সপ্তম মহাবিদ্যা দেবী ধূমাবতী সিদ্ধিদাত্রী, কিন্তু তাঁর আবির্ভাব কোনও অমঙ্গলের পূর্বাভাস দেয়


ODD বাংলা ডেস্ক: হিন্দু  পুরাণ অনুসারে দশ মহাবিদ্যার এক মহাবিদ্যা হল ধূমাবতী। কথিত আছে তিনি সিদ্ধিদাত্রী, কিন্তু তাঁর আবির্ভাব কোনও অমঙ্গলের পূর্বাভাস দেয়।দেবীমূর্তি বললেই আমাদের চোখের সামনে সচরাচর যা ভেসে ওঠে, তার থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে বসবাস ধূমাবতীর। এই তান্ত্রিক দেবী কুরূপা। ধূমাবতী হলেন সপ্তম মহাবিদ্যা।

তিনি সাদা শাড়ি পরিহিতা এক বিধবা রমণী। তাঁর পুজোও খুবই অপ্রচলিত। ধূম্র বা ধোঁয়া থেকেই তাঁর নামের উৎপত্তি। বাহনবিহীন রথ বা কাকের উপর আসীন এই দেবীর অধিষ্ঠান সাধারণত শ্মশানে। কখনও তাঁর আগমন হয় অশ্বহীন একটি রথে, কখনও আবার কাকের পিঠেে চড়েও আসতে দেখা যায়।

অনেক ক্ষেত্রে ধূমাবতীর তুলনা করা হয় বৈদিক দেবী নিঋতি, জ্যেষ্ঠা এবং অলক্ষ্মীর সঙ্গে। এঁরা প্রত্যেকেই মৃত্যু, দারিদ্র, ক্ষুধা এবং অভাবের দেবী।  এই দেবীরা প্রত্যেকে কুদর্শনা। ধূমাবতীর হাতে দেখা কুলো বা ঝাঁটা। ছিন্ন মলিন পোশাক, এক মাথা সাদা চুল নিয়ে দেবী ধূমাবতী যেন ধ্বংস ও সৃষ্টির মাঝে অন্ধকারের প্রতীক। কখনও কখনও তাঁর মূর্তির হাতে দেখা যায় ত্রিশূল। গলায় থাকে নরমুণ্ডমালা।

পৌরাণিক মতে, মহাপ্রলয়ের সময়ে আবির্ভূত ধূমাবতী পুরুষশূন্য করেছেন এই পৃথিবীকে। কিন্তু তিনি নিজে শক্তির প্রতিভূ। তবে ভক্তদের একনিষ্ঠ প্রার্থনা নাকি পূর্ণ করেন দেবী ধূমাবতী। তিনি সিদ্ধি এবং মোক্ষ দান করেন ভক্তদের। পৌরাণিক মত, তিনি জীবনের যে যে অন্ধকার দিকের প্রতীক সেই বিষয় থেকেই অনুগামীদের রক্ষা করেন দেবী ধূমাবতী।

ধূমাবতীর মন্দির প্রায় দেখাই যায় না। বারাণসীতে একটি মন্দিরে পূজিত হন দেবী ধূমাবতী। এছাড়া ঝাড়খণ্ডের রাজরাপ্পা এবং অসমের কামাখ্যা মন্দিরের কাছে দেবী ধূমাবতীর একটি করে মন্দির আছে।মধ্যপ্রদেশের দাতিয়া অঞ্চলেও দেবী ধূমাবতীর মন্দির আছে। তবে সবথেকে পরিচিত বারাণসীর মন্দিরটিই। মূলত তন্ত্রসাধকরা ভিড় করেন সেই দেবালয়ে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.