প্রকৃতির রোষে মরুভূমিতে পরিণত হলো জলাধার



 ODD বাংলা ডেস্ক: মাত্র ১৩ বছরেই শুকিয়ে গেছে চিলির পেনুয়েলাস জলাশয়। পেনুয়েলাস জলাধারটি ছিল প্রায় ৩৮ হাজার অলিম্পিক সুইমিং পুলের সমান আয়তনের। গত ২০ বছর আগেও ছিল চিলির ভালপরাইসো শহরের প্রধান জলাধার। এখন সেটি প্রায় মরুভূমি। খটখটে শুকনো। এখানে-ওখানে পড়ে থাকা মাছের কঙ্কাল বহন করছে মৃত্যুর অশনিসংকেত। 

১৩ বছরের ঐতিহাসিক খরা, আমূল বদলে দিয়েছে অঞ্চলের জলবায়ু ও বাস্তুতন্ত্র। প্রচণ্ড গরমে শুকিয়ে যাচ্ছে, জলাধারটি। 


যার প্রভাব পড়েছে তামা এবং লিথিয়াম উৎপাদনে। তালা পড়েছে শিল্পে। এমনকি চিলের রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে জল-রেশন করার ঐতিহাসিক নির্দেশিকা জারি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ধুঁকছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পেনুয়েলাসের পানিতে মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করতেন এমন জনগোষ্ঠীরা পড়েছেন বেশি ভোগান্তিতে। 


বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরাও। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল হিসেবে এই ভয়াবহ ঘটনাকে চিহ্নিত করেছেন অনেকেই। তারা বলছেন, বৃষ্টিবাহী ঝড় ক্রমশ মুখ ফিরিয়েছে চিলের উপকূল থেকে। ফলে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বেড়েছে। এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে চিলের আন্দিজ পর্বতমালার বরফ রাতারাতি বদলে যাচ্ছে বাষ্পে। 


গবেষকদের মতে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আরো কমে আসবে পানি। প্রায় ৩০ শতাংশ জলাধার শুকিয়ে আসবে প্রকৃতির অভিশাপে। এই ঘোষণায় আঞ্চলিক কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। পশুপালকরাও দুষছেন ভাগ্যকে। পানির অভাবে তার পালিত পশুগুলোও হাড়-জিরজিরে অবস্থা। এমনভাবে চললে, আর জীবনধারণের রসদটুকুও থাকবে না। 


কেবল পেনুয়েলাস নয়, শুকিয়ে গিয়েছে সান্তিয়াগো শহরের দক্ষিণ দিকে লাগুনা দে আকুলিও। বছর কয়েক আগেও সেখানে ভিড় জমাতেন সাঁতারুরা। কায়াক-উৎসাহীরা ভাসাতেন ভেলা। এখন শুকনো জমির ওপর পড়ে আছে মরচেপড়া নৌকোর খোল। প্রকৃতির বিশ্রী অট্টহাসি ধুলো ওড়াচ্ছে ধূধূ প্রান্তরে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.