বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য: ইনকা নগরীতে

 


ODD বাংলা ডেস্ক: আগুয়াস ক্যালিয়ান্তেসের তারা জ্বলা আকাশের নিচে চুটিয়ে আড্ডা মেরে ফুরফুরে মেজাজে নিদ্রাদেবীর কোলে নিজেকে সমর্পণ করেছিলাম, খুশি হব নাই বা কেন- একে তো আড্ডার সঙ্গী আর পানীয়ের খানিকটা ব্যাপার আছে, তার চেয়েও ট্রিলিয়নগুণ আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে পেরুর আন্দেজের কোলের এই ছোট শহরটিই বিশ্বের বিস্ময় ইনকা সভ্যতার পাহাড়ি শহর মাচু পিচু যাবার পথে শেষ সভ্যতার ছোঁয়া লাগা জনপদ, এরপর বাসে চেপে বা পদব্রজে সোজা সেই পাহাড় শীর্ষে অবস্থিত শহরে গমন।


কবে থেকে শুরু মাচু পিচুর সাথে এই সখ্য, সাল মনে পড়ে না কিন্তু পড়ি তখন প্রাইমারি স্কুলে, বড়দের অদ্ভুতুড়ে জগতের মায়াবী আকর্ষণ নিয়ে হাতছানি দিত কিছু আজব জিনিস, তার মধ্যে একটি ছিল রহস্য পত্রিকা নামের এক আজব পত্রিকা, সেবা প্রকাশনীর মাসিক মুখপাত্র। সেটির মলাটে ছিল এক বিশ্রামরত বাঘের ছবি, সেই সাথে লেখক শওকত হোসেনের সাক্ষাৎকারের কথা। ভিতরের এক লেখাতে ছিল বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার না-পাওয়া গুপ্তধনের ফোলানো-ফাঁপানো বর্ণনা, সেখানে ছিল এক ভাঙ্গাচোরা শহরের সাদা কালো ছবি, নিচে লেখা- মাচু পিচু।


কেমন অদ্ভুত একটা ছন্দময় মজার নাম- মাচু পিচু, সেই প্রথম নামটির সাথে পরিচয়, এরপরে কত পত্রিকা, বই, তথ্যচিত্র, চলচ্চিত্রে ( সত্যজিৎ রায়ের 'আগন্তুক'সহ) এর নাম শুনেছি তার লেখাজোখা নেই। এর মোহনীয় আকর্ষণে জড়িয়ে যাবার পর থেকেই স্বপ্ন দেখেছি একদিন, কোনো একদিন আন্দেজের পাহাড়ি এই শহরে যেতেই হবে আমাকে।



সেই লম্বা যাত্রা শেষ হয়েছিল গতকাল সন্ধ্যেয় আগুয়াস ক্যালিয়ান্তসের রেল স্টেশনে। কোনোমতে সুপার ট্রাম্প হোস্টেলে মাথা গুঁজে পরের দিন ভোরে হিরাম বিংহ্যাম সড়ক ধরে মাচু পিচুর পথে আরোহণ চলবে এমনটাই ছিল পাকা পরিকল্পনা, সেই মোতাবেক স্থানীয় ইনকা গাইড এসে সব বুঝিয়ে দিয়ে গেল, সেই সাথে জানাল মাচু পিচুর পাশের সুউচ্চ শৃঙ্গ হুয়ানাপিচুতে তারা আরোহণের অনুমতি জোগাড় করে দেবে, কারণ হুয়ানা পিচুতে প্রতিদিন মাত্র ২৫০ জন পর্যটক প্রবেশ করতে পারে, যেখানে মাচু পিচুতে ৪০০০ জন, আর সেখান থেকেই এক চিলতে স্বর্গের মতো মেঘের অপার্থিব রাজ্যে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায় মাচু পিচুকে। শুধু শর্ত একটাই, পরদিন কাক-চিল-শকুন ওঠার আগেই আমাদের উঠে পৌঁছাতে হবে মাচু পিচুর মূল ফটকে।


ভোর ৫টায় অ্যালার্ম দেয়াই ছিল কিন্তু বৃষ্টিপাতের প্রবল অস্তিত্ব জানান দেয়া উৎপাতে তার অনেক আগেই ঘুম ঠেলে সেই জায়গা দখল করে নিল উৎকণ্ঠা আর তার চিরসঙ্গী অধীর অপেক্ষা। একসময় বাস ছেড়ে যাবার সময় হয়ে গেল, চলে গেল গাইডকে দিয়ে রাখা সময়টুকু, ঘড়ির কাঁটা ৫টা থেকে ৯টা পেরিয়ে গেল, কিন্তু আকাশের কান্নার বিরাম নেই, মনে হচ্ছে আদি গোষ্ঠীদের মত আমাদেরও সূর্যদেবতাকে যোগ তপস্যা বলে মেঘের আড়াল থেকে সামনে আনার জন্য যজ্ঞে বসতে হবে।


