কলকাতা থেকে দিল্লি যেতে ৯০০০ টাকা! বিমানের ভাড়া আকাশছোঁয়া কেন

 


ODD বাংলা ডেস্ক: যাঁরা নিয়মিত বিমানযাত্রা করে থাকেন, তাঁরা খেয়াল করবেন গত কয়েক দিনে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে টিকিটের দাম। একটি বড় শহর থেকে আর একটি শহরে যাওয়ার টিকিটের দামেও প্রায় আগুন। ছোট শহরে যেতে হলে তো কথাই নেই। অতিরিক্ত দাম দিয়ে কাটা টিকিটের বিমানও বার বার বাতিল হচ্ছে।


কিন্তু হঠাৎ বিমানের টিকিটের এত দাম কেন বেড়েছে?


গত দু’বছর ধরে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল অতিমারি। এখন সে সঙ্কট অনেকটাই সয়ে গিয়েছে। ফলে আলোচনার কেন্দ্রে যে সব বিষয় বেশি আসছে, তার একটি হল বিমানের ভাড়া।


মাঝে যেমন অনেকেই কাজ ছাড়া কোথাও প্রায় যাচ্ছিলেন না। ফলে বিমানের টিকিট নিয়েও কম ভাবতে হচ্ছিল। এখন আবার শখের ভ্রমণের চল ফিরে এসেছে। চিকিৎসার জন্য এ দিক-ও দিক যাওয়াও বেড়েছে। অনেকেই প্রায় বছর দুই পর বিমানে চেপে সপরিবার বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আর তখনই চোখে পড়ছে যে, বিমানের ভাড়া প্রায় আকাশছোঁয়া!


শুধু দেশের ভিতরেই নয়, বিদেশ যাওয়ার বিমানের ভাড়াও অনেকটা বেড়েছে। কোনও কোনও দেশে যাওয়ার ভাড়া ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যেমন এক ট্র্যাভেল এজেন্ট জানাচ্ছেন, সিঙ্গাপুর হয়ে যে কোনও দেশে যেতে প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে যেতে হলে তা হচ্ছে ৩০ শতাংশেরও বেশি।


যাতায়াত যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে বিমানের টিকিটের দাম।


কয়েকটি কারণ রয়েছে বিমানের টিকিটের দাম এত বাড়ার পিছনে—


১) তেলের দাম বেড়েছে। অনেকরেই মনে হয়েছিল ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব এ দেশে পড়বে না। কিন্তু তা ঠিক নয়। তেলের দাম বাড়ায় নানা জিনিসের দাম চড়ছে। বিমানের টিকিটের দাম তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।


২) অতিমারির সময়ে সব সংস্থায় যেমন অনেকের কাজ গিয়েছে, তেমনই গিয়েছে বিভিন্ন বিমান সংস্থায়। এখন প্রয়োজন বেড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় কর্মীসংখ্যা বাড়েনি। সেটিও টিকিটের দাম বাড়ার একটি কারণ।


৩) মাঝে যেহেতু বহু দিন দফায় দফায় বন্ধ রাখতে হয়েছে দেশের ভিতরের এবং আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা, সে কারণে বহু বড় বিমান আর ব্যবহার করা হচ্ছিল না। প্রয়োজন মতো ছোট ছোট বিমান চালানো হচ্ছিল। ফলে কম যাত্রী নিয়ে এক-একটি বিমান চালাতে হচ্ছে। পরিষেবার টাকা তুলতে হচ্ছে কম সংখ্যক যাত্রীর থেকে। তাতে আরও বাড়ছে টিকিটের দাম।


৪) গত দু’বছরে এতই কমেছে বিভিন্ন বিমান সংস্থার ব্যবসা যে, এখনও চাহিদা মতো বিমান চালানো শুরু করতে পারেনি অধিকাংশেই। ফলে আপাতত চাহিদার তুলনায় বিমানের সংখ্যা বেশ কম।


কত দিন এমন চলবে?


অনেকের বক্তব্য, যাত্রীরা যত এই দামে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন, ততই দাম কমার সম্ভাবনা কম। কিন্তু তা ঠিক নয় বলে দাবি করছে সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থা। অতিমারির পর কিছু ক্ষেত্রে খরচ যে বেড়েছে, তা নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। তাদের বক্তব্য, চার দিক আবার আগের মতো যাতায়াত স্বাভাবিক হয়ে গেলে কমতে থাকবে বিমানের ভাড়া।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.