সকালের সুখটান না দিলে শৌচালয়ের কাজ সারা হয় না? সবটাই কি মানসিক, বোঝালেন চিকিৎসক

 


ODD বাংলা ডেস্ক: সিগারেট ক্ষতিকর জেনেও আমাদের দেশের প্রায় ২ কোটি ৬৭ লক্ষ মানুষ ধূমপান করেন। এঁদের মধ্যে প্রায় সাড়ে আট শতাংশ নাবালক (১৩ – ১৫ বছর)। প্রতি বছর প্রায় ১৩.৫ লক্ষ মানুষ স্রেফ ধূমপান করেই মারা যান। তা সত্ত্বেও বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দেওয়া কমানো যাচ্ছে না। তথাকথিত শিক্ষিত ও বুদ্ধিমানদের অনেকেই জর্জ বার্নাড শ-র স্টাইলে বলেন, “সিগারেট ছাড়া খুবই সহজ, আমি কত বার ছেড়েছি।”


আসলে যারা দীর্ঘ দিন সিগারেটকে সঙ্গী করেছেন, তাঁদের প্রায় সকলেরই নিকোটিনের উপর এক ভয়ানক নির্ভরতা আছে। তাই যখনই ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেন, তখনই নিকোটিন উইথড্রয়াল সিনড্রোম হয়। অনেক সিগারেটপ্রেমী দাবি করেন যে, সকালে চায়ের পরে একটা সিগারেট না ধরালে বাথরুমে যাওয়াই বৃথা। সত্যিই কি তাই? না কি নিছকই একটা অজুহাত?


এই বিষয়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিস্ট সৌতিক পাণ্ডা বললেন, ‘‘সিগারেটের সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্টের একটা ঘনিষ্ট সম্পর্ক আছে। এই কারণেই সিগারেটে টান দিতে দিতে কোমডে যাওয়া অভ্যাস হয়ে যায়। তামাকের নেশা শরীর ও মনকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। তাই প্রত্যেক শারীরবৃত্তিয় কাজের সঙ্গে ধূমপান জড়িয়ে থাকে।’’


সৌতিক আরও জানালেন, তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষই অবহিত। কিন্তু নিকোটিন উইথড্রয়াল সিম্পটমের কারণে চেষ্টা করলেও অনেকে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। তাঁর কথায়, ‘‘এঁদের জন্যে আমার পরামর্শ মনের জোরে সিগারেটকে গুডবাই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই এক জন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ইচ্ছেশক্তি আর চিকিৎসকের পরামর্শে সিগারেট ছেড়ে দেওয়া সহজ।’’


আসলে সিগারেটে থাকা নিকোটিন এক অত্যন্ত শক্তিশালী ড্রাগ। এটি সহজেই আমাদের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। দৈনন্দিন কাজকর্মে মস্তিষ্ককে চালনা করে নিকোটিন। ঠিক এই কারণেই সকালে চা কফি পান করে সিগারেট ধরালে তবেই বাওয়েল মুভমেন্ট হয়ে এবং সকলে প্রকৃতির টান অনুভব করেন। এমনকি, রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে সিগারেটে সুখটান না দিলে ঘুম আসে না। এ-ও সেই নিকোটিনেরই খেলা।


সৌতিক জানালেন, নিকোটিন প্যাচ লাগিয়ে সিগারেট ছা়ড়া যেতে পারে। নিকোটিন প্যাচ বাওয়েল মুভমেন্ট স্বাভাবিক রাখা থেকে মানসিক উদ্বেগ কমানো কিংবা ঘুম ডেকে আনা— সবেতেই সাহায্য করবে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিকোটিন প্যাচ ব্যবহার করা ঠিক নয়। মনের জোর আর কাউন্সেলিংয়ের সাহায্যে নিকোটিনের উপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ফেলা সম্ভব

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.