এমনিতে হয়ত খারাপ লাগত না, হোস্টেলের বারান্দা দিয়ে সবুজ পাহাড় আর মেঘের মিতালি এই ধূসর সকালেও অপূর্ব লাগছে, একটা আলসে দিন এইভাবে গড়িয়ে গেলে এমন কোন ক্ষতি নেই, কিন্তু বিকেলে মাচু পিচুর ট্রেনে ফিরতে হবে, টিকিটের পুরো টাকা অগ্রিম দেওয়া তো আছেই, পরের সিট আবার কবে ফাঁকা পাওয়া যাবে কেউই বলতে পারে না, তাই এত কাছে এসে এমন আবহাওয়া মানে জগতের শ্রেষ্ঠ পরিহাস- মাচু পিচুর নিচে এসে দর্শন না পেয়ে ফেরত যাওয়া!


ঝুম বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে যেতে কোন আপত্তি নেই, সমস্যা হচ্ছে ক্যামেরা (স্থির ও ভিডিও) নিয়ে, ওদের ছাড়াই বা যাই কী করে! তবে সেরকম অবস্থা হলে সব ছাড়াই (এমনকি পরনের বস্ত্র) যেতে রাজি আছি, তিন বন্ধু মিলে বেশ খানিকক্ষণ ঝিমানো আড্ডা মেরে, এন্তার কোকা চা আর কফি ধ্বংস করে মোড়ের দোকানে থেকে সবচেয়ে সস্তা প্লাস্টিকের পনচো কিনে তাতেই কোনমতে ক্যামেরা সহ শরীর ঢেকে রওনা হয়ে গেলাম, জলবর্শার দলের তীব্রতা তখন অনেকটা কমে এসেছে।



একরত্তি শহরটার সাথেই বাসস্টেশন, মিনিট পনের পরপরই বাস ছাড়ছে মাচু পিচুর উদ্দেশে, হিরাম বিংহাম সড়ক দিয়ে এঁকিয়ে বেঁকিয়ে চলেছে পাহাড় শীর্ষে, অনেকেই হাইকিং করে উঠে অবশ্য আবহাওয়া ভাল থাকলে, বেশি রোমাঞ্চপ্রিয়রা সাইকেলে!


মিনিট বিশেকের যাত্রা, জলভরা পোয়াতী মেঘদের বেয়াদবিতে পথের খুব একটা ঠাহর করবার আগেই গন্তব্য চলে আসল- এখন আধুনিক সভ্যতাকে বিদায় জানিয়ে আমাদের প্রবেশ ইনকাভুবনে।


মাচু পিচু নিয়ে তো সারা বিশ্বই মেতে আছে আর পুনরাবিষ্কারের পর থেকে, এর ইতিহাস নিয়ে এত কচকচির আলাদাভাব কিছু নেই, কিন্তু বলুন তো মাচু পিচুর সবচেয়ে বড় রহস্যটা এখন পর্যন্ত কি? ভাবতে থাকুন, উত্তর মিলবে লেখার মধ্যেই।


সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০০০ ফিট উপরে অবস্থিত এই ইনকা শহরটি নির্মিত হয় ১৪৫০ সালে, সম্ভবত ইনকা সম্রাট পাচাকুটির নির্দেশে, কিন্তু এর মাত্র একশ বছর পরেই শহরটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়, কেন তা আমাদের জানা নেয়, হয়ত কোন রোগের মহামারি আকারে প্রকোপের ফলে।


মূল ফটকে অবশ্যম্ভাবীভাবে গাইডের দেখা মিলল না, বেচারির দোষ দিয়ে লাভ নেই- এমন আবহাওয়ায় কে এত ঘণ্টা বৃথা অপেক্ষা করবে! কিন্তু এর ফলে আমাদের হুয়ানা পিচুতে দাঁড়িয়ে মাচু পিচুর চমৎকার দৃশ্য দেখার এবং ছবি তোলার সম্ভাবনা এ যাত্রায় থেমে গেল।


