যে গোলকের রহস্য আজও ভেদ হয়নি

ODD বাংলা ডেস্ক: কোস্টারিকার পাথরের গোলকগুলো রহস্য আজও ভেদ হয়নি। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় গোলকগুলো সম্পর্কে আজব সব তথ্য পাওয়া গেছে।

১৯৩০ সালের কথা। ইউনাইটেড ফ্রুট কোম্পানি তাদের নতুন কলাবাগান তৈরির জন্য বন পরিষ্কার করছিল।

এমন সময় কোম্পানির এক সদস্য নির্বাহী কর্মকর্তার মেয়ে ডরিস স্টোন জঙ্গলের মধ্যে অদ্ভুত কিছু জিনিস দেখতে পান।

এগুলো ছিল পাথরের তৈরি গোলক। দেখতে নিখুঁত-মসৃণ পাথরের বল। ডরিসের উত্তেজিত চিৎকারে ছুটে আসেন কর্মরত কর্মীরা। তারা ভারী বুলডোজার ব্যবহার করে বলগুলো সরানোর চেষ্টা করেন। ফলে বেশ কিছু গোলক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কোস্টারিকার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এমন তিনশতাধিক পাথরের গোলকের সন্ধান পাওয়া গেছে।

এই গোলকগুলোর ব্যাস ৫ সেন্টিমিটার থেকে ২ মিটারেরও বেশি। ওজন ১৬ টন পর্যন্ত। এসব গোলকের বেশিরভাগ গার্বো নামের এক ধরনের পাথর দিয়ে তৈরি, যা অনেকটা গ্রানাইটের মতো।

কিছু গোলক চুনাপাথর আর কিছু বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। ধারণা করা হয়, স্থানীয় আদিবাসীদের পূর্বপুরুষরা এগুলো তৈরি করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ২০০ অব্দ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোনো এক সময় এগুলো তৈরি করা হয়। তবে কী উদ্দেশ্যে এগুলো তৈরি হয়েছিল তা আজও রহস্যই থেকে গেছে।

কোস্টারিকার প্রস্তর গোলকগুলো নিয়ে অনেক উপকথা চালু আছে। অনেকে বলেন, এগুলো এসেছে আটলান্টিস (পৌরাণিক উপকথা অনুযায়ী, সমুদ্রতলে হারিয়ে যাওয়া একটি দ্বীপ) থেকে। স্থানীয় আদিবাসী লোককাহিনী অনুযায়ী, তাদের পূর্বপুরুষরা পাথর নরম করার উপায় আবিষ্কার করেছিলেন।

ফলে খুব সহজেই তারা গোলকগুলো তৈরি করতে পেরেছিলেন। আবার একথাও প্রচলিত রয়েছে, গোলকের ভেতরে সোনা লুকানো রয়েছে।

ইউনাইটেড ফ্রুট কোম্পানির কিছু শ্রমিক এ গল্প থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ড্রিল মেশিন দিয়ে কিছু গোলক ফুটো করে ফেলেছিলেন। শুধু তাই নয়, অতি উৎসাহী কয়েকজন কিছু পাথরের গোলক ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেন।

নানা উপকথার পাশাপাশি চালু আছে ভিনগ্রহবাসীদের কল্পকাহিনীও। অনেকেই মনে করেন, গোলকগুলো আসলে ভিনগ্রহবাসীদের আগমনের প্রমাণ।

অনেকের মনে প্রশ্ন, সেই প্রাচীনকালে মানুষ এত অতিকায় আকৃতির পাথর দিয়ে তৈরি করে ফেললেন নিখুঁত এসব গোলক, তাও কি সম্ভব?

এত প্রযুক্তি আর জ্ঞান তারা পেলেনই বা কোথা থেকে? নিঃসন্দেহে তাদের সাহায্য করেছিল পৃথিবীর বাইরে বা অন্য গ্রহ থেকে আসা প্রাণীরা।

কোস্টারিকার প্রস্তর গোলকগুলো নিখুঁত ও মসৃণ গোলাকৃতির জন্য ব্যাপক আলোচিত।

কিন্তু কালের করালস্রোতে বেশ কিছু গোলক ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে এবং বেশিরভাগ গোলক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গুপ্তধন সন্ধানীদের কারণে।

ফলে গোলকগুলোর আসল আকার এখন আর বোঝার উপায় নেই। কিছু গোলক কোস্টারিকার জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.