বাহারি চায়ের স্বর্গীয় স্বাদ যেখানে!

 


ODD বাংলা ডেস্ক: বড় বড় দালানকোঠা, কোনোটা বহুতল ভবন, কোনোটো আবার দোতলা বাড়ি। রাস্তায় নেই কুকুরের আওয়াজ, নেই রিকশার ক্রিংক্রিং, নেই গাড়ির হর্ণ। হাঁটছিলাম গুলশান লেকের পাড় ধরে। পিচ ঢালা রাস্তা আর সবুজ ভেজা পাতাই বলে দিচ্ছে, কিচ্ছুক্ষণ আগেই বৃষ্টি বেড়াতে এসেছিল এখানটায়। তবে বেশিক্ষণের জন্য না। তাই রাস্তাও আধাশুকনো, আধাভেজা। তিনবন্ধু মিলে হেঁটে চলেছি। হাঁটার মাঝে কখনো লেকের দু'হাত ছাড়িয়ে নির্মল বৃষ্টিভেজা বাতাস উপভোগ করছি, কখনো আবার আলিশান বাড়িগুলোর সামনে থাকা চোখ জুড়ানো বাগানবিলাস ফুল গাছের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছি।


হালদা ভ্যালির দোরগোড়ায়


গুগল ম্যাপ অন করে দেখলাম, 'হালদা ভ্যালি টি লাউঞ্জ' এর কাছেই দাঁড়ানো আমরা। দশ কদম হাঁটলেই পাওয়া যাবে। একদমই নতুন নাম, তবে নামটা বাংলা বলে মনে হলো একটা গ্রামীণ ভাব হয়তো পাওয়া যাবে এখানে। 


লিফটের দুইয়ে প্রেস করে চলে এলাম হালদা ভ্যালির দোরগোড়ায়। বাইরে থেকে কাঁচের গেট দিয়ে ভিতরটা একনজর দেখে মনে হলো, যা অনুমান করেছি তা বোধহয় ভুল হতে চলেছে। বড় একটা কাঁচের দরজা। ভেতরে পা রাখামাত্রই টের পেলাম, অনুমান একদম ভুল ছিল। এখানে কোনো গ্রামীণ ভাব নেই। তবে ঢোকার সাথে সাথেই একটা মৃদু স্নিগ্ধ পরশ আমাকে ছুঁয়ে দিলো।  


কোথাও খেতে গেলে সবার আগে আমরা জায়গা দখল করি। আর এখানে মানুষই নেই তেমন। আমার বন্ধুরা গিয়ে বসলো। কিন্তু আমি ব্যাগটা সোফায় রেখেই, পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখতে লাগলাম। গাছগুলো ছাড়া সবকিছুই মানুষের তৈরি। কৃত্তিমতা থাকলেও, কৃত্তিমতার স্বাদ দিচ্ছে না একদমই। কেমন একটা প্রশান্তি প্রশান্তি ভাব। পুরো লাউঞ্জ জুড়ে একটা রিল্যাক্সিং উইন্ড চাইম সাউন্ড বেজে চলছিল।


ফুটন্ত জলে দারচিনি আর তেজপাতার ঝাঁজ নাকে এসে লাগছিল 


গেটে ঢুকেই সোজা চোখে পড়ে ইংরেজি হরফে লেখা হালদা ভ্যালি টি লাউঞ্জের নাম। তার সামনে মাঝ বরাবর একটা টেবিল, বলা যায় রান্নাঘর। ওপেন কিচেনরুম বলি যাকে আমরা। কাঁচের এক একটা বয়ামে পা পাতা গুলো সারিসারি করে সাজানো। দারচিনি, এলাচি, লবঙ্গের মতো মশলাগুলোও ছোট্ট ছোট্ট কাঁচের বয়ামে টেবিলের সামনে রাখা। কেটলিতে গরম জল বসানো, আর তার পাশের কেটলিতে লাল চা ফোটানো হচ্ছে। লাল চায়ে মেশানো দারুচিনি আর তেজপাতার ঝাঁজ গেট দিয়ে ঢোকার সময়েই নাকে এসে লেগেছিল। আরেকটা ট্রেতে মাটির ছোট্ট ছোট্ট কাপ, পিরিচ, গ্লাস। প্রথম দেখে ভেবেছিলাম, এতেই হয়তো চা পরিবেশন করা হয়। পরে জানলাম, এগুলো শো পিস।   


যেন চারদিকে সবুজে ঘেরা কোনো কটেজে বসে আছি 


বাম দিকটায় সোফা-টেবিল সাজানো। বামপাশে গ্লাসের দেয়াল জুড়ে আছে গাছ-গাছালি। একটু সামনে এগিয়ে ডানে আছে একটি ছোট্ট বুককর্ণার। বিষয়ভিত্তিক বইয়ের তাকও ভাগ করা। আমি বেছে নিলাম রুমির একটি কবিতার বই। বইটা হাতে নিয়ে চলে গেলাম সামনের লম্বা জানালার দিকে। সে জানালা দিয়ে দেখা যায়না কোনো দূরের দৃশ্য, শুধু সবুজ গাছগাছালি দেখা যায়। 


বইটা হাতে নিয়ে বসলাম বন্ধুদের পাশে। তারাও তাদের পছন্দের একটি করা বই নিয়ে বসেছে। এরমধ্যে একজন এসে মেন্যু দিয়ে গেলো। খুলে দেখি, এত চায়ের মেলা! কতরকমের চা আছে এখানে। দুধ চা, ফলের চা, ফুলেও চা-ও আছে। এতরকম চা দেখে তিন বন্ধুই দিশেহারা!  


৬৫ রকমের চা! 


কী কী চা পাওয়া যায় তা দেখার জন্যই মেন্যুটা আবার হাতে নিলাম। ঢাকাই মালাই চা থেকে শুরু করে আইসড টি, অ্যারাবিয়ান টি, বিভিন্ন ফিউশন টি আছে। ফিউশন টি গুলোতে মিলছে বিভিন্ন ফুলের চা। লিলি চা, গোলাপ চা, বেলী ফুলের চা ইত্যাদি। চায়ের সঙ্গে ফুলের পাপড়ি মেশালেই যে এর কার্যকারিতা বহুগুণ বেড়ে যায় তা জানতাম আগেই। 


আছে বিভিন্ন ফলের চা। আম, তেঁতুল, লিচু,কমলা, মাল্টা আবার পুদিনা পাতা, জিরা চাও আছে।  


তবে প্রতিটি চায়ের মূল্যই অনেক বেশি। এখানে সবচেয়ে কম দামী চায়ের নাম 'হালদা ভ্যালি টি' যার দাম ১৫৫ টাকা। আর সবচেয়ে বেশি দামী যে দুটো , তাদের নাম হলো, 'ডিলাইটেড লিলি টি' এবং 'দ্য কুইন অব ফল টি'। এই দুটো চায়ের দামই ৩২৫ টাকা।  


খুব জানতে ইচ্ছে করছিল এখানকার চায়ের বিশেষত্ব নিয়ে। চা বানাচ্ছেন মোশারফ (ছদ্মনাম), তার কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম এখানকার চায়ের বৈশিষ্ট্য কী। 


তিনি জানালেন, 'আমাদের গ্রিন টি আছে, যা হালদা ভ্যালি ড্রাগন অয়েল গ্রিন টি নামে পরিচিত। এই চা চীনের পাঁচ হাজার বছরের ঐতিহ্য ধারণ করে, আমরা প্রথম এই চা বাংলাদেশে প্রচলন করছি। ড্রাগন অয়েল টি, সিল্ভার নিডল হোয়াইট টি, গোল্ডেন আইব্রো টি, রেড গ্লোব টি, হালদা ভ্যালি ব্ল্যাক টি- এই পাঁচ রকম চা দিয়েই আমরা ৬৫ রকম চা এক্সপেরিমেন্ট করেছি। যেমন পারসিয়ান টি গুড়ো ফর্মের ব্ল্যাক চা দিয়ে করেছি, সোলেমানি জিঞ্জার টি গ্রিন টি দিয়ে করেছি। ইজিপ্সিয়ান টি তে রেখেছি জবা ফুলের নির্যাস আর হোয়াইট টি।'  


তিনি আরও জানান, 'আমাদের চায়ের আরেকটি বিশেষত্ব হলো একই পাতায় পুনরায় গরম জল যোগ করে খাওয়া যাবে। আট ঘণ্টার মধ্যে তিনবার খাওয়া যাবে এই চা।'    


চায়ের স্বাদ লিখে বোঝানো যাবেনা, খেলেই উপলব্ধি করা যাবে 


বাইরে ঝুম বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। তাকিয়ে তাকিয়ে গ্লাসের ওপর গড়িয়ে পড়া বৃষ্টির জল দেখছিলাম। গ্লাসগুলো ঘোলা হয়ে উঠেছে। ততক্ষণে, চা-ও চলে এলো। আমি নিয়েছিলাম একটি পারসিয়ান টি। বাইরে বৃষ্টি আর ভিতরে হাতে গরম চায়ের কাপ নিয়ে বসে আছি। চায়ে চুমুক দেওয়ামাত্রই যেন এক আলাদা স্বাদ পেলাম। সে স্বাদ লিখে বোঝানো যাবেনা, কেবল খেলেই উপলব্ধি করা যাবে। 


সাথে ছিল ছোটো ছোটো ক্যান্ডেল কাপে ড্রাগন ওয়েল টি, সিল্ভার নিডল হোয়াইট টি, রেড রোব ওলং টি, হালদা ভ্যালি ব্ল্যাক টি। গরম জলে পাতাগুলো দেখে মনে হচ্ছিল এইমাত্র গাছ থেকে তুলে আনা হয়েছে। শুধু গরম জল আর চা পাতা। সিল্ভার নিডল চায়ে রয়েছে একদম মৃদু স্বাদ। খুবই হাল্কা এবং সতেজভাব ফিরিয়ে আনে শরীরে। ওলং টিতে চার দিনের পাঁচদিনের পাতাকে তুলে এনে সামান্য মেশিনাইজ করে প্যাকেট করা হয়। কিছুটা ধোঁয়াটে স্বাদ (স্মোকি ফ্লেভার)।  


সাথে একধরনের সবুজ কুকিজও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা তো কুকিজ অর্ডার করিনি। তখন একজন পরিচারক এসে জানালেন, এই কুকিজগুলো দুধ চায়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়। গ্রিন টি ও ব্ল্যাক টি দিয়ে তৈরি এই দুধরনের কুকিজ হালদা ভ্যালির দুটো সিগনেচার কুকিজ । দাম বেশি হলেও, কাস্টমাররা এটা খুব পছন্দ করে। কাস্টমার হিসেবে আমরাও তাদের এই ধারণার সাথে দ্বিমত পোষণ করিনি। দেখতে অন্যরকম হলেও, খেতে বেশ স্বাদ। 


চা খাবার মাঝ পর্যায়ে এসে একটু একটু করে যেন সতেজ অনুভব বোধ করতে লাগলাম। মনে হচ্ছিল, সারাদিনের অবসাদ আর ক্লান্তি একটু একটু করে মুছে যাচ্ছে ভিতর থেকে। তখনি এগিয়ে এলেন লাউঞ্জের একজন নারী কর্মকর্তা, নাম শিলা (ছদ্মনাম)। তিনি জানালেন, এখানকার চায়ের মাঝে থাকছে মাঝারি পরিমাণের ক্যাফেইন। যা শরীর আর মনের সতেজভাব ধরে রাখে দীর্ঘক্ষণ। কফির মধ্যে থাকা অত্যাধিক ক্যাফেইন দ্রুত সতেজভাব এনে দিলেও,  হুট করে আবার ক্লান্তিভাবও ফিরিয়ে আনে। তাই তাদের দাবি, হালদা ভ্যালির এই চাগুলোতে মাঝারি পরিমাণে ক্যাফেইন থাকায় এক ঘণ্টার মধ্যেও তিনবার খেলেও, অনেকটা সময় ধরে সতেজভাব থাকবে।     


কিছু উচ্চপদস্থ বিদেশি প্রতিনিধিদের বসার জায়গা করার উদ্দেশ্যেই এই টি লাউঞ্জের শুরুটা হয়েছিল ২০১৯ সালে। শুরু করার পর দেখা গেল, চায়ের পাশাপাশি এখানে কিছু নাস্তা বা খাবার আইটেমের চাহিদাও তৈরি হচ্ছে। তখন চায়ের পাশাপাশি কিছু ভারী খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে, স্বভাবতই চায়ের চাহিদাই বেশি। 


লাউঞ্জের ভিতরেই ছোট্ট একটি শপ কর্ণার আছে, যেখানে গুঁড়ো এবং পাতা দুরকম চা-ই বিক্রি হয়। তবে শিলা জানান, কাস্টমারদের আগ্রহ পাতা চা গুলোর প্রতিই। কারণ অন্য কোম্পানির চা পাতা গুঁড়ো করে বিক্রি করা হয়। আর এখানকার চা একদম পাতা অবস্থায় থাকে। ফলে, চায়ের মান নিয়ে কোনো সংশয় থাকেনা। একটি কুঁড়ি এবং একটি পাতা আদর্শ ধরে সব থেকে কচি পাতাটি (৩ সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় নয়) নেওয়া হয়। এরপর পাতার আর্দ্রতা রক্ষা করে পাতাকে প্যান ফ্রাই করা হয়, যাতে চায়ের সুন্দর রং ও স্বাদ দুটোই পানকারীকে বিমোহিত করে। তবে এই লাউঞ্জ ছাড়াও স্বপ্ন সুপার শপসহ বিভিন্ন অনলাইন পেজে হালদা ভ্যালির চা পাওয়া যাবে। 


'আমাদের চা অন্যদের থেকে একদম আলাদা'


হালদা ভ্যালি টি লাউঞ্জ ম্যানেজার মেহেদী মোর্শেদ এ ব্যাপারে বলেন, 'যত কচি পাতা হবে, ততো এতে এন্টিঅক্সিজেনের পরিমাণ বেশি থাকে। আমাদের বেশিরভাগ চা-ই কচি পাতা। একদম কুড়ি অবস্থায় তিন থেকে চারদিনের মাথায় পাতাগুলো তুলে আনি আমরা। যার সঙ্গে অতিরিক্ত কোনো মেশিনারিজ, ক্যামিকেলের ব্যবহার নেই। এজন্য আমাদের চায়ের স্বাদও যেমন আলাদা হয়, উপকারিতাও অনেক বেশি থাকে। আর এজন্যই আমরা দাবি করি, আমাদের প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চা।'  


'আমাদের চা অন্যদের থেকে একদম আলাদা, এটা যে কেউ খেলেই বুঝবে,' বলছিলেন মেহেদী মোর্শেদ। 


চায়ের এত গুণগান শোনার পর ইচ্ছে হলো, গুগল করে আসলেই এর উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে। ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখলাম, এখানকার প্রতিটা চায়ের মধ্যে স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। সিল্ভার নিডল টি নামে যে হোয়াইট টি এখানে পাওয়া যায় তা হাড়ের অস্টিওপরোসিস নামের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, তা বাড়াবে এবং ডায়েবটিকের জন্য এটি অত্যন্ত ভালো একটি চা। রেড রোব টি'তে রয়েছে ফলিক্যালন, ক্যাথোচিনো ভিটামিন। যা রক্তের চর্বি কমিয়ে শরীরের মেটাবলিজম বাড়াবে। সাথে এন্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণও বাড়াবে। 


গ্রিন টি আমাদের মানসিক চাপ কমায়, ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক টি আমাদের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে, সেইসাথে দাঁতের ক্ষয়রোধ বাড়াবে। ওলং টি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। দীর্ঘদিন নিয়মিত ব্যবহারে ত্বককে করে তোলে সতেজ। এছাড়া যাদের একজিমা, এজমা, এলার্জি রয়েছে, তাদের জন্য ওলং টি বিশেষ কার্যকর। যদিও মধ্যবিত্তদের জন্য নিঃসন্দেহে তা অনেক বেশি। কিন্তু চায়ের দাম এবং চায়ের মান দুটোই জানার পর এর দামের যথার্থতা বুঝতে পারলাম। প্রিয়জনের সঙ্গে কিংবা একাকী বসে বই আর চায়ে চুমুক দিতে দিতে তিন চার ঘণ্টা কাটানোর জন্য হালদা ভ্যালি আপনার পছন্দের শীর্ষে থাকতে পারে। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে, দামটা সত্যিই কিছু নয়। 



মেহেদী মোর্শেদ জানান, 'আমরাই প্রথম, যারা আমাদের নিজস্ব চা বাগান নিয়ে একটা ব্র্যান্ডিং করেছি। আমাদের এখানে বেশকিছু বিদেশি চা চাষ করা হচ্ছে। যেমন হোয়াইট টি, ওলঙ্গন টি। যা এর আগে বাংলাদেশের অন্য কোনো চা কোম্পানি নিয়ে আসেনি।' 


হালদা ভ্যালি চা বাগান 


চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির শেষ প্রান্তে নারায়ণহাট ইউনিয়নে হালদা ভ্যালি চা বাগানটি অবস্থিত। গত বছর সব বাগানকে পেছনে ফেলে চা উৎপাদনে 'সেরা পুরস্কার' পেয়েছে বাগানটি। ২০১৭ সালের উৎপাদনের ভিত্তিতে চা বোর্ড এই পুরস্কার দেয়।


চায়ের দেশ চীনে প্রথমবারের মতো গ্রিন টি রপ্তানি করেছিল হালদা ভ্যালি। এরপর কুয়েত এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশেও সম্প্রতি রপ্তানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।  


গুলশান ২ এর একটু আগে আবাসিক এলাকার মধ্যেই রোড নাম্বার ১১৩, ৬/এ অবস্থিত হালদা ভ্যালি টি লাউঞ্জ। তবে গুলশানেই এই আউটলেট এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের একটি লাউঞ্জ কর্ণার ছাড়া এখনো হালদা ভ্যালি টি লাউঞ্জের কোনো শাখা নেই। সৌদি, ইতালী, সিঙ্গাপুর,ইংল্যান্ড, চায়না সহ মোট সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূত এখানে খেতে আসে এবং প্রতিমাসে এখান থেকে চা নিয়ে যায়। বিদেশি কিছু কাস্টমারই মূলত তাদের প্রধান গ্রাহক।


বৃষ্টির জন্য আটকা পড়েছিলাম আড়াই ঘণ্টার মতো। ফলে ভালোই হলো, আরও অনেকটা সময় তিনজন মিলে গল্প করলাম। যতটা ক্লান্তিভাব নিয়ে এসেছিলাম, সে পুরোটা যেন চলে গেল। কয়েকঘন্টার জন্য সত্যিই ভুলে গিয়েছিলাম জীবনের সব কর্মব্যস্ততা আর হতাশা। এখানকার সবার আপ্যায়ন দেখে মনে হচ্ছিল, আমরা তাদের অতিথি। হালদা ভ্যালির রাজকীয় স্বাদের চা এবং ঢোকার সময় থেকে শুরু করে, বেরিয়ে যাওয়া পর্যন্ত পুরোটা সময় পরিচারক-কর্মকর্তাদের একান্ত আতিথেয়তা সত্যিই আপনার ক্লান্তি দূর করে মনকে করে দিবে ফুরফুরে।  

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.