সেখানকার টিকেট চেকিং ব্যবস্থা বেশ কড়া, দিনে যেহেতু মাত্র হাজার চারেক দর্শণার্থী যেতে পারে তাই একেবারে নাম ডেকে ডেকে ঢোকাল! এরপরে পাথরের তৈরি রাস্তা, ইনকাদের আমলেরই, হয়ত এখানে একসময় পায়চারি করতেন ইনকা সম্রাট, শ্রমজীবী কৃষকেরা, সেই সাথে বহু শতাব্দী পরের অভিযাত্রীদের দল। এক জায়গায় মাচু পিচু আবিষ্কারের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ধাতব ফলক বসানো (এখন অবশ্য শতবর্ষ পূর্তি হয়েছে), আরেকটাতে হিরাম বিংহামের নাম বসানো সেই সাথে লেখা ১৯১১ সালে তার এই বিস্ময়শহরে পদার্পণের কথা।


মাচু পিচুতে লেখক

আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তরুণ অভিযাত্রী শিক্ষককে অনেকে মাচু পিচু পুনরাবিষ্কারের জন্য সবটুকুই কৃতিত্ব দেয় যা মোটেও তার প্রাপ্ত নয়, প্রথম কথা হিরাম খুঁজছিলেন ভিলকাবাম্বা নামে ইনকাদের পাহাড়ি রাজধানী, সেটি তিনি পেয়েও যান, কিন্তু তার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের অভাবে সেটির তাৎপর্য বুঝতে পারেন নি, বরং অভিযান চালাতে চালাতে মাচু পিচু এসে উপস্থিত হবার পর ভাবেন এটিই ভিলকাবাম্বা! পরবর্তীতে অবশ্য তার ভুল ধারণার অবসান ঘটে।


সেই সাথে এই কথা দৃঢ়ভাবে বলা যায় হিরাম-ই এর একমাত্র আবিষ্কারক নন, স্থানীয়রা অনেকেই এই ইনকানগরীর কথা জানত, এমনকি হয়ত মাঝে মাঝেই তীর্থযাত্রার মত সেখানে গমনও করত, কিন্তু আবিষ্কারক হিসেবে তার স্থানীয় গাইডদের বিন্দুমাত্র কৃতিত্ব না দিয়ে সম্পূর্ণ সাফল্যের ভাগিদার হিসেবে তার নামই বলা হয়ে থাকে।


তৃতীয়ত হিরাম যে একজন নিষ্ঠ গবেষক ছিলেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি, তিনি খানিকটা স্টান্টবাজির মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনের চেষ্টাতেই বিভোর ছিলেন এবং মাচু পিচু থেকে পাওয়া অগণিত ইনকা কীর্তি অনৈতিকভাবে গবেষণার কথা বলে আমেরিকায় নিয়ে যান, যা নীতিগতভাবে অত্যন্ত অন্যায়, যদিও এই বছর ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৫০০০ নিদর্শন পেরুর কাছে ফেরত দিবে বলে জানিয়েছে।


হিরাম বিংহাম তার জায়গায় থাক, আমরা এগিয়ে চলি অপূর্বভাবে পাথর বাঁধাই করা সেই রাস্তা ধরে, সামনে পিছনে মানুষের মিছিল আর স্বর্গ থেকে তো বৃষ্টি ঝরে পড়ছেই। বেশ কিছু গলি ঘুপচি পেরিয়ে ছাউনি দেয়া তিনটি চালাঘরের দর্শন মিলল, যাদের দেয়ালগুলো খোদ ইনকাদেরই নির্মিত, কিন্তু খড়ের চালা আধুনিককালে তৈরি, কেবলমাত্র দর্শনার্থীদের একটা ধারণা দেবার জন্য যে কেমন ছিল সেই সময়ের ঘরগুলো।


কারণ, কয়েক শতাব্দী পরিত্যক্ত থাকার ফলে পচনশীল বস্তুর স্থাপনার কোন অবশিষ্টাংশ ছিল না মাচু পিচুতে। তাই আগের ইতিহাস ফিরিয়ে নিয়ে আসার কিছু বৃথা চেষ্টা মাত্র। প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরটিকে আগের অবস্থায় কিছুটা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে গত একশ বছর ধরেই। 

এমন ঘরগুলো মূলত ব্যবহার হত খাদ্যশস্যের গুদাম হিসেবে, কেবল কিছু ঘরে মানুষের আবাস ছিল। এদের পাশের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতেই আক্কেল গুড়ুম করে চোখে পড়ল লামা ! ল্যাটিন আমেরিকার উট জাতীয় এই প্রাণী মনে হয় সারা বিশ্বের কাছে অতি পরিচিত তার মাংস, পশম, পাহাড়ে চড়ার নেশা এবং ইনকা সভ্যতার সাথে সংশ্লিষ্টতার জন্য (আলপাকা এবং ভ্যিকুনা নামের আরও দুই প্রজাতি্র উট আছে সেখানে, এর মধ্যে আলপাকার পশম সবচেয়ে উৎকৃষ্ট এবং দামি)।


মনের সুখে চরতে চরতে সে সবুজ লকলকে ঘাস খেয়ে বেড়াচ্ছে প্রাচীন সেই চারণভূমিতে, তার দর্শন একটু নিকট থেকে পাবার জন্যই আরো কয়েক ধাপ সিঁড়ি টপকিয়ে ফাঁকা মত জায়গাটিতে যেতেই লামার ছবি আরো তোলা হলে, অবাক বিস্ময়ে বোবা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম নিচের দিকে, যেখানে কুয়াশা-মেঘের অবগুণ্ঠন খুলে উঁকি দিচ্ছে অসংখ্য বইয়ের মলাটে দেখা একটি ছবি।


স্বপ্নের মাচু পিচু, সাথেই সাথেই মনে কড়া রোদ ঝকঝকে আকাশের নিচের মাচু পিচুকে হয়ত দেখতে ভালই লাগত, কিন্তু এর পরিপূর্ণতা যেন এমন রহস্যঘন পরিবেশে আধা উন্মুক্ত আধা দৃশ্যমান অবস্থাতেই। চারপাশে আকাশ ছোঁয়া সবুজ পাহাড়, অনেক নিচে খরস্রোতা উরুবামবা নদী, আর মেঘে ঘেরা মাচু পিচু, শিল্পীর আঁকা পটের ছবির মত, কেবল আকাশে উড্ডয়মান গোটাদুয়েক কনডর শকুন বাদ গেছে।


যে কারণে এত শাপশাপান্ত করে আসা মেঘ আর তার নিক্ষেপিত সন্তান বৃষ্টিকে খানিকটে ধন্যবাদই দিলাম এমন মোক্ষম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য। কিন্তু সেই সাথে সময়ের স্বল্পতা হেতু চরকির মত পাক খেয়ে ঘুরতে থাকলাম প্রাচীন সেই নগরীর রাস্তায়, ময়দানে, শস্যক্ষেত্রে, ভাঁড়ার ঘরে, উদ্যানে, সূর্য মন্দিরে।


পাথরের উপর পাথর মাপমত সাজিয়ে বসিয়ে কি চমৎকার দেয়ালের মাঝে টেকসই জানালা আর দরজা বানিয়ে নিয়েছিল তারা, এক জায়গায় স্থানীয় বেশ কিছু গাছের সমাহার দেখা গেল, আবার সেইখানেই দেখা মিলল কিছু পালকময় বন্ধুর, যার মাঝে ছিল একমাত্র পেরুরই বাসিন্দা বিশেষ প্রজাতির হামিংবার্ড।


আধা বৃত্তের মত সূর্য মন্দির, অনেক ইতিহাসবিদই মনে করে থাকেন মাচু পিচু অত্যন্ত পবিত্র স্থান ছিল ইনকাদের কাছে, এবং এর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই হয়ত তারা এইখানে পাহাড়ি শহরটি নির্বাচন করেছিল, স্থাপন করেছিল উপাসনালয়।


সেই সাথে জল সেচের মাধ্যমে এই বন্ধুর ভূমিকেই তারা উর্বর করে তোলে, শস্যক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট ফসলের উৎপাদনের মাধ্যমে হয়ে ওঠে স্বয়ংসম্পূর্ণ তেমনি পশুপালনের মাধ্যমেও হয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে ওঠে মাংস এবং পশমের জোগাড়।


বিশাল শহরটির সর্বত্রই যেন ইতিহাসের জাদু মাখানো, অবাক লাগে, ভাল লাগে, আপ্লুত হয় বিস্ময়ে, মুগ্ধতায়, সেই সাথে বারিধারায়! একবার তো সদলবলে সূর্য বন্দনাও করা হল মেঘমুক্ততার জন্য, কিন্তু বিধি বাম, তাই বৃষ্টিস্নাত মাচু পিচুর অভিজ্ঞতা নিয়েই ট্রেন ধরার জন্য শুরু হল আমাদের দৌড় !


ও আচ্ছা, বলেছিলাম মাচু পিচুর সবচেয়ে বড় রহস্যের কথা, যা আমাদের কাছে আজও অজানা, সেটি হচ্ছে, আমরা যেন কোন শহর নিয়ে কথা বলছিলাম? কেন, মাচু পিচু ! আরে, সে তো আমাদের দেওয়া নাম, এর আসল নাম কি মানে ইনকারা শহরটিকে কী নামে ডাকত? উত্তর- আমাদের অজানা আজও !!! 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.