আলুর গায়ে এমন অঙ্কুর গজিয়েছে? এই আলু খাওয়া কি ঠিক, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা


ODD বাংলা ডেস্ক: বাঙালির আলুর প্রতি প্রেম অনির্বচনীয়। রোজকার খাদ্য তালিকায় আলু থাকে না এমন লোক এই রাজ্যে খুব কমই দেখা যায়। সহজলভ্যতা, সব খাবারে প্রায় দেওয়া যায়, আর প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায় এই নানা কারণে সর্বত্রই আলুর চাহিদা ব্যাপক।

আমরা অনেকেই প্রায় সারা সপ্তাহ বা অনেকদিনের আলু একেবারে তুলে রেখে দিই। কিন্তু খেয়াল করবেন অনেক সময়ই বাড়িতে অনেক দিনের আলু জমিয়ে রাখলে সেই আলুর গায়ে অঙ্কুর গজাতে শুরু করে। অনেকে যাকে চলতি ভাষায় বলেন আলুর কল গজানো। কিন্তু এই অঙ্কুর বা কল গজানো আলু কি আদৌ খাওয়া উচিত? কী বলছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?

প্রায়শই আমরা আমদের রোজকার খাবারে এমন অনেক খাবার জ্ঞাত বা অজ্ঞাত অবস্থায় খেয়ে থাকি যা আমাদের শরীরের জন্যে একেবারেই ঠিক না। বহু খাবারে অনেক সময় লুকিয়ে থাকে নানা রোগ ব্যাধির কারণ। কোন খাবারের মধ্যে তৈরী হয় এমন উপাদান যা মানব শরীরের পক্ষে একেবারে বিষাক্ত। মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরী হয়। কিন্তু আমরা আমাদের না জানার কারণেই না বুঝেই দিব্বি এসব খাবার রোজ হয়ত খেয়ে যাচ্ছি।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলেন, আলু গাছ চেষ্টা করে, যাতে কোনও আলুর গায়ে বসে কোন পোকা বা আলুর ভেতরে গজিয়ে ওঠা কোনো জীবাণু আলুর ক্ষতি করতে না পারে। তাই আলু গাছ নিজেই নিজের রক্ষার্থে এক ধরনের বিষ যার নাম সোলানাইন সেটা প্রস্তুত করে। আমরা সাধারণত যেমন আলু খাই তখনও পর্যন্ত এই সোলানাইন তৈরি হতে শুরু করে না। তাই শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। কিন্তু যখনই আলুর গায়ে অঙ্কুর বা কল গজাতে শুরু করে, সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হতে থাকে এই সোলানাইন নামক বিষ। এমনকি সময়ের আগে তুলে ফেললে যদি আলুর গায়ে সবুজ ছোপ ছোপ থাকে তাহলেও বুঝতে হবে যে সেই আলুর ভেতর মজুত আছে বিষ।

সোলানাইন এমন একটি বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা রান্না এবং ভাজার পরও দূর হয় না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, আলুর সবুজ অংশ বা গজানো অঙ্কুর কেটে বাদ দিয়ে আলু খাওয়াও সবসময় নিরাপদ নয়। বরং এই ধরনের আলু ব্যবহার না করাই ভাল। কারণ সোলানাইন শুধু মাত্র গজানো কল বা সবুজওয়ালা অংশে তৈরি হয় না, পুরো আলুতেই তৈরি হয়। তাই বাদ দিয়ে আলু খেলেও শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।

সোলানাইন সামান্য পরিমাণে শরীরে গেলে খুব একটা সমস্যা হয় না। কিন্তু যদি দিনের পর দিন এটা চলতে থাকে আন্ত্রিকের আশঙ্কা দেখা দেয়, পেটের গন্ডগোল লেগে থাকে এমনকি মাথা যন্ত্রণা হয়। বেশী পরিমাণে সেই সোলানাইন শরীরে গেলে স্নায়ুর ক্ষতি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই যাতে সোলানাইন বিষ তৈরী না হয় এর জন্যই আলু অন্ধকার এবং ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষিত করা হয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.