শিশুর মতো দেখতে ৩ ফুট উচ্চতার অবলির বয়স কত?



 ODD বাংলা ডেস্ক: বয়স বাড়লেও যেন দেখতে বোঝা না যায়, সেই চেষ্টা থাকে সবার। শরীর-মনে বয়সের ছাপ পড়বে না কিংবা বেশি বয়স হলেও বোঝা যাবে না, এই কামনা কার না থাকে। যদি কোনো চেষ্টা ছাড়াই বয়স না বাড়ে, তবে কেমন হয়? এ তো হবে সোনায় সোহাগা! কিন্তু কোনো রোগের কারণে যদি বয়স আটকে যায়, তবে তা হয় যন্ত্রণা। 

ভারতের এক মেয়ে আবলি জারিত। ফুটফুটে এই মেয়েটিকে দেখলে মনে হবে ৬ বছরের শিশু। কিন্তু তিনি বয়সে তরুণী। মানে ২০০৩ সালে জন্ম নিয়েছেন আবলি। সেই অনুযায়ী তার বয়স এখন ১৯ বছর।


ভারতের নাজাপুরের বাসিন্দা আবলি জারিত। তার উচ্চতা মাত্র তিন ফুট চার ইঞ্চি। ছোটবেলায় আবলির রেনাল রিকেট রোগ ধরা পড়ে। এছাড়াও আবলি মূত্রাশয় ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এজন্য তাকে সব সময় ডায়াপার পরিয়ে রাখা হতো। আস্তে আস্তে তার শরীরের হাড়ও দুর্বল হতে থাকে। ফলে তার হাড়ের বৃদ্ধি থেমে যায়। 


এজন্য আবলি কখনো হাঁটতেও পারেনা। একবার হাঁটার চেষ্টা করেছিলেন। তবে পড়ে গিয়ে আরো আহত হয়েছিলেন। এরপর আর কখনো হাঁটার সাহস করেননি। ১৯ বছর ধরে আবলি যেমন সংগ্রাম করে যাচ্ছেন জীবন নিয়ে। তেমনি তার পরিবারের বাকিরাও আবলিকে সুস্থ রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। 


আবলি গান গাইতে ভালোবাসেন। এমনকি ভালো গানও করেন তিনি। ভারতের সবচেয়ে বড় গানের রিয়েলিটি শো ইন্ডিয়ান আইডলেও অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও আবলি অভিনয় করতেও ভালোবাসেন। তিনি গায়িকার সঙ্গে নায়িকাও হতে চান। তার ইচ্ছে হলিউড ও বলিউডে কাজ করার। 


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবলি জারিত খুবই জনপ্রিয়। তার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা ছয় হাজার। সবাই তার শিশুসুলভ চেহারাটি পছন্দ করেন। তার গানও পছন্দ করেন অনুসারীরা। আবলির মতো, এই রোগে খুব কম মানুষই বাঁচতে পারেন। তার মধ্যে যে তিনি আছেন এজন্য নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করেন।


এর কোনো সঠিক চিকিৎসা না থাকায় তার কখনোই সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে তিনি এই জীবনকে উপভোগ করে যাচ্ছেন। ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার সময়ই তার শুধু খারাপ লাগে। এর কারণ, একা চলাফেরা করতে না পারায় তাকে নিতে হয় অন্যের সাহায্য। আবলির মা বনিতা, বাবা বিজয় সব সময় তার দেখাশোনা করেন। 


আবলি বিরল রোগ নিয়ে জন্ম নিলেও তার অন্য ভাইবোনেরা পুরোপুরি সুস্থ। আবলির অন্যান্য আত্মীয় স্বজনেরাও তাকে ভালোবাসেন এবং যত্ন নেন। তবে শুধু আবলিই নন, এমন আরো অনেক মানুষ আছেন পৃথিবীতে। 


ডেনিস ভাশুরিন নামের ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বিরল রোগে আক্রান্ত হন। ১৪ বছর বয়সের পর তার শারীরিক বিকাশ থেমে যায়। ঝুং শেনকাই নামের এক চীনা ব্যক্তি মাথা গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর তার বৃদ্ধি থেমে গিয়েছিল। ২৫ বছর বয়সের পর আর তার শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ হয়নি।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.