপথে চালিত করবেন

আগে নিজের উদ্দেশ্যকে ঠিক করুন। যাচাই করে দেখে নিন আপনার উদ্দেশ্যর সঙ্গে ওই পূর্ণিমার রাশি এবং গ্রহ মিল খাচ্ছে কি না। কারণ উদ্দেশ্য-র সঙ্গে পূর্ণিমার রাশি এবং গ্রহ মিল না থাকলে তা সফল হবে না বলেই কথিত রয়েছে। 


কীভাবে চাঁদের জলে স্নান করবেন

মূলত পূর্ণ পূর্ণিমার রাতে এই জলে স্নান করতে পারলে ফল সবচেয়ে ভালো পাওয়া যায়। পরিস্কার কোনও পাত্র দিয়ে জল তুলে আস্তে আস্তে করে মাথার মাঝখানে ঢালতে হবে। চোখ বন্ধ করে স্মরণ করতে হবে যে চাঁদের রূপোলি আলো আপনার মাথার উপরে উদ্ভাসিত হচ্ছে এবং তার বলয়ে এর আলোর মুকুট আপনার মাথায় স্থাপন হয়েছে। এই ছবিটা বন্ধ চোখের সামনে এলে এবার চিৎকার করে নিজের উদ্দেশ্যকে আওড়াতে হবে। চাঁদের জল যাতে শিরদাঁড়া দিয়ে পরিপূর্ণভাবে বাহিত হয় সেইভাবে জল ঢালবেন। শিরদাঁড়া দিয়ে জল নামার অনুভূতি স্মরণ করবেন এবং সেই সঙ্গে চোখ বন্ধ রেখে স্মরণ করবেন যে চাঁদের রূপোলি আলোর বিকাশ আপনার শিরদাঁড়া দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ক্রমে নিচে মিলিয়ে যাচ্ছে। এই চাঁদের জল হাতের মুঠোয় নিয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে দিন এবং নিজের উদ্দেশ্যকে চিৎকার করে আওড়ান। তাহলেও গৃহে এবং সংসারের জন্য আপনার প্রার্থনা পূর্ণতা লাভ করতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.