ডেবিট কার্ডের জালিয়াতি রুখতে কী ভাবে সাবধান হবেন?



 ODD বাংলা ডেস্ক: অন্যের ডেবিট কার্ড হুবহু নকল করে টাকা তুলে চম্পট দিয়েছে প্রতারণাকারীরা— এমন খবর আকছার কানে আসে এখন। আর নেট ব্যাঙ্কিংয়ে তো কথাই নেই। বাড়ি বসে যাবতীয় লেনদেন সেরে ফেলার সুযোগ যেমন সেখানে আছে, তেমনই হ্যাকারদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব খোওয়ার ভয়ও রয়েছে।


টাকা তুলতে ব্যাঙ্কে লাইন দেওয়ার কথা আমরা প্রায় ভুলেই গিয়েছি। অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি এটিএম কার্ডে। ঠিক তেমনই পকেটে টাকার গোছা নিয়ে ঘোরার জায়গা নিয়েছে ক্রেডিট কার্ড। বাজার করা থেকে ছেলের মেয়ের স্কুলের বেতন দেওয়া— সব ক্ষেত্রেই এখন ভরসা কার্ড। তাই কার্ড ব্যবহারের কিছু প্রাথমিক বিষয়ে সতর্ক আপনাকে থাকতেই হবে। তাতে কিন্তু অনেক বিপদই এড়ানো সম্ভব।


কার্ডে জালিয়াতি বিভিন্ন ভাবে করা সম্ভব। যেমন—


১) অনেক সময়ে এটিএমে যেখানে কার্ড ঢোকানো হয়, সেখানে ‘ডুপ্লিকেট কার্ড রিডার’ লাগিয়ে রাখে প্রতারকরা। এই ভবেই আপনার পিন নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা।


২) পিওএস মেশিনে কার্ড ঘষে (সোয়াইপ করে) জিনিসপত্র কেনাকাটার সময়েও একই ভাবে তথ্য হাতানোর চেষ্টা করা হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন।


৩) ডুপ্লিকেট কার্ড রিডারের মতোই নকল পিন প্যাড ব্যবহার করেও জালিয়াতি করা হয়। যেখানে পিন নম্বর বা টাকার অঙ্ক লেখার বোতাম থাকে, নকল পিন প্যাড লাগানো থাকে তার উপরেই। এটিএমের মেশিনে ছোট ক্যামেরা লাগিয়েও আপনার পিন নম্বর দেখে ফেলা সম্ভব।


৩) নেটমাধ্যমে ব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে আসলের মতো দেখতে ব্যাঙ্কের নকল ওয়েবসাইট তৈরি করেও গ্রাহকদের আইডি, পাসওয়ার্ড হাতানোর ঘটনা ঘটে।


৪) অনেক সময়ে ই-মেল বা মেসেজ পাঠিয়েও জানার চেষ্টা করা হয় ব্যাঙ্কের তথ্য। অনেকে ফোন করে ব্যাঙ্কেরই নাম করে।


এ ক্ষেত্রে কার্ড ব্যবহারের সময়ে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে?


কার্ডের ক্ষেত্রে


১) ‘অ্যালার্ট’ বা টাকা লেনদেনের যাবতীয় তথ্য পেতে অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মোবাইল নম্বর ও ই-মেল যুক্ত করুন।


২) খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চেনা এটিএম থেকেই টাকা তুলুন। খুব বেশি ভিড় বেশি থাকলেও অন্য এটিএমের খোঁজ করা ভাল।


৩) খেয়াল রাখুন, মেশিনে যেখানে পিন নম্বর দিচ্ছেন (পিন-প্যাড), তার উপরের দিকে কোনও ছোট ক্যামেরা লাগানো আছে কি না। মেশিনে কার্ড ঢোকানোর জায়গায় ডুপ্লিকেট কার্ড রিডার লাগানো নেই তো? বাড়তি কিছু লাগানো থাকার সন্দেহ হলে, তা নেড়েচেড়ে দেখুন।


৪) একটিই এটিএম মেশিন থাকলে, টাকা তোলার সময়ে সেখানে দ্বিতীয় কেউ ঢুকতে চাইলে বাধা দিন। একাধিক এটিএম থাকলে এবং আপনি থাকাকালীন অন্য কেউ তা ব্যবহার করলে, একটু বাড়তি সতর্ক থাকুন। পিন নম্বর টাইপ করার সময়ে অন্য হাত দিয়ে তা ঢেকে রাখুন।


৫) মাঝেমধ্যেই পিন নম্বর বদলানো ভীষণ দরকার। অন্য কেউ জেনে থাকতে পারে বলে মনে হলে, তা সঙ্গে সঙ্গে করা জরুরি।


৬) যেখানে সেখানে ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ড ব্যবহার করবেন না। বিশেষত অচেনা, অনির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে।


৭) মেশিনে কাজ শেষে কার্ড বেরোতেই চলে যাবেন না। ফের সেখানে পর্দায় ‘ওয়েলকাম’ ভেসে উঠতে দিন। দেখে নিন, কার্ড ঢোকানোর জায়গায় আলো ফের ব্লিঙ্ক করছে কি না। বেরোনোর আগে ‘ক্যান্সেল’ বোতাম টিপে আসতে ভুলবেন না যেন।


৮) নেট ব্যঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সুরক্ষা-চিহ্ন যুক্ত ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমে টাকা পাঠান। সেগুলি ‘https://’ দিয়ে শুরু কি না দেখে নেবেন। ‘http://’ থাকলে সেখান থেকে টাকা না পাঠানোই উচিত। এ ক্ষেত্রে ‘s’-এর মানে সিকিওরড অর্থাৎ সুরক্ষিত।


৯) যে কোনও অ্যাপ ব্যবহারের আগে অবশ্যই যাচাই করে নিন। নিয়মিত কম্পিউটার ও স্মার্ট ফোন অ্যান্টিভাইরাস বা অ্যান্টিম্যালওয়্যার দিয়ে পরিষ্কার করুন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.