মাস্কের বালাই নেই, কলকাতার সংক্রমণে চিন্তায় ডাক্তারেরা

 


ODD বাংলা ডেস্ক: গত শনি ও রবিবার, দু’দিনই কলকাতা শহরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৪৮ জন করে। সোমবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮৮ জনে।


জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকেই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ মাসে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত এক দিনে সব চেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন গত সোমবারই। ২২ জুন সংখ্যাটা ছিল ৩৩৯। করোনার দাপটের নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সোমবার ওই জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৬০ জন।


শহর ও শহরতলিতে করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে চিন্তিত চিকিৎসকেরা। সাধারণ নাগরিকদের বারংবার সাবধান হতে পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। চিকিৎসকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে মানুষকে মাস্ক পরানোর বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর হতেই হবে। কারণ, এখন প্রায় ৯০ শতাংশ নাগরিকই মাস্ক পরছেন না। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা।


মাস্কের ব্যাপারে পুরসভার তরফেও কঠোর মনোভাব দেখানো হচ্ছে না। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ এখন ছ’দিনের সফরে লন্ডনে রয়েছেন। পুর চিকিৎসকদের একাংশেরও মতে, এই পরিস্থিতিতে পুরসভা বা পুলিশ-প্রশাসন নতুন করে মাস্ক পরার বিধি বলবৎ না করলে সংক্রমণের হার আরও বাড়বে। চিকিৎসকদের আর একটি অংশের মতে, আক্রান্তেরা বেশির ভাগ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না বলে করোনাকে আমল দিচ্ছে না প্রশাসনও।


গত ৫ জুন কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ২০ জন। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সোমবার শহরে যে ৩৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই দক্ষিণ কলকাতার সাত, আট, দশ ও বারো নম্বর বরো এলাকার বাসিন্দা।


পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, সোমবার সাত নম্বর বরোয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩২, আট নম্বর বরোয় আক্রান্ত হন ৪৬ জন, দশ নম্বর বরোয় ৫৭ জন ও বারো নম্বর বরোয় ৪৫ জন। পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, দশ নম্বর বরোয় সংক্রমণের হার সব চেয়ে বেশি। সাত নম্বর বরোর ট্যাংরা, তপসিয়া, শেক্সপিয়র সরণির মতো এলাকার বিভিন্ন আবাসনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আট নম্বর বরো এলাকার গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, কালীঘাট ও টালিগঞ্জ এবং দশ নম্বর বরোর নিউ আলিপুর, রবীন্দ্র সরোবর, রিজেন্ট পার্ক, গরফা, গল্ফ গ্রিন ও নেতাজিনগরে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়মিত বেড়ে চলেছে। বারো নম্বর বরো এলাকার পাটুলি, আনন্দপুর, পূর্ব যাদবপুর, গরফার একাংশ ও পঞ্চসায়র এলাকায় বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।


বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এখন আক্রান্তদের বেশির ভাগই উপসর্গহীন। খুব কম সংখ্যক যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই বুস্টার ডোজ় নেননি বলে জেনেছি। সুতরাং করোনা থেকে বাঁচতে বুস্টার ডোজ়ও সবাইকে নিতে হবে। কেবল প্রতিষেধক নিলেই হবে না, মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে। কারণ, প্রতিষেধক নিলেও মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়ানো একেবারেই নিরাপদ নয়।’’

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.