কষ্টকর হলেও ভয়ের কিছু নেই

 


ODD বাংলা ডেস্ক: স্কুল থেকে ফিরেই মেয়ের মুখ শুকনো, গা গরম। সঙ্গে না খাওয়ার বায়না। এমন মরসুমি অসুখবিসুখ তো শিশুদের হামেশাই লেগে থাকে। সুমনাও তাই মিঠির জ্বর নিয়ে বিশেষ উদ্বিগ্ন হননি। চিন্তা বাড়ল যখন জ্বরের সঙ্গে মিঠির মুখে, হাতে, পায়ে ফোস্কা বেরোল, আর যন্ত্রণায় সাড়ে তিন বছরের মেয়েটা ছটফট করতে লাগল। বন্ধ হল খাওয়াদাওয়াও। ডাক্তার পরীক্ষা করে জানালেন, মিঠি হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজ়িজ়-এ আক্রান্ত।


এটি এক ধরনের ভাইরাল অসুখ। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, শিশুদের যে কোনও সময়েই এই অসুখ হতে পারে, তবে সাধারণত দুই থেকে আট বছরের শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। এই রোগ আটকানোর কোনও উপায় নেই। ভ্যাকসিনও নেই। অসুখটি ছোঁয়াচে ধরনের। স্কুলে যদি শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ শুরু হয়, তবে আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে আসা অন্য শিশুদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।


এই অসুখে সাধারণত মুখ, পায়ের পাতা, হাঁটুর উপরে, হাতের তালুতে ফোস্কার মতো র‌্যাশ বেরোয়। ফেটে গেলে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে। তার সঙ্গে থাকে জ্বর, দুর্বলতা। এক বার অসুখ শুরু হলে তা পুরোপুরি সারতে সাত থেকে দশ দিন সময় লাগে। ডা. বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ফোস্কার মতো র‌্যাশ বেরোনোর কারণে শিশুদের মুখে, গলায় বেশ ব্যথা থাকে। ফলে খেতে সমস্যা দেখা দেয়।


এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই। অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এ ক্ষেত্রে তেমন কাজ করে না। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া হয় এবং মুখের ব্যথা সারাতে মাউথওয়াশ, লোকাল অ্যানাস্থেটিক জেলি লাগানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।


হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজ়িজ়ে আক্রান্ত শিশুদের খাবার গিলতে সমস্যা হয় বলে ডা. বন্দ্যোপাধ্যায় ‘সেমি সলিড’ খাবার, যেমন— পায়েস বা জেলি কাস্টার্ড জাতীয় খাবার দেওয়ার কথা জানালেন। কারণ, পুরোপুরি তরল বা কঠিন— কোনও খাবারই এ সময়ে শিশুরা খেতে পারে না। এই অসুখে দুর্বলতা থাকে বেশ কিছু দিন। তাই শিশুকে মাল্টিভিটামিন ওষুধও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো যেতে পারে। অন্তত সপ্তাহ দুয়েক পর থেকে স্কুলে যাওয়া শুরু করাই ভাল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.