বেশিরভাগ মানুষ বাম হাতে কেন ঘড়ি পড়ে?



 ODD বাংলা ডেস্ক: প্রয়োজনের তাগিদে কমবেশি আমরা সবাই ঘড়ি পরে থাকি। যদিও ঘড়ি পরা ফ্যাশনেরও একটি অনুষঙ্গ। তবে এটি আমাদের সময় সম্পর্কে জানতে সহায়তা করে। যার ফলে আমরা সময় হিসাব করে সব কাজ সম্পন্ন করতে পারি।

ঘড়ি মূলত কোন হাতে পরা হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে বেশিরভাগ মানষই বলবেন, কোন হাতে আবার নিশ্চয়ই বাঁহাতে! কারণ পরিসংখ্যান বলছে এই বিশ্বের মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই বাঁহাতে ঘড়ি পরে থাকে। কিন্তু মজার বিষয় হলো বেশিরভাগই জানেন না কেন এমনটা করে থাকেন তারা।


এক সমীক্ষায় এমন প্রশ্ন করা হলে বেশিরভাগই জাবাব দিয়েছিল, বাকি অনেককে দেখেন, তাই তারাও নাকি কিছু না ভেবেই তাদের অনুসরণ করে বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু করেছেন। আপনিও যদি এদের একজন হন, তাহলে এই প্রবন্ধে চোখ রাখতে ভুলবেন না যেন! কেন এমন কথা বলছি, তাই ভাবছেন নিশ্চয়ই? আসলে এই প্রবন্ধে প্রথম বারের জন্য এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হবে কেন বেশিরভাগ মানুষ বাঁহাতে ঘড়ি পরে থাকেন!


ইতিহাস কী বলছে?


বেশ কিছু স্টাডির পর একদল গবেষকের মনে হয়েছিল শরীরের গঠনকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হয়, তাহলে ছেলেদের নাকি ডান হাতে এবং মেয়েদের বাঁহাতে ঘড়ি পরা উচিত। কিন্তু তবুও এই নিয়মটা কেউ মেনে চলে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইতিহাসের দিকে নজর ফেরাতে হবে। আর এমনটা করলে জানতে পারবেন যখন ছোট ঘড়ির জন্ম হয়েছিল, তখন বেশিরভাগই তা পকেটে রাখতেন।

 

তাই তো পকেট ঘড়ির চল সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কবজিতেও যে ঘড়ি পরা যেতে পারে, সে বিষয়ে কারোই সে সময় কোনো ধারণা ছিল না। তবে বোর যুদ্ধের সময় একদল সৈনিক চামড়ার স্ট্র্যাপে ঘড়ি আটকে কবজিতে পরা শুরু করলো। তাদের মূল লক্ষ ছিল মিলিটারি অপারেশনের প্রতি মিনিটকে নথিবদ্ধ করা। আর এমনটা করতে গেলে বারে বারে পকেট থেকে ঘড়ি বার করা ছিল বেজায় মুশকিল কাজ। তাই তো সে সময় থেকে শুরু হল কবজিতে ঘড়ি পরা। তবে তখনও তা আম জনতার মধ্য়ে সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।


কিন্তু বাঁহাতে কেন?


একথা ঠিক যে হাত ঘড়ির জন্ম লগ্ন থেকেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। কারণ ছিল একটাই। আসলে সে সময়কার হাত ঘড়ি ছিল বেজায় বড় এবং ভঙ্গুর। তাই সহজেই যাতে কোথায় ঠোকা লেগে ঘড়িটা ভেঙে না যায়, তা সুনিশ্চিত করতেই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। কারণ বিভিন্ন কাজ করতে ডান হাত যতটা কাজে লাগে, ততটা কিন্তু বাঁহাত কাজে আসে না। তাই যদি বাঁহাতে ঘড়ি পরা যায়, তাহলে ভাঙার আশঙ্কা কম। তাই সেই শুরু। তারপর থেকে যত সময় এগিয়েছে বাঁহাতের ঘড়ি পরার চল জনপ্রিয়তা পেরেছে।


বিজ্ঞান কী বলছে?


ইতিহাস ঘেঁটে বাঁহাতে ঘড়ি পরার কারণ সম্পর্কে ধরণা করা গেলেও এ সম্পর্কে আরো স্পষ্ট উত্তর পাওয়া সম্ভব বিজ্ঞানের হাত ধরেই। একাধিক গবেষণার পর এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে সিংহভাগ মানুষই ডান হাতে কাজ করতে বেশি স্বচ্ছন্দ।


আর ডান হাতি মানুষদের চোখের গতিবিধি বিচার করলে একথা বুঝতে অসুবিধা হয় না যে বাঁহাতে ঘড়ি পরলে সহজে সময় দেখা সম্ভব হয়।আর যদি ডান হাতে ঘড়ি পরা হয়, তাহলে কাজ করত করতে যদি সময় দেখার প্রয়োজন পরে, তাহলে কাজ থামিয়ে তা করতে হবে, যা বাঁহাতে ঘড়ি পরলে করার প্রয়োজন পরে না। তাই বেশিরভাগই বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু করলো। এক সময়ে ঘড়িকে বাঁচাতে যেখানে বাঁহাতে ঘড়ি পরা শুরু হয়েছিল। সেখানে এক সময়ে এসে তা প্রয়োজনে রূপান্তরিত হল। আর একসময় এই প্রয়োজন কখন যে অভ্যাসের রূপ নিলো, তা অনেকেরই জানা নেই!


স্মার্ট ওয়াচের যুগে?


আজকের দুনিয়ায় সব কিছুই স্মার্ট। ফোন স্মার্ট, এমনকী ঘড়িও। তাই তো আরও বাঁহাতে ঘড়ি পরার প্রয়োজন বেড়েছে। কারণ যেমনটা আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে এ বিশ্বের বেশিরভাগই ডান হাতি। আর বাঁহাতে ঘড়ি পরলে তবেই না ডান হাত দিয়ে সহজে তা অপারেট করা সম্ভব হবে। তাই তো আজকের দিনে বাঁহাতে ঘড়ি পরার প্রয়োজন বেড়েছে আরও বেশি মাত্রায়!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.