ভারতের এইসব মন্দিরে পুরুষদের প্রবেশের অধিকার নেই!


ODD বাংলা ডেস্ক: আমাদের দেশে এমন বেশ কয়েকটি মন্দির আছে, যেখানে পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই! এমন ৫টি মন্দির এদেশেই রয়েছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, ভারতের কোন কোন মন্দিরে কোনও পুরুষ প্রবেশ করতে পারেন না এবং এর নেপথ্যে রয়েছে কোন কারণ-

কামাখ্যা, গৌহাটি

ভারতের অন্যতম একটি তন্ত্র সাধনার পীঠ হল কামরূপ কামাখ্যা। এটি ৫১ শক্তিপিঠের একটিও বটে। কথিত আছে, দেবী সতীর অকালমৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে যখন মহাদেব ত্রিলোক জুড়ে তান্ডব নৃত্য শুরু করেন, তখন ভগবান বিষ্ণু তিন লোক রক্ষা করার ভার নেন, এবং দেবী সতীর দেহ সুদর্শন চক্রের সাহায্যে টুকরো করে দেন। দেহ ৫১টি টুকরে ভাগ হয়ে মর্ত্যের নানা জায়গায় পড়ে এবং সেখানেই একটি করে শক্তি পিঠের সৃষ্টি হয়। কামরূপ কামাখ্যায় দেবী সতীর যোনি পড়ে এবং সেখান থেকেই উদ্ভব হয় এই শক্তি পিঠের। অম্বুবাচীর সময়ে এই মন্দিরে কোনও পুরুষ ভক্ত তো দূরের কথা, কোনও পুরুষ পুজারীও প্রবেশ করার অনুমতি পান না। বলা হয়, বছরের এই সময়ে দেবী ঋতুমতী হন এবং সেজন্যই তাঁর পুজো হয় না। কেবলমাত্র মহিলা পূজারী মন্দিরে প্রবেশ করে দেবীর সেবা করেন। যদিও মন্দিরের বাইরে এই সময়ে মেলা বসে এবং তাতে নারীপুরুষ সকলের প্রবেশ অবাধ।

চোককুলথুকাবু মন্দির, কেরল

কেরলে অধিষ্ঠিত এই মন্দির দেবী ভগবতীর আরাধনার জন্য বিখ্যাত। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই মন্দিরে পুরুষদের প্রবেশাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসের প্রথম শুক্রবার নারী পূজা অনুষ্ঠিত হয় এই মন্দিরে। এই পুজোয় একটি অদ্ভুত নিয়ম পালন করা হয়। মন্দিরের সমস্ত পুরুষ পূজারী সেই সব মহিলা ভক্তদের পা ধুইয়ে দেন, যারা দশ দিন ধরে উপোস করে থাকেন। এই আচারটিকে ধনু বলা হয়। এই সময়ে মন্দিরে কোনও পুরুষ ভক্ত প্রবেশ করেন না এবং নারীদের দেবী হিসেবে পুজো করা হয়।

ব্রহ্মা মন্দির, পুষ্কর

রাজস্থানের পুষ্করে অবস্থিত এই মন্দিরটি ভগবান ব্রহ্মার একটি অন্যতম মন্দির হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে এই মন্দিরে বিবাহিত পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ। কথিত আছে, ভগবান ব্রহ্মা পুষ্কর হ্রদে একটি যজ্ঞ করবেন বলে মনস্থির করেন। এই যজ্ঞটি তাঁর স্ত্রী দেবী সরস্বতীর সঙ্গে সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু তাঁর স্ত্রীয়ের দেরি দেখে তিনি দেবী গায়ত্রীকে বিবাহ করে যজ্ঞ সম্পন্ন করেন। যখন দেবী সরস্বতী এসে পৌঁছন এবং দেখেন যে তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, সেই মুহূর্তে প্রচন্ড রেগে তিনি সমগ্র বিবাহিত মর্ত্যবাসী পুরুষদের অভিশাপ দেন, যদি তাঁরা এই মন্দিরে প্রবেশ করেন, তবে তাঁদের সাংসারিক জীবনে নেমে আসবে চরম দুর্ভোগ।

সন্তোষী মায়ের মন্দির, যোধপুর 

এই মন্দিরে শুক্রবার পুরুষদরে প্রবেশ নিষেধ। বাকী দিনগুলোতেও পুরুষরা মন্দিরের দরজা দিয়েই দেবীর দর্শন করতে পারেন। এই মন্দিরে পুরুষদের পুজো করার অনুমতি কখনও ছিল না।

ভগবতী দেবী মন্দির, কন্যাকুমারী 

এটি মা ভগবতী দেবীর মন্দির। কথিত আছে যে ভগবান শিবকে স্বামী রূপে পাওয়ার জন্য মা ভগবতী একবার তপস্যার জন্য এখানে এসেছিলেন। ভগবতী মা-কে সন্নাস দেবীও বলা হয় তাই একমাত্র সন্নাস পুরুষরাই মন্দিরের প্রবেশ দ্বার থেকে দেবীর দর্শন করতে পারেন। তবে বিবাহিত পুরুষদের এই মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। কেবলমাত্র মহিলারাই এই পুজো করতